Dhaka ১২:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উন্নয়ন বঞ্চিত সৈয়দপুর ভোগান্তির স্বিকার ৪ লাখ মানুষ

নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও নাগরিক সুবিধা নেই বললেই চলে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা,চিত্ত বিনোদনের জন্য পার্ক, শতভাগ পানি সরবরাহসহ উন্নত রাস্তাঘাট নেই। প্রতিশ্রুতি ও ভিত্তি দেয়ার প্রায় দুই যুগ হলেও নির্মাণ হয়নি পৌরসভার নিজস্ব ভবন। অথচ প্রতি বছর বাজেট অধিবেশনে পৌর ভবন নির্মাণে কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। ঢাকা, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় যোগাযোগের একটি মাত্র রাস্তা হওয়ায় শহরের মাঝ দিয়ে এখনো দূরপাল্লার ভারী যানবাহন, কার-পিকআপ ও মাইক্রোবাস চলাচল করছে। এর ফলে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে শহরবাসী। স্হানীয় পৌর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে যানবাহন চলাচল করায় প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু প্রশস্ত সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। নেই মাইক্রোবাস ও স্থায়ী ট্রাক টার্মিনাল। এর ফলে যেখানে সেখানে ট্রাক, লড়ি, মাইক্রোবাস ও পিকআপ দাঁড়িয়ে থাকছে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা একেবারেই নিম্নমানের। শহর থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য ছোট-বড় ড্রেন থাকলেও সঠিক ভাবে পরিষ্কার হয় না বছরের পর বছর। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থায় আবর্জনা আটকে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পানি হয় শহরের বিভিন্ন এলাকায়। ড্রেনের পানি উপচে নোংরা পানি রাস্তায় ভরে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে শহরের বাঙ্গালীপুর নিজপাড়া,গোলাহাট, মুন্সীপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া ও নিচু কলোনির অবস্থা একেবারেই করুণ। নিম্নমানের ড্রেনেজ ব্যবস্থার ফলে এসব এলাকা সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় দুই-তিন ফুট পানির নিচে।

সৈয়দপুর শহরে প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। গিঞ্জি এ শহরের যেকোনো এলাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে প্রতিকারের জন্য নেই কোনো আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ব্যবস্থা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০৪ সালে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকতার হোসেন বাদল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে সৈয়দপুরবাসীর কোনো সমস্যা থাকবে না। কিন্তু তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়ে ভুলে যান সব প্রতিশ্রুতির কথা। এরপর সৈয়দপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন সরকার মেয়র নির্বাচিত হলে তিনিও ভুলে যান ডিজিটাল শহরে উন্নীত করার কথা। ২০২১ সালে মরহুম আকতার হোসেন বাদলের সহধর্মিণী রাফিকা আক্তার জাহান বেবি দিন বদলের ডিজিটাল সৈয়দপুর গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়ে প্রতিটি বাজেট অধিবেশনে শহর উন্নয়নে শত কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করে সব অর্থই আত্মসাৎ করেছেন। চলতি বছরের ৫ আগষ্টের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর- ই আলম সিদ্দিক পৌর পরিষদ এর দায়িত্ব নিয়ে তিনি ও জনসাধারণের ভোগান্তি দেখছেন না। অথচ নীলফামারী সদরের উন্নয়নে জোয়ার বইছে।

স্হানীয়রা বলেন, জেলার শ্রেষ্ঠ করদাতা রয়েছে সৈয়দপুরে। ব্যবসায়িদের কারনেই সৈয়দপুর দেশের অষ্টম বানিজ্যিক শহর এবং শহর উন্নয়নেও ব্যবসায়িদের ভুমিকা রয়েছে শতভাগ। কিন্তু শহর উন্নয়নে পৌর পরিষদ এর কোন প্রকার ভুমিকা নেই বলে জানান তারা। শহর উন্নয়নে পৌর পরিষদ শত কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করলেও সিকি ভাগ ও উন্নয়ন করা হয় না।

শহর উন্নয়নে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই আলম সিদ্দিক জানান, ৫ আগষ্টের পর তিনি প্রশাসকের দায়িত্ব পেয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ ও নির্দেশনা না আসলে ইচ্ছে থাকা সত্বেও কিছুই করা সম্ভব না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

উলিপুরে গভীর রাতে রড ছাড়াই আরসিসি রাস্তা ঢালাই জনরোষে ঠিকাদার ও লেবাররা পালিয়ে যায়

উন্নয়ন বঞ্চিত সৈয়দপুর ভোগান্তির স্বিকার ৪ লাখ মানুষ

জন দেখেছেন : ০৬:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫

নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও নাগরিক সুবিধা নেই বললেই চলে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা,চিত্ত বিনোদনের জন্য পার্ক, শতভাগ পানি সরবরাহসহ উন্নত রাস্তাঘাট নেই। প্রতিশ্রুতি ও ভিত্তি দেয়ার প্রায় দুই যুগ হলেও নির্মাণ হয়নি পৌরসভার নিজস্ব ভবন। অথচ প্রতি বছর বাজেট অধিবেশনে পৌর ভবন নির্মাণে কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। ঢাকা, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় যোগাযোগের একটি মাত্র রাস্তা হওয়ায় শহরের মাঝ দিয়ে এখনো দূরপাল্লার ভারী যানবাহন, কার-পিকআপ ও মাইক্রোবাস চলাচল করছে। এর ফলে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে শহরবাসী। স্হানীয় পৌর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে যানবাহন চলাচল করায় প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু প্রশস্ত সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। নেই মাইক্রোবাস ও স্থায়ী ট্রাক টার্মিনাল। এর ফলে যেখানে সেখানে ট্রাক, লড়ি, মাইক্রোবাস ও পিকআপ দাঁড়িয়ে থাকছে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা একেবারেই নিম্নমানের। শহর থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য ছোট-বড় ড্রেন থাকলেও সঠিক ভাবে পরিষ্কার হয় না বছরের পর বছর। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থায় আবর্জনা আটকে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পানি হয় শহরের বিভিন্ন এলাকায়। ড্রেনের পানি উপচে নোংরা পানি রাস্তায় ভরে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে শহরের বাঙ্গালীপুর নিজপাড়া,গোলাহাট, মুন্সীপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া ও নিচু কলোনির অবস্থা একেবারেই করুণ। নিম্নমানের ড্রেনেজ ব্যবস্থার ফলে এসব এলাকা সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় দুই-তিন ফুট পানির নিচে।

সৈয়দপুর শহরে প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। গিঞ্জি এ শহরের যেকোনো এলাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে প্রতিকারের জন্য নেই কোনো আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ব্যবস্থা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০৪ সালে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকতার হোসেন বাদল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে সৈয়দপুরবাসীর কোনো সমস্যা থাকবে না। কিন্তু তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়ে ভুলে যান সব প্রতিশ্রুতির কথা। এরপর সৈয়দপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন সরকার মেয়র নির্বাচিত হলে তিনিও ভুলে যান ডিজিটাল শহরে উন্নীত করার কথা। ২০২১ সালে মরহুম আকতার হোসেন বাদলের সহধর্মিণী রাফিকা আক্তার জাহান বেবি দিন বদলের ডিজিটাল সৈয়দপুর গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়ে প্রতিটি বাজেট অধিবেশনে শহর উন্নয়নে শত কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করে সব অর্থই আত্মসাৎ করেছেন। চলতি বছরের ৫ আগষ্টের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর- ই আলম সিদ্দিক পৌর পরিষদ এর দায়িত্ব নিয়ে তিনি ও জনসাধারণের ভোগান্তি দেখছেন না। অথচ নীলফামারী সদরের উন্নয়নে জোয়ার বইছে।

স্হানীয়রা বলেন, জেলার শ্রেষ্ঠ করদাতা রয়েছে সৈয়দপুরে। ব্যবসায়িদের কারনেই সৈয়দপুর দেশের অষ্টম বানিজ্যিক শহর এবং শহর উন্নয়নেও ব্যবসায়িদের ভুমিকা রয়েছে শতভাগ। কিন্তু শহর উন্নয়নে পৌর পরিষদ এর কোন প্রকার ভুমিকা নেই বলে জানান তারা। শহর উন্নয়নে পৌর পরিষদ শত কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করলেও সিকি ভাগ ও উন্নয়ন করা হয় না।

শহর উন্নয়নে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই আলম সিদ্দিক জানান, ৫ আগষ্টের পর তিনি প্রশাসকের দায়িত্ব পেয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ ও নির্দেশনা না আসলে ইচ্ছে থাকা সত্বেও কিছুই করা সম্ভব না।