ঈদের আনন্দ আপনজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন কর্মজীবি মানুষ। আর এ কারণেই শুক্রবার সকাল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর অংশে নেমেছে মানুষের ঢল। ফলে যানবাহনের চাপ বাড়লেও মহাসড়কে নেই যানজট। স্বস্তিতে ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। তবে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে রয়েছে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ। সরেজমিনে ঘুরে এলাকাবাসী, যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার থেকে ঈদে লম্বা ছুটি পাওয়া ঈদের আনন্দ আপনজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে ঘরমুখো হচ্ছেন কর্মজীবী মানুষ।
ঢাকা-টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামার পাশাপাশি বেড়েছে যানবাহনের চাপও। গাড়ির সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় এ দুটি মহাসড়কের কালিয়াকৈর অংশের মৌচাক, সফিপুর, পল্লীবিদ্যুৎ, জোড়াপাম্প, চন্দ্রা, খাড়াজোড়া, কালিয়াকৈর বাইপাস, বাড়ইপাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন।
অবৈধ থ্রি-হুইলার, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, ইউটার্ন নেওয়া, যাত্রী উঠানামার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যানবাহনের চাপ ও ঘরমুখো মানুষের ঢল উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বর খ্যাত চন্দ্রা ত্রিমোড়ে। শিল্পকারখানাগুলো ছুটি হলে যাত্রীদের চাপ আরও বাড়বে বলেও জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এ দুটি মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও ট্রাক, পিকআপ, বিভিন্ন সড়কের লোকাল বাস, ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে যাচ্ছেন যাত্রীরা। এসব যানবাহনে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন শিশু, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের
নারী ও পুরুষ। এদিকে যানবাহনের চাপ বাড়লেও এদুটি মহাসড়কের কোথাও নেই কোনো যানজট। আর মহাসড়কে চাপ থাকলেও স্বাভাবিক গতিতেই চলছে যানবাহন। ফলে কোন ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতে ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। তাদের অভিযোগ, মানুষের ঢল নামায় পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করছেন।
আর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কোনো নজর নেই হাইওয়ে, জেলা ও ট্রাফিক পুলিশসহ সড়ক সংশ্লিষ্টদের। অপরদিকে ঈদকে সামনে রেখে সড়ক- মহাসড়কে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় ড্রোন পর্যবেক্ষণ, মোটরসাইকেল পেট্রোলিং, কুইক রেসপন্স টিম ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে পুলিশ কাজ করছে। একই সঙ্গে যানজট নিরসনে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা এক যোগে কাজ করছে। স্বস্তিদায়ক ও নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছেন ভলেন্টিয়াররাও।
এব্যাপারে গাজীপুর হাইওয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার জানান, যানজট নিরসনে মহাসড়কে যে ফুটপাত দখল বাণিজ্য ছিল, রমজানের শুরুতে সেগুলো উচ্ছেদ করেছি। এখন মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও কোন যানজট নেই। আর যানজট যাতে না হয় সেজন্য আমরা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তবে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসা মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।