Dhaka ১০:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিলমারির ব্রহ্মপুত্রে অষ্টমীর স্নানে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল

কুড়িগ্রামের চিলমারি ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহা অষ্টমীর পূন্যস্নান সফলভাবে  সম্পন্ন হয়েছে। চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোছনের জন্য প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারিতে এসে পূণ্যস্নান সম্পন্ন করে। এবছর অষ্টমি স্নানের লগ্ন ছিল, ভোর ৪টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এই স্নানকে ঘিরে প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তার বেস্টনিতে লাখো পূর্ণার্থীরা নির্বিঘ্নে এসে স্নানের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
আয়োজকরা জানান, এবার পুণ্য স্নানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের রমনা বন্দর এলাকা থেকে পুটিকাটা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অষ্টমীর স্নান এর কার্যক্রম সম্পন্ন করে ভক্তরা,  সেইসাথে উৎসব ঘিরে মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
স্নান উৎসবে রংপুর বিভাগের ৮ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পূর্নাথীরা একদিন আগেই চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয় ও রাত্রি যাপন করে।
আগত পূণ্যার্থীদের থাকার জন্য প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে উপজেলার প্রায় ২২টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও পূণ্যার্থীদের স্নান পরবর্তী পোশাক পরিবর্তনের জন্য এবং নির্বিঘ্নে রাত্রী যাপনের জন্য প্রায় অর্ধশত অস্থায়ী বুথ করা হয়েছিল। পূণ্যার্থীদের পূজাপর্বের জন্য প্রায় দুই শতাধিক ব্রাহ্মণ পূজারি দায়িত্ব পালন করে বলে আয়োজক কমিটির সূত্রে জানা গেছে।
অষ্টমী স্নান নিরাপদে করতে পুলিশের পাশাপাশি কুড়িগ্রাম আর্মি ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন সাফায়েতের নেতৃত্বে ভোর ৪ টা থেকেই সেনাবাহিনী নিরাপত্তার কাজে দায়িত্ব পালন করেছে। পুলিশের বিভিন্ন পদের ১৮১ জন সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছে।
চিলমারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুশাহেদ খান জানান, অষ্টমীর স্নান সফল করতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, ডিবি, ডিএসবি,আনসার, এনএস আইসহ গ্রাম পুলিশের টহল জোরদার ছিল। এবারে এখানে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, স্নানের শেষ পর্যন্ত যাতে করে কোথাও কোন প্রকার অপীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোঃ মাহ্ফুজুর রহমান বলেন, পুন্য স্নান নির্বিঘ্ন  করতে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, সনাতন ধর্মালম্বিদের পুন্যস্নান যাতে নিরাপদ ও উৎসব মুখর হয় এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে ২ জন মেজিস্ট্রেট সর্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

আত্রাইয়ে ইউপি মেম্বারসহ ৬ জন গ্রেপ্তার

চিলমারির ব্রহ্মপুত্রে অষ্টমীর স্নানে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল

Update Time : ০৬:০৯:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫
কুড়িগ্রামের চিলমারি ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহা অষ্টমীর পূন্যস্নান সফলভাবে  সম্পন্ন হয়েছে। চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোছনের জন্য প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারিতে এসে পূণ্যস্নান সম্পন্ন করে। এবছর অষ্টমি স্নানের লগ্ন ছিল, ভোর ৪টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এই স্নানকে ঘিরে প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তার বেস্টনিতে লাখো পূর্ণার্থীরা নির্বিঘ্নে এসে স্নানের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
আয়োজকরা জানান, এবার পুণ্য স্নানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের রমনা বন্দর এলাকা থেকে পুটিকাটা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অষ্টমীর স্নান এর কার্যক্রম সম্পন্ন করে ভক্তরা,  সেইসাথে উৎসব ঘিরে মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
স্নান উৎসবে রংপুর বিভাগের ৮ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পূর্নাথীরা একদিন আগেই চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয় ও রাত্রি যাপন করে।
আগত পূণ্যার্থীদের থাকার জন্য প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে উপজেলার প্রায় ২২টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও পূণ্যার্থীদের স্নান পরবর্তী পোশাক পরিবর্তনের জন্য এবং নির্বিঘ্নে রাত্রী যাপনের জন্য প্রায় অর্ধশত অস্থায়ী বুথ করা হয়েছিল। পূণ্যার্থীদের পূজাপর্বের জন্য প্রায় দুই শতাধিক ব্রাহ্মণ পূজারি দায়িত্ব পালন করে বলে আয়োজক কমিটির সূত্রে জানা গেছে।
অষ্টমী স্নান নিরাপদে করতে পুলিশের পাশাপাশি কুড়িগ্রাম আর্মি ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন সাফায়েতের নেতৃত্বে ভোর ৪ টা থেকেই সেনাবাহিনী নিরাপত্তার কাজে দায়িত্ব পালন করেছে। পুলিশের বিভিন্ন পদের ১৮১ জন সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছে।
চিলমারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুশাহেদ খান জানান, অষ্টমীর স্নান সফল করতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, ডিবি, ডিএসবি,আনসার, এনএস আইসহ গ্রাম পুলিশের টহল জোরদার ছিল। এবারে এখানে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, স্নানের শেষ পর্যন্ত যাতে করে কোথাও কোন প্রকার অপীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোঃ মাহ্ফুজুর রহমান বলেন, পুন্য স্নান নির্বিঘ্ন  করতে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, সনাতন ধর্মালম্বিদের পুন্যস্নান যাতে নিরাপদ ও উৎসব মুখর হয় এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে ২ জন মেজিস্ট্রেট সর্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে।