Dhaka ০৮:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুর হাইমচরের মেঘনার দুর্গম চরে ভ্রাম্যমান মোবাইল হাসপাতাল কার্যক্রম উদ্বোধন

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার দুর্গম মেঘনার মিয়ার চরে চলছে ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের মাধ্যমে চলাঞ্চলবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান। একটি জাহাজে আধুনিক চিকিৎসা সম্বলিত সকল উপকরণ দিয়ে এই হাসপাতালটি বানানো হয়েছে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে সৌদির বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ মোবাইল হাসপাতাল বাংলাদেশ-৫ ।

বুধবার দুপুরে (৯ এপ্রিল ২০২৫) ভ্রাম্যমাণ এই হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।

হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিমপাড় চরে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রকল্পের ভাসমান হাসপাতাল উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. সাইদুর রহমান।

এসময় সচিব বলেন, নদী বেষ্টিত দুর্গমচরাঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া যায় না। এ স্বাস্থ্য সেবা সৃষ্টি করার লক্ষেই বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমান ভাসমান হাসপাতাল কার্যক্রম শুরু হয়। সব মানুষ যাতে চিকিৎসা সেবা পায় পরিকল্পিতভাবে আমাদের কার্যক্রম সেভাবেই চলছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, কিং আব্দুল্লাহ হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোলায়মান আব্দুল আজিজ, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব, পিপিএমসহ সৌদি সরকারের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।

মেঘনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চল হাইমচর সদর মিয়ার বাজার ও নীলকমল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, চরাঞ্চলের মানুষদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে ফ্রেন্ডশিপ নামে সংস্থার মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। এ কার্যক্রম পাঁচ বছর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে চলে যাবে। গত জানুয়ারি মাস থেকে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে। তবে ৯ এপ্রিল থেকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলো।এ উপলক্ষে বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, এই চরে বেশিরভাগ রোগী টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না। এখন শহরে না গিয়ে চিকিৎসকসেবা নিতে পারছেন। দুর্গম চরে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা পেয়ে তারা খুশি।

ফ্রেন্ডশীপ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান এবং এডমিন রেজাউল করিম জানান, হাসপাতালে ৭ জন চিকিৎসকসহ ৩২ জন চিকিৎসক ও নার্সের সমন্বয়ে চিকিৎসাসেবা চলছে।

প্রতিদিন ১৫০-২০০ রোগী এই ভাসমান হাসপাতালে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছে।

চাঁদপুরের হাইমচর, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, ভোলার দৌলতখান ও ভোলা সদর উপজেলার মানুষের আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য এ ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঁচটি ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে।

চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন নূরে আলম বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে সরকার তার নিজস্ব জনবল দিয়ে নিজস্ব তদারকিতে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল পরিচালনা করার জন্যই এখানে স্থাপন করা হয়েছে। আশা করি, এ হাসপাতাল থেকে মানুষ তাদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবে।’’

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন জানান, যতক্ষণ এই দুর্গম অঞ্চলের মানুষ সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা না পায় বা স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে না ওঠে, ততদিন ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ব্রহ্মপুত্র নদে ‌নি‌খোঁজ জে‌লের মর‌দেহ উদ্ধার

চাঁদপুর হাইমচরের মেঘনার দুর্গম চরে ভ্রাম্যমান মোবাইল হাসপাতাল কার্যক্রম উদ্বোধন

Update Time : ০৯:৫০:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার দুর্গম মেঘনার মিয়ার চরে চলছে ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের মাধ্যমে চলাঞ্চলবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান। একটি জাহাজে আধুনিক চিকিৎসা সম্বলিত সকল উপকরণ দিয়ে এই হাসপাতালটি বানানো হয়েছে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে সৌদির বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ মোবাইল হাসপাতাল বাংলাদেশ-৫ ।

বুধবার দুপুরে (৯ এপ্রিল ২০২৫) ভ্রাম্যমাণ এই হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।

হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিমপাড় চরে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রকল্পের ভাসমান হাসপাতাল উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. সাইদুর রহমান।

এসময় সচিব বলেন, নদী বেষ্টিত দুর্গমচরাঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া যায় না। এ স্বাস্থ্য সেবা সৃষ্টি করার লক্ষেই বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমান ভাসমান হাসপাতাল কার্যক্রম শুরু হয়। সব মানুষ যাতে চিকিৎসা সেবা পায় পরিকল্পিতভাবে আমাদের কার্যক্রম সেভাবেই চলছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, কিং আব্দুল্লাহ হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোলায়মান আব্দুল আজিজ, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব, পিপিএমসহ সৌদি সরকারের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।

মেঘনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চল হাইমচর সদর মিয়ার বাজার ও নীলকমল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, চরাঞ্চলের মানুষদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে ফ্রেন্ডশিপ নামে সংস্থার মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। এ কার্যক্রম পাঁচ বছর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে চলে যাবে। গত জানুয়ারি মাস থেকে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে। তবে ৯ এপ্রিল থেকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলো।এ উপলক্ষে বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, এই চরে বেশিরভাগ রোগী টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না। এখন শহরে না গিয়ে চিকিৎসকসেবা নিতে পারছেন। দুর্গম চরে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা পেয়ে তারা খুশি।

ফ্রেন্ডশীপ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান এবং এডমিন রেজাউল করিম জানান, হাসপাতালে ৭ জন চিকিৎসকসহ ৩২ জন চিকিৎসক ও নার্সের সমন্বয়ে চিকিৎসাসেবা চলছে।

প্রতিদিন ১৫০-২০০ রোগী এই ভাসমান হাসপাতালে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছে।

চাঁদপুরের হাইমচর, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, ভোলার দৌলতখান ও ভোলা সদর উপজেলার মানুষের আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য এ ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঁচটি ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে।

চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন নূরে আলম বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে সরকার তার নিজস্ব জনবল দিয়ে নিজস্ব তদারকিতে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল পরিচালনা করার জন্যই এখানে স্থাপন করা হয়েছে। আশা করি, এ হাসপাতাল থেকে মানুষ তাদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবে।’’

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন জানান, যতক্ষণ এই দুর্গম অঞ্চলের মানুষ সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা না পায় বা স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে না ওঠে, ততদিন ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কার্যক্রম চলমান থাকবে।