Dhaka ১০:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাতক্ষীরায় কলেজ ছাত্রী অপহরণ, ১৯ দিন পর মামলা দায়ের করা হয়েছেন

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে একাদশ শ্রেণীর কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের ১৯ দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ আশাশুনি থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। অপহরণের এ মামলায় তিনজনকে আসামী করা হয়েছে।
আসামীরা হলেন, আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি গ্রামের এশরাফুল ইসলামের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (২২), একই গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াদুদ এর ছেলে এশরাফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী পারভিন খাতুন।
অপহরণের শিকার মেয়েটির বাবা জানায়, তার মেয়ে দরগাহপুর কলেজিয়েট স্কুলে মানবিক বিভাগে একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে কাদাকাটি গ্রামের ফরিদুল ইসলাম তার মেয়েকে উত্যক্ত করতো। তাকে কুপ্রস্তাব দিতো। মেয়ে বিষয়টি তাকে জানালে তিনি ফরিদুলের বাবা, মা ও স্বজনদের অবহিত করেন। এতে ফরিদুল, ও তার বাবা-মা ক্ষুব্ধ হয়। একপর্যায়ে গত ৮ মার্চ সকাল ৮টার দিকে বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে থাকার সময় একটি মাইক্রোবাসে করে ফরিদুল ও তার বন্ধুরা মেয়ের মুখে রুমাল গুঁজে অপহরণ করে নিয়ে যায়। মুখে রুমাল চেপে ধরার আগেই মেয়ের চিৎকারে তিনি ও তার ভাইসহ স্বজনরা মাইক্রোবাসটি ধাওয়া করেন, কিন্তু ধরতে পারেননি।
তিনি আরো বলেন, সকল জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে তিনি বাদী হয়ে গত ১২ মার্চ আশাশুনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক অনাথ মিত্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এরপর থেকে এশরাফুল ও তার স্ত্রী পারভিন তাকে (ভিকটিমের বাবা) বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়। মেয়েকে উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশের ভূমিকা ভাল না হওয়ায় তিনি বিষয়টি সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে অবহিত করে গত ১৬ মার্চ থানায় ফের আরেকটি এজাহার দায়ের করেন।
এরপর, তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে উপপরিদর্শক আব্দুর রশিদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ভিকটিমকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এশরাফুল ২৫ মার্চ সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে তদবির শুরু করেন। এমনকি তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার করে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে ভিকটিমকে ধর্মান্তরিত করে ফারহানা নাম দিয়ে ছেলে ফরিদুলের সাথে বিয়ে দিয়েছেন মর্মে এক আইন কর্মকর্তাকে হুমকি দেন পারভিন খাতুন। বিষয়টি বুধবার থানার ওসি নোমান হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল ওয়াদুদকে অবহিত করা হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার তার অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নোমান হোসেন জিনিউজ বিডি 24 প্রতিনিধি জানান. মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। সফল না হওয়ায় মেয়েটির বাবার দায়েরকৃত এজাহারটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বৃহস্পতিবার মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ভিকটিমকে উদ্ধার ও আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

আত্রাইয়ে ইউপি মেম্বারসহ ৬ জন গ্রেপ্তার

সাতক্ষীরায় কলেজ ছাত্রী অপহরণ, ১৯ দিন পর মামলা দায়ের করা হয়েছেন

Update Time : ১১:১৯:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে একাদশ শ্রেণীর কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের ১৯ দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ আশাশুনি থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। অপহরণের এ মামলায় তিনজনকে আসামী করা হয়েছে।
আসামীরা হলেন, আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি গ্রামের এশরাফুল ইসলামের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (২২), একই গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াদুদ এর ছেলে এশরাফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী পারভিন খাতুন।
অপহরণের শিকার মেয়েটির বাবা জানায়, তার মেয়ে দরগাহপুর কলেজিয়েট স্কুলে মানবিক বিভাগে একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে কাদাকাটি গ্রামের ফরিদুল ইসলাম তার মেয়েকে উত্যক্ত করতো। তাকে কুপ্রস্তাব দিতো। মেয়ে বিষয়টি তাকে জানালে তিনি ফরিদুলের বাবা, মা ও স্বজনদের অবহিত করেন। এতে ফরিদুল, ও তার বাবা-মা ক্ষুব্ধ হয়। একপর্যায়ে গত ৮ মার্চ সকাল ৮টার দিকে বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে থাকার সময় একটি মাইক্রোবাসে করে ফরিদুল ও তার বন্ধুরা মেয়ের মুখে রুমাল গুঁজে অপহরণ করে নিয়ে যায়। মুখে রুমাল চেপে ধরার আগেই মেয়ের চিৎকারে তিনি ও তার ভাইসহ স্বজনরা মাইক্রোবাসটি ধাওয়া করেন, কিন্তু ধরতে পারেননি।
তিনি আরো বলেন, সকল জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে তিনি বাদী হয়ে গত ১২ মার্চ আশাশুনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক অনাথ মিত্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এরপর থেকে এশরাফুল ও তার স্ত্রী পারভিন তাকে (ভিকটিমের বাবা) বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়। মেয়েকে উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশের ভূমিকা ভাল না হওয়ায় তিনি বিষয়টি সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে অবহিত করে গত ১৬ মার্চ থানায় ফের আরেকটি এজাহার দায়ের করেন।
এরপর, তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে উপপরিদর্শক আব্দুর রশিদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ভিকটিমকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এশরাফুল ২৫ মার্চ সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে তদবির শুরু করেন। এমনকি তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার করে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে ভিকটিমকে ধর্মান্তরিত করে ফারহানা নাম দিয়ে ছেলে ফরিদুলের সাথে বিয়ে দিয়েছেন মর্মে এক আইন কর্মকর্তাকে হুমকি দেন পারভিন খাতুন। বিষয়টি বুধবার থানার ওসি নোমান হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল ওয়াদুদকে অবহিত করা হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার তার অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নোমান হোসেন জিনিউজ বিডি 24 প্রতিনিধি জানান. মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। সফল না হওয়ায় মেয়েটির বাবার দায়েরকৃত এজাহারটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বৃহস্পতিবার মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ভিকটিমকে উদ্ধার ও আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।