Dhaka ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জয়পুরহাটে সাত জন নৈশপ্রহরিকে মারপিটর পর বেঁধে রেখে চারটি দোকানে দূর্ধর্ষ ডাকাতি

জয়পুরহাটে একটি গ্রামীণ বাজারের নৈশপোহরিদের বেঁধে চারটি দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে। ২০-২৫ জনের কালো মুখোশপরা একদল ডাকাত  চারটি  দোকানের তালা কেটে  আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে  মিনি ট্রাকে তুলে নিয়ে পালিয়েছে।

শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত আক্কেলপুর উপজেলার মোহনপুর বাজারে এই দুৃর্ধর্ষ এ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে আক্কেলপুর  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় মোহনপুর বাজারের ডাকাতি হওয়া চার দোকান পরির্দশনে যান।

মোহনপুর বাজারের দোকানীরা জানান, এই বাজারে আট জন নৈশপ্রহরি রয়েছেন। এরমধ্য  শুক্রবার রাতে একজন নৈশপ্রহরি ডিউটিতে আসেননি। শুক্রবার রাতে সাত জন নৈশপ্রহরি ডিউটি করছিলেন। রাত  তিনটার দিকে নৈশপ্রহরি রফিকুল ইসলাম প্রথমে কালো মুখোশপরা চার জন ব্যক্তিকে  বাজারের সড়কে ঘোরাঘুরি করা  দেখতে পেয়ে বাঁশি বাজান। মুখোশপরা ওই চার ব্যক্তি এসে নৈশপ্রহরি রফিকুলের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে  তাঁর মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। ডাকাতেরা তাঁর হাত-পা বেঁধে একটি দোকানের পাশে ফেলে রাখেন। এরপর ২০-২৫ জনের ডাকাত দল বাজারে অন্য ছয় জন নৈশ প্রহরিকে ধরে এনে মারধরের পর তাঁদের হাত-পা বেঁধে একই জায়গায় ফেলে রাখেন। ৪-৫ জন ডাকাত দল নৈশ প্রহরিদের ঘিরে পাহারায় রাখেন।

অন্য ডাকাতেরা বাজারের সড়কের ওপর একটি মিনি ট্রাক এনে রাখেন। ডাকাত দলের সদস্যরা বাজারের  দুটি কীটনাশকের, একটি মুদিখানা ও একটি ইলেকট্রনিক্স দোকানের তালা কেটে মালামাল লুট করে মিনি ট্রাকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যান। ডাকাতেরা পালিয়ে যাওয়ার আগে নৈশপ্রহরি কানা রফিকুলের হাতের বাঁধন খুলে দেন। এরপর কানা রফিকুল অন্য একজন নৈশপ্রহরিদের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন। নৈশ প্রহরিরা একে-একে সবাই মুক্ত হয়ে বাজারের আশপাশের বাসিন্দাদের ডেকে আনেন। ডাকাতেরা চারটি দোকানের আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগে রাতের বেলায় পুলিশ বাজারে আসত। এখন আর রাতের বেলায় পুলিশ বাজারে আসে না।

নৈশপ্রহরি রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০-২৫ জনের সশস্ত্র  ডাকাত দলের সদস্যরা সবাই কালো মুখোশপরা ছিলেন। ডাকাতেরা আমাদের সাত জন নৈশপ্রহরিকে মারপিটের পর হাত-পা বেঁধে দোকানের পাশে ফেলে রাখেন। ৪-৫ জন ডাকাত আমাদের পাহারা দিচ্ছিলেন। হলুদ রঙের মিনি ট্রাকে পালিয়ে যাওয়ার আগে ডাকাতেরা নৈশপ্রহরি কানা রফিকুলের হাতের বাঁধন খুলে দেন। এপর আমরা সবাই মুক্ত হয়ে আশপাশের লোকজনদের ঘটনাটি জানিয়েছি।

কীটনাশকের দোকান স্বাদ ট্রেডাসের মালিক ছানাউল ইসলাম বলেন, নৈশপ্রহরিদের বেঁধে রেখে বাজারের চারটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুধু আমার দোকানের ৬-৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে। চারটি দোকান মিলিয়ে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ পিন্টু বলেন, মোহনপুর বাজারের চারটি দোকানে ডাকাতি হয়েছে। আমরা ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পর ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

উলিপুরে গভীর রাতে রড ছাড়াই আরসিসি রাস্তা ঢালাই জনরোষে ঠিকাদার ও লেবাররা পালিয়ে যায়

জয়পুরহাটে সাত জন নৈশপ্রহরিকে মারপিটর পর বেঁধে রেখে চারটি দোকানে দূর্ধর্ষ ডাকাতি

জন দেখেছেন : ০৯:১০:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

জয়পুরহাটে একটি গ্রামীণ বাজারের নৈশপোহরিদের বেঁধে চারটি দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে। ২০-২৫ জনের কালো মুখোশপরা একদল ডাকাত  চারটি  দোকানের তালা কেটে  আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে  মিনি ট্রাকে তুলে নিয়ে পালিয়েছে।

শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত আক্কেলপুর উপজেলার মোহনপুর বাজারে এই দুৃর্ধর্ষ এ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে আক্কেলপুর  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় মোহনপুর বাজারের ডাকাতি হওয়া চার দোকান পরির্দশনে যান।

মোহনপুর বাজারের দোকানীরা জানান, এই বাজারে আট জন নৈশপ্রহরি রয়েছেন। এরমধ্য  শুক্রবার রাতে একজন নৈশপ্রহরি ডিউটিতে আসেননি। শুক্রবার রাতে সাত জন নৈশপ্রহরি ডিউটি করছিলেন। রাত  তিনটার দিকে নৈশপ্রহরি রফিকুল ইসলাম প্রথমে কালো মুখোশপরা চার জন ব্যক্তিকে  বাজারের সড়কে ঘোরাঘুরি করা  দেখতে পেয়ে বাঁশি বাজান। মুখোশপরা ওই চার ব্যক্তি এসে নৈশপ্রহরি রফিকুলের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে  তাঁর মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। ডাকাতেরা তাঁর হাত-পা বেঁধে একটি দোকানের পাশে ফেলে রাখেন। এরপর ২০-২৫ জনের ডাকাত দল বাজারে অন্য ছয় জন নৈশ প্রহরিকে ধরে এনে মারধরের পর তাঁদের হাত-পা বেঁধে একই জায়গায় ফেলে রাখেন। ৪-৫ জন ডাকাত দল নৈশ প্রহরিদের ঘিরে পাহারায় রাখেন।

অন্য ডাকাতেরা বাজারের সড়কের ওপর একটি মিনি ট্রাক এনে রাখেন। ডাকাত দলের সদস্যরা বাজারের  দুটি কীটনাশকের, একটি মুদিখানা ও একটি ইলেকট্রনিক্স দোকানের তালা কেটে মালামাল লুট করে মিনি ট্রাকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যান। ডাকাতেরা পালিয়ে যাওয়ার আগে নৈশপ্রহরি কানা রফিকুলের হাতের বাঁধন খুলে দেন। এরপর কানা রফিকুল অন্য একজন নৈশপ্রহরিদের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন। নৈশ প্রহরিরা একে-একে সবাই মুক্ত হয়ে বাজারের আশপাশের বাসিন্দাদের ডেকে আনেন। ডাকাতেরা চারটি দোকানের আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগে রাতের বেলায় পুলিশ বাজারে আসত। এখন আর রাতের বেলায় পুলিশ বাজারে আসে না।

নৈশপ্রহরি রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০-২৫ জনের সশস্ত্র  ডাকাত দলের সদস্যরা সবাই কালো মুখোশপরা ছিলেন। ডাকাতেরা আমাদের সাত জন নৈশপ্রহরিকে মারপিটের পর হাত-পা বেঁধে দোকানের পাশে ফেলে রাখেন। ৪-৫ জন ডাকাত আমাদের পাহারা দিচ্ছিলেন। হলুদ রঙের মিনি ট্রাকে পালিয়ে যাওয়ার আগে ডাকাতেরা নৈশপ্রহরি কানা রফিকুলের হাতের বাঁধন খুলে দেন। এপর আমরা সবাই মুক্ত হয়ে আশপাশের লোকজনদের ঘটনাটি জানিয়েছি।

কীটনাশকের দোকান স্বাদ ট্রেডাসের মালিক ছানাউল ইসলাম বলেন, নৈশপ্রহরিদের বেঁধে রেখে বাজারের চারটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুধু আমার দোকানের ৬-৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে। চারটি দোকান মিলিয়ে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ পিন্টু বলেন, মোহনপুর বাজারের চারটি দোকানে ডাকাতি হয়েছে। আমরা ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পর ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।