সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজাদ হোসেন আজাদকে হাতুড়িপেটার ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত পৌর জামায়াতের প্রচার সম্পাদক হাফিজুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। আহত বিএনপি নেতাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সুত্রে জানাগেছে। এঘটনার পরথেকে পুরো উপজেলায় থমথমে ভাব বিরাজ করায় জামায়াতের পক্ষ থেকে দু:খ প্রকাশ করেছে।
উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসি রাকিবুল হাসান জানান,বিএনপি নেতার উপর হামলার সময়ের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সেই ভাইরাল ফুটেজ দেখে হামলার সঙ্গে জড়িত প্রধান অভিযুক্ত জামায়াত নেতা হাফিজকে আটক করা হয়েছে। রাতেই উপজেলার সলপ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আহতের ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক হামলাকারী হাফিজকে প্রধান করে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা করেছেন। অন্যান্য অভিযুক্তদের আটকের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।
এদিকে, আহত বিএনপি নেতা আজাদ হোসেন আজাদকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। তার মাথায় দুটি স্থানে হাঁড় ভেঙে গেছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।
আহত বিএনপি নেতার ভাই ইসহাক জানান,হাতুড়ির আঘাতে বড় ভাইয়ের মাথার দুটি স্থানের খুলি (হাঁড়) ভেঙে গেছে। ঘটনার পরই তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন।
এদিকে, হামলাকারী জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিএনপি নেতাকর্মীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। রাতে বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি বিশাল প্রতিবাদ মিছিল উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আগে শুক্রবার দুপুরে উপজেলা মসজিদে জুমার নামাজ শেষে থানার গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বিএনপি নেতা আজাদ। সেখানেই তার ওপর হামলার ঘটনার ঘটে। এরপর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে উল্লাপাড়া উপজেলা হাসপাতাল ও পরে বগুড়ায় নেওয়া হয়।
এঘটনার পর রাতে উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহাদত হোসেন এক ভিডিও বার্তায় বিএনপি নেতার ওপর হামলা এবং আহতের ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করে বলেন,এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম কোন ভাবেই দায় নিবেনা। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এমন ঘটনার জন্ম। তারপরও যেহেতু দলীয় পদ থাকায় আমরা তার প্রতি আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করছি। তবে এমন ঘটনার জন্য দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে কোন প্রকার সংঢ়াত এবং হানাহানি যেন জন্ম সা হয় আমরা সেই বিষয়টিকে খেয়াল রাখতে সহযোদ্ধা রাজনৈতিক দল বিএনপিকে শান্ত থাকার অনুরোধ করছি।
অপরদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয় উল্লাপাড়ার ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ এবং সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুসহ সিনিয়র নেতারা দু:খ প্রকাশ করেছেন। একই সাথে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কোন প্রকার সংঘাতে না জড়ানোর জন্য নির্দেশ প্রদার করেছে।
এদিকে শুক্রবারের এমন ঘটনার পর থেকে পুরো উপজেলায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।