Dhaka ০৮:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নওগাঁর মান্দায় আওয়ামীলীগ নেতাকে গ্রেফতারে বিএনপির বাঁধা!

নওগাঁর মান্দার কুসুম্বা ইউনিয়নের চক কুসুম্বা গ্রামে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ইমাজ উদ্দিন নামে এক ব্যাক্তির বাড়িতে ঈদ পরবর্তী একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চক কুসুম্বা গ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীর একাংশের মানুষ।  উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় মান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও ফ্যাসিস্ট  আওয়ামীলীগ সরকারের দোসর আনিসুর রহমানকে। সামাজিক অনুষ্ঠানটি চলাকালীন দুপুরে মান্দা থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে,  উক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রামের অন্য একটি অংশের সাথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। মান্দা থানা পুলিশ দুপুর আড়াইটার দিকে আগাম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের করতে গেলে বিএনপি নেতা ও ধান ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান তার নেতাকর্মী নিয়ে  পুলিশকে  বাধা দেয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চলে আসলেও চক কুসুম্বা গ্রামের বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে  নামধারী বিএনপি নেতা ও ধান ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান প্রায় ৩০-৪০ টি ভ্যান ভাড়া করে ১৫০-১৬০ জন পুরুষ মহিলা নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে মান্দা থানায় আসেন। এরপর তারা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এর নিকট কৈফিয়ত চায়, কেন পুলিশ তাদের সামাজিক অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুরকে গ্রেফতার করতে গেলো? তখন নামধারী বিএনপি নেতা আবদুল হান্নান থানার মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি করে উচ্চবাচ্য করতে থাকে এবং নিজেকে বিএনপির ত্যাগী নেতা দাবী করে আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুর রহমানের পক্ষে সাফাই গাইতে থাকে। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পরবর্তীতে তার আয়ত্ত্বে না থাকা কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডাইরী করে থানা থেকে দলবল নিয়ে বের হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান,আবদুল হান্নান চক কুসুম্বা গ্রামের সাবের আলী  মাষ্টারের ছেলে। এর আগে আওয়ামী সরকারের সময় বিশেষ সুধিধার জন্য তারা স্ব পরিবারে কৃষকলীগের সাথে সম্পৃক্ততা ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে গত ৫ আগষ্টের পর বিএনপির একটি পক্ষ তাদের পূনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে এসব বিতর্কিত কাজ করায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অপরদিকে, মান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ধান ব্যাবসায়ী আনিছুর রহমান চককুসুম্বা গ্রামের মৃত বয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি,বিষ্ফোরক ও ডেভিল হান্টসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এরপরেও তাকে পূনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।  অভিযানের সময় বিএনপির নামধারী নেতা হান্নান ও তার বড়ভাই নৌবাহিনীর সদস্য আবদুল মান্নানের সহযোগীতায় প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায় সে। বিষয়টি নিয়ে অত্র এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে নামধারী বিএনপি নেতা আবদুল হান্নানের মোবাইলে কল করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান বলেন,আবদুল হান্নান নামে একজন নামধারী বিএনপি নেতা আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুর রহমানকে কেন গ্রেফতার করা হবে তা জানতে এসেছিলেন।  পরে একটি সাধারণ ডাইরী করে চলে গেছেন। অপরদিকে আ’লীগ নেতা আনিছুরকে আটক না করার জন্য উপজেলা বিএনপির অনেক নেতাকর্মী তদবির করেন। যা অপ্রত্যাশিত। এটি খুবই দু:খজনক। মূলতঃ তার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাকে পূনর্বাসনের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।আর এরজন্যই তার প্রতি এতো দরদ।ও স্বজনপ্রীতি।

মান্দা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শফিকুল ইসলাম চৌধুরী (বাবুল) বলেন, গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলোনের মাধ্যমে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। অথচ,এখন পর্যন্ত অত্র উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী দোসররা রয়ে গেছেন। দলীয় হাইকমান্ড উপেক্ষা করে একটি মহল তাদের পূনর্বাসনের চেষ্টা করছে। যা খুবই দু:খজনক।

বিএনপিতে কোন চাঁদাবাজ,দখলবাজ,ভূমিদস্যু,চোর-বাটপারদের ঠাঁই নেই বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়, এমন কোন কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধ সাংগঠনিক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। এক্ষেত্রে কাউকে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

সলঙ্গায় কাজের গৃহ পরিচারিকা কে ধর্ষণের অভিযোগে পিতা পুত্র আটক

নওগাঁর মান্দায় আওয়ামীলীগ নেতাকে গ্রেফতারে বিএনপির বাঁধা!

Update Time : ০১:৪৬:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

নওগাঁর মান্দার কুসুম্বা ইউনিয়নের চক কুসুম্বা গ্রামে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ইমাজ উদ্দিন নামে এক ব্যাক্তির বাড়িতে ঈদ পরবর্তী একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চক কুসুম্বা গ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীর একাংশের মানুষ।  উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় মান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও ফ্যাসিস্ট  আওয়ামীলীগ সরকারের দোসর আনিসুর রহমানকে। সামাজিক অনুষ্ঠানটি চলাকালীন দুপুরে মান্দা থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে,  উক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রামের অন্য একটি অংশের সাথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। মান্দা থানা পুলিশ দুপুর আড়াইটার দিকে আগাম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের করতে গেলে বিএনপি নেতা ও ধান ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান তার নেতাকর্মী নিয়ে  পুলিশকে  বাধা দেয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চলে আসলেও চক কুসুম্বা গ্রামের বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে  নামধারী বিএনপি নেতা ও ধান ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান প্রায় ৩০-৪০ টি ভ্যান ভাড়া করে ১৫০-১৬০ জন পুরুষ মহিলা নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে মান্দা থানায় আসেন। এরপর তারা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এর নিকট কৈফিয়ত চায়, কেন পুলিশ তাদের সামাজিক অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুরকে গ্রেফতার করতে গেলো? তখন নামধারী বিএনপি নেতা আবদুল হান্নান থানার মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি করে উচ্চবাচ্য করতে থাকে এবং নিজেকে বিএনপির ত্যাগী নেতা দাবী করে আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুর রহমানের পক্ষে সাফাই গাইতে থাকে। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পরবর্তীতে তার আয়ত্ত্বে না থাকা কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডাইরী করে থানা থেকে দলবল নিয়ে বের হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান,আবদুল হান্নান চক কুসুম্বা গ্রামের সাবের আলী  মাষ্টারের ছেলে। এর আগে আওয়ামী সরকারের সময় বিশেষ সুধিধার জন্য তারা স্ব পরিবারে কৃষকলীগের সাথে সম্পৃক্ততা ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে গত ৫ আগষ্টের পর বিএনপির একটি পক্ষ তাদের পূনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে এসব বিতর্কিত কাজ করায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অপরদিকে, মান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ধান ব্যাবসায়ী আনিছুর রহমান চককুসুম্বা গ্রামের মৃত বয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি,বিষ্ফোরক ও ডেভিল হান্টসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এরপরেও তাকে পূনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।  অভিযানের সময় বিএনপির নামধারী নেতা হান্নান ও তার বড়ভাই নৌবাহিনীর সদস্য আবদুল মান্নানের সহযোগীতায় প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায় সে। বিষয়টি নিয়ে অত্র এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে নামধারী বিএনপি নেতা আবদুল হান্নানের মোবাইলে কল করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান বলেন,আবদুল হান্নান নামে একজন নামধারী বিএনপি নেতা আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুর রহমানকে কেন গ্রেফতার করা হবে তা জানতে এসেছিলেন।  পরে একটি সাধারণ ডাইরী করে চলে গেছেন। অপরদিকে আ’লীগ নেতা আনিছুরকে আটক না করার জন্য উপজেলা বিএনপির অনেক নেতাকর্মী তদবির করেন। যা অপ্রত্যাশিত। এটি খুবই দু:খজনক। মূলতঃ তার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাকে পূনর্বাসনের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।আর এরজন্যই তার প্রতি এতো দরদ।ও স্বজনপ্রীতি।

মান্দা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শফিকুল ইসলাম চৌধুরী (বাবুল) বলেন, গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলোনের মাধ্যমে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। অথচ,এখন পর্যন্ত অত্র উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী দোসররা রয়ে গেছেন। দলীয় হাইকমান্ড উপেক্ষা করে একটি মহল তাদের পূনর্বাসনের চেষ্টা করছে। যা খুবই দু:খজনক।

বিএনপিতে কোন চাঁদাবাজ,দখলবাজ,ভূমিদস্যু,চোর-বাটপারদের ঠাঁই নেই বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়, এমন কোন কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধ সাংগঠনিক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। এক্ষেত্রে কাউকে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।