Dhaka ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যশোরে বেয়াইন হাজতে, চোখ উপড়ানো বেয়াইয়ের মৃত্যু

যশোরে বেয়াইনের হাতে চোখ উপড়ানো গুরুতর আহত বিয়াই সিরাজুল ইসলামকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে। সিরাজুলের ছেলে হাসান তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

অভিযোগ, ২৯ মার্চ দুপুরে শহরতলীর বাহাদুরপুর জেস গার্ডেনের পেছনে হাসি বেগম ও তার সহযোগীরা সিরাজুলকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। এতে তার একটি চোখ গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাসি বেগমের মেয়ের সঙ্গে সিরাজুল ইসলামের ছেলের বিয়ে হয়েছে। অর্থাৎ, অভিযুক্ত হাসির সঙ্গে সিরাজুলের সম্পর্ক বেয়াইন-বেয়াই।

গুরুতর অবস্থায় সিরাজুল ইসলাম কুটিকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হাসি বেগম পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার দুপুরে সিরাজুল তার বেয়াইন হাসির বাড়িতে গিয়েছিলেন। এরপর হঠাৎ মারামারি ও কান্নাকাটির শব্দ পান। পরে তারা দুই তলায় উঠে দেখেন, একে অন্যকে লোহার পাইপ দিয়ে মারপিট করছেন। এর মাঝে সিরাজুলের এক চোখ ক্ষতবিক্ষত দেখতে পান তারা। হাসির শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখমের দাগ দেখা যায়।পরে স্থানীয়রা তাদের নিবৃত করেন এবং সিরাজুলকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে হাসি বেগম স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

সিরাজুলের স্বজনেরা দাবি করেন, পূর্বশত্রুতার জেরে হাসি, তার মেয়ে মনিকা ও ভগ্নিপতি শাবল দিয়ে সিরাজুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। এছাড়া তার চোখেও গুরুতর আঘাত করা হয়।

হাসি বেগম অভিযোগ করেন, সিরাজুল দীর্ঘদিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। সে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার তার ওপর হামলা চালান সিরাজুল। তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টাকালে সিরাজুলের চোখে আঘাত লাগে।

তবে স্থানীয় একটি সূত্র বলছে বেয়াই- বেয়াইনের মধুর সম্পর্ক ছিল এবং একসাথেই বেড়াতেন। এমনকি সিরাজুল ইসলাম প্রায়ই বেয়াইন বাড়িতে রাত্রি যাপন করতেন। ফলে ধর্ষনের চেষ্টার বিষয়টি বেশ রহস্যজনক।

কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে পুলিশ দেখতে পায়, সিরাজুলের চোখ রক্তাক্ত জখম হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর হাসিকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার পর ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিরাজুল মারা যান বলে জানান ওসি।

এদিকে, এই ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে: রোববার (৩০ মার্চ) প্রেসক্লাব যশোরে পরিবারটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানান নিহত সিরাজুলের ছেলে হাসান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

গোপালগঞ্জে কারফিউ চলবে

যশোরে বেয়াইন হাজতে, চোখ উপড়ানো বেয়াইয়ের মৃত্যু

জন দেখেছেন : ০৯:১৭:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫

যশোরে বেয়াইনের হাতে চোখ উপড়ানো গুরুতর আহত বিয়াই সিরাজুল ইসলামকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে। সিরাজুলের ছেলে হাসান তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

অভিযোগ, ২৯ মার্চ দুপুরে শহরতলীর বাহাদুরপুর জেস গার্ডেনের পেছনে হাসি বেগম ও তার সহযোগীরা সিরাজুলকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। এতে তার একটি চোখ গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাসি বেগমের মেয়ের সঙ্গে সিরাজুল ইসলামের ছেলের বিয়ে হয়েছে। অর্থাৎ, অভিযুক্ত হাসির সঙ্গে সিরাজুলের সম্পর্ক বেয়াইন-বেয়াই।

গুরুতর অবস্থায় সিরাজুল ইসলাম কুটিকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হাসি বেগম পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার দুপুরে সিরাজুল তার বেয়াইন হাসির বাড়িতে গিয়েছিলেন। এরপর হঠাৎ মারামারি ও কান্নাকাটির শব্দ পান। পরে তারা দুই তলায় উঠে দেখেন, একে অন্যকে লোহার পাইপ দিয়ে মারপিট করছেন। এর মাঝে সিরাজুলের এক চোখ ক্ষতবিক্ষত দেখতে পান তারা। হাসির শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখমের দাগ দেখা যায়।পরে স্থানীয়রা তাদের নিবৃত করেন এবং সিরাজুলকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে হাসি বেগম স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

সিরাজুলের স্বজনেরা দাবি করেন, পূর্বশত্রুতার জেরে হাসি, তার মেয়ে মনিকা ও ভগ্নিপতি শাবল দিয়ে সিরাজুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। এছাড়া তার চোখেও গুরুতর আঘাত করা হয়।

হাসি বেগম অভিযোগ করেন, সিরাজুল দীর্ঘদিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। সে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার তার ওপর হামলা চালান সিরাজুল। তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টাকালে সিরাজুলের চোখে আঘাত লাগে।

তবে স্থানীয় একটি সূত্র বলছে বেয়াই- বেয়াইনের মধুর সম্পর্ক ছিল এবং একসাথেই বেড়াতেন। এমনকি সিরাজুল ইসলাম প্রায়ই বেয়াইন বাড়িতে রাত্রি যাপন করতেন। ফলে ধর্ষনের চেষ্টার বিষয়টি বেশ রহস্যজনক।

কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে পুলিশ দেখতে পায়, সিরাজুলের চোখ রক্তাক্ত জখম হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর হাসিকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার পর ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিরাজুল মারা যান বলে জানান ওসি।

এদিকে, এই ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে: রোববার (৩০ মার্চ) প্রেসক্লাব যশোরে পরিবারটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানান নিহত সিরাজুলের ছেলে হাসান।