Dhaka ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রবাসী শ্রমিকদের বেতনের কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা দুই প্রতারক, নিশ্চুপ প্রশাসন

সৌদি আরবে কর্মরত ৬৫ জন শ্রমিকের বেতন বাংলাদেশী টাকার ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার, গাড়ি বাবদ ৭ লাখ ৩৭০০০ হাজার এবং জমানো ৫ লাখ ৩৬০০০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছে পিরোজপুর মঠবাড়িয়ার দুই প্রতারক জহির ও রফিক।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাবুল দাস সৌদি আরবের রিয়াদে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এবং মঠবাড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী বাবুল দাসের ভাতিজা। এবং পরবর্তীতে (১৫ মার্চ) শনিবার সৌদির রিয়াদে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী বাবুল দাস।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী বাবুল দাস ও অধীর দাস দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে শ্রমিকদের ঠিকাদারি করে আসছেন। পিরোজপুর মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের বুখাইতলা বান্ধবপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার শামসুল হক এর ছেলে জহির ও রফিকের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয় বাবুল দাসের। পরে দুই ভাই জহির ও রফিক পার্টনার হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব দিলে একই জেলার বাসিন্দা হওয়ার কারণে তাদের প্রস্তার মেনে নেয় বাবুল দাস।

বক্তব্য সূত্রে আরও জানা যায়, কিছুদিন ভালোভাবে কাজ ও লেনদেন করলেও গত (২০ ফেব্রুয়ারি) ৬৫ জন শ্রমিকের বেতন বাংলাদেশী ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য জহির ও রফিকের হাতে তুলে দেন। এ ছাড়াও তাদের কাছে আগে থেকে জমানো বাবুল দাসের আমানত ৬৫ লাখ টাকা নিয়ে রুমে তালা দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায় দুই প্রতারক।

ভুক্তভোগী বাবুল দাস ও অধীর দাস জানান, ‘‘এমন কোন পরিস্থিতি যেন আর কোন প্রবাসীর না হয়। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আমরা ইতিমধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আশা রাখি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুন্দর একটি সুরাহা করবেন প্রশাসন।’’

মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, ‘‘অভিযোগ অনেকেই করে এটা কোন বিষয় না। এটি সৌদি আরবের ঘটনা, আমাদের কোন বিষয় না। যেহেতু সৌদি আরবের ঘটনা। ওনার যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে সৌদি আরবে অভিযোগ করতে পারে। তবে আমাদের কাছে আসলে পরামর্শ দিতে পারি।’’

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল কাইয়ূম বলেন, ‘‘ভুক্তভোগী বাবুল দাসের সাথে আমার কথা হয়েছে। আমি অভিযোগের একটি কপি পেয়েছি। ওসি সাহেবকে বলেছি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।’’

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, ‘‘সৌদি আরব রাষ্ট্রদূত থেকে একটি অভিযোগের কপি পেয়েছি। বিষয়টি আমি অবগত আছি। যেহেতু ঘটনাটি দেশের বাহিরের সেক্ষেত্রে আমরা কি ধরনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি এসপি সাহেবের সাথে কথা বলে বিষয়টি দেখবো।’’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

উলিপুরে গভীর রাতে রড ছাড়াই আরসিসি রাস্তা ঢালাই জনরোষে ঠিকাদার ও লেবাররা পালিয়ে যায়

প্রবাসী শ্রমিকদের বেতনের কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা দুই প্রতারক, নিশ্চুপ প্রশাসন

জন দেখেছেন : ০৯:৪২:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

সৌদি আরবে কর্মরত ৬৫ জন শ্রমিকের বেতন বাংলাদেশী টাকার ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার, গাড়ি বাবদ ৭ লাখ ৩৭০০০ হাজার এবং জমানো ৫ লাখ ৩৬০০০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছে পিরোজপুর মঠবাড়িয়ার দুই প্রতারক জহির ও রফিক।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাবুল দাস সৌদি আরবের রিয়াদে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এবং মঠবাড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী বাবুল দাসের ভাতিজা। এবং পরবর্তীতে (১৫ মার্চ) শনিবার সৌদির রিয়াদে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী বাবুল দাস।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী বাবুল দাস ও অধীর দাস দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে শ্রমিকদের ঠিকাদারি করে আসছেন। পিরোজপুর মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের বুখাইতলা বান্ধবপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার শামসুল হক এর ছেলে জহির ও রফিকের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয় বাবুল দাসের। পরে দুই ভাই জহির ও রফিক পার্টনার হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব দিলে একই জেলার বাসিন্দা হওয়ার কারণে তাদের প্রস্তার মেনে নেয় বাবুল দাস।

বক্তব্য সূত্রে আরও জানা যায়, কিছুদিন ভালোভাবে কাজ ও লেনদেন করলেও গত (২০ ফেব্রুয়ারি) ৬৫ জন শ্রমিকের বেতন বাংলাদেশী ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য জহির ও রফিকের হাতে তুলে দেন। এ ছাড়াও তাদের কাছে আগে থেকে জমানো বাবুল দাসের আমানত ৬৫ লাখ টাকা নিয়ে রুমে তালা দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায় দুই প্রতারক।

ভুক্তভোগী বাবুল দাস ও অধীর দাস জানান, ‘‘এমন কোন পরিস্থিতি যেন আর কোন প্রবাসীর না হয়। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আমরা ইতিমধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আশা রাখি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুন্দর একটি সুরাহা করবেন প্রশাসন।’’

মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, ‘‘অভিযোগ অনেকেই করে এটা কোন বিষয় না। এটি সৌদি আরবের ঘটনা, আমাদের কোন বিষয় না। যেহেতু সৌদি আরবের ঘটনা। ওনার যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে সৌদি আরবে অভিযোগ করতে পারে। তবে আমাদের কাছে আসলে পরামর্শ দিতে পারি।’’

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল কাইয়ূম বলেন, ‘‘ভুক্তভোগী বাবুল দাসের সাথে আমার কথা হয়েছে। আমি অভিযোগের একটি কপি পেয়েছি। ওসি সাহেবকে বলেছি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।’’

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, ‘‘সৌদি আরব রাষ্ট্রদূত থেকে একটি অভিযোগের কপি পেয়েছি। বিষয়টি আমি অবগত আছি। যেহেতু ঘটনাটি দেশের বাহিরের সেক্ষেত্রে আমরা কি ধরনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি এসপি সাহেবের সাথে কথা বলে বিষয়টি দেখবো।’’