দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় আক্রমণ চালিয়ে ১৫ পুলিশ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটার প্রায় ৭ মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনও তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাস ভবনে ফিরতে পারেনি। তবে আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম াথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে তারা ঐ ভবনে ফিরতে পারবেন বলে আশা করছেন বর্তমান অফিসার ইনচার্জ রওশন ইয়াজদানী।
সরেজমিনে জানাগেছে,সিরাজগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমটার দক্ষিণে অবস্থিত যমুনা নদীর কুল ঘেঁষে গড়ে ওঠা এনায়েতপুর থানা। এর পূর্বে চৌহালী,উত্তরে বেলকুচি এবং পশ্চিম ও দক্ষিণে অবস্থিত শাহজাদপুর উপজেলার মধ্যেবর্তী স্থানে অবস্থান হওয়াতে থানাটিরগুগুরুত্ব সবদিক থেকে বেশি হলেও থানাটি বর্তমানেগুগুরুত্বহীন অবস্থান আছে।
গত বছরের ৪আগষ্টের পর থেকে থানাটির সকল কার্ডক্রম বন্ধ থাকলে পরবর্তিতে পার্শের্¦র একটি বেবারকারী এনজিও প্রতিষ্ঠানে ঘর ভাড়ায় সাময়িক ভাবে কাজ পরিচালনা করলেও মানুষের কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছেননা বলে এলাকাবাসির অবিযোগ । আবার সরেজমিন থানার হালহকিকত দেখেও মনে হয় থানা পুরিশ এখনও শতভাগ প্রস্তুত নয় মানুষকে সেবা দিতে।
তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশের কার্যক্রম যেমন পূর্বের মতো গতিতে ফেরা দরকার তেমনি পুলিশকে সহযোগিতা দিতে এলাকাবাসিরও এগিয়ে আসা দরকার। এজন্য সরকারের পাশা পাশি স্থানীয়দের সার্বিক সাহায্য চান বর্তমান অফিসার রওশন ইয়াজদানী।
২০২৪ সালে দশব্যাপী ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে ঠিক তখনি ঝড়ের কবলে পড়ে এনায়েতপুর থানা পুলিশের পুরো টিম। ২০২৪ সালের ৪ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দারিত্বে থাকা পুলিশ সেসময় ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালালে তিন শিক্ষাথী নিহত হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে পুরো এলাকাবাসি এক হয়ে থানায় আক্রমণ করে এবং থানাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। এতে খানার ওসিসহ ১৫ পুলিশকে পিটিয়ে এবং নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।।
দফায়,দফায় ছাত্র-জনতার সাথে বিকাল পর্যন্ত পুলিশের সংঘর্ষ চলার পর যারা জীবিত ছিলেন তারা ওই ভবনের ছাদে থাকা পানির ট্যাংকে লুকিয়ে আতœরক্ষা করেন। পরে সারাদিন শেষে সন্ধ্যার কিছু সময় আগে মাইক যোগে সেনাবহিনী এসে তাদের উদ্ধার করে।
অপর দিকে পুরো থানা ক্যাম্পানের প্রতিটি ভবনে জনতার ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের কারণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় পুরো থানা। রাস্তা,ডোবায় পদে থাকতে দেখাযায় পুরিশের মৃতদেহ আর পাশের যোবায় ভাসতে থাকে পুলিশের পোষাক,হেলমেটসহ বিভিন্ন সামগ্রী। এসময় লুটহয় অস্ত্র,গোলাবারুদ,। সুনশান নিরবতায় পরিণত হয় পুরো থানা এলাকা। এভাবে ১সডÍাহ অতিবাহিত হলে পুরিশের উর্দ্ধতস কর্মকর্তঅদের সমন্ময়ে স্থানীয়দের সাথে সমাবেশ করে পার্শ্বের একটি এনজিও ভবনে থানার কার্যক্রম সাময়িক ভাবে শুরু করে। সেই থেকে আজোও ওই ভবনেই স্বল্প পরিসরে থানার কাজ চলছে।
সম্প্রতি সরকারী ভবে ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ ভবনগুলির সংস্কার,মেরামত ও আসবাবপত্র সংযোজনের জন গত মাসে কাজ শুরু করেছে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যা এখনও চলমান অবস্থায় আছে। কাজ শেষ এবং ভবন সংস্কার হতে আরোকিছুদিন সময় লাগবে তাই ওই ভবনে উঠতে আরো ২থকে ৩ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বরে জানান থানার ওসি।
এছাড়া আন্দোলন চলাকালীন সময়ে থানার ভেতরে থাকা সরকারী-বেসরকারী জব্দ হওয়া গাড়ী ও মোটরসাইকেল গুলো পুড়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। তবে সম্প্রতি সরকারি ভাবে ২টি গাড়ী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে থানা পুলিশের কাজের গতি ফেরাতে। তারপরও কাজের গতি ও পুরিশের মনোবল সবল হতে সময় লাগছে ,সময় আরো লাগবে।
গত ৭ মাসে এই থনায় প্রায় ৩০-৩৫টি মামলা হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য অবিযোগ দাখিল হয়েছে। এছাড়া আদালত কর্তৃক নির্দেশিত মামলাগুলো তামিল করা হয়েছে বলে ওসি দাবি করলেও স্থানীয়দের মতে পুলিশের সেবা পেতে এখনও বেশ বেগপেতে হচ্ছে।
ভাড়া বাসায় থানার কাজ এবং সরকারি গাড়ী বরাদ্দ হলেও স্থানীয়দের মধ্যে এখনও শোক আর ক্ষোভের মনভার বিরাজমন। একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানাগেছে এনায়েতপুর থানা পুলিশের সেটাপ বদল হলেও চরিএ এখনও আগের মতোই আছে। এযেন নতুন বোতলে পুরোনো মদ।
তাদের অনেকের অভিযোগের সুরে বলেন বর্তমান থানার ওসির রুমে বসে অনেকেই টায়ের আড্ডাদেন। আবার কোন প্রকার অভিযোগ দাখিল হলে সেটা কালক্ষেপনের মাধ্যমে বাদীকে দীর্ঘ দিনের বাস্তা দেখান। এই সুযোগে বিবাদীর সাথে একটা গোপন সম্পর্কও তৈরী হচ্ছে।
এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন ইয়াজদানী আমাদের সময় কে বলেন, অনেকে অনেক ধরনের কথা- বলতেই পারে। আমি আসার পর পুরো এলাকাবাসীকে সাথে নিয়েই কাজ করার চেষ্টা করছি। বুল হতে পারে। তবে বর্তমান সরকারের নতুন দিক নির্দেশনার আলোকে থানার কাজ চলছে। আমরা আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
১৫ পুলিশ হত্যা মামলা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন মামলার বাদী পুলিশ,কিন্তু মামলাটি দির্ঘদিন পরিচালিত হবে এটাই সত্য। মামলার আসামী এবং গ্রেফাতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পসঙ্গ এড়িয়ে বলেন বিষয়টি পুলিশের উচ্চ মহলের নজরে আছে। আমি এনিয়ে কিছু চাইনা। এছাড়া থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র,গোলা বারুদ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এখন পর্যন্ত ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে ৫০ জনেরও বেশি জনবল নিয়ে এনায়েতপুর থানা অস্থায়ী ভবনে চলছেও ৬৩ লাখ টাকা ব ব্যয়ে সংস্কার কাজ শেষ হলে প্রাণ ফিরে পাবে থানা। এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।