Dhaka ০৯:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যশোরে শাহীন চাকলাদার, পিকুল, জুয়েলসহ আওয়ামী ঘরানার নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা ও তাদের পরিবারের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে সাতটি গাড়িতে করে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য শহরের বিভিন্ন স্থানে এই অভিযান পরিচালনা করেও কাউকে আটক করা হয়নি বা কোনো অবৈধ কিছু উদ্ধারও করা যায়নি।

এদিকে পুলিশের দাবি, তারা কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে অভিযান চালায়নি। অস্ত্র, মাদক ও মামলার পলাতক আসামিদের ধরতেই এ তৎপরতা চালানো হয়েছে।

পুলিশ প্রথমে শহরের কাঁঠালতলায় অবস্থিত শাহীন চাকলাদারের পোড়া বাড়িতে অভিযান চালায়। এ বাড়িটি সম্প্রতি ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের সময় আগুনে পুড়ে যায়। বর্তমানে সেখানে তিনি বা তার পরিবার বসবাস করেন না। সংস্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়।

পরে পুলিশ সদস্যরা পর্যায়ক্রমে যান পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলনের বাড়িতে, এরপর কদমতলার যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের বাড়ি এবং কাজীপাড়ায় জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়।

যুবলীগ নেতা জুয়েলের ভাবি জ্যোৎস্না বেগম বলেন, ‘পুলিশ আমাদের বাসায় এসে জুয়েলের খোঁজ নেয়। আমরা জানাই, তিনি অনেক আগেই বাড়ি ছেড়েছেন। এরপর পুলিশ ফিরে যায়, কাউকে কিছু বলেনি।’

অভিযানে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নেতাদের বাড়িতে মামলার আসামিরা থাকতে পারে এমন তথ্যের ভিত্তিতেই তারা সেখানে গিয়েছেন। কাউকে না পেলেও এমন অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।

যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি সূত্র জানিয়েছে, তাদের কয়েকটি টিম ও কোতোয়ালি থানা পুলিশের কয়েকটি টিমসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ অভিযান চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে মাদক সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়েছে ডিবি থেকে। সূত্রের দাবি অভিযানে আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ঘরানার অনেক নেতা কর্মীর বাড়িতে অভিযান চলেছে। এই অভিযানে বেশ কয়েকজন আটক হয়েছেন বলেও তথ্য মিলেছে।

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রয়োজনীয় অভিযান কমে যাওয়ায় পলাতক আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের লোকজন সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। তারা কোনো অঘটন ঘটাতে পারে এমন শঙ্কা উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। আবার নানা ঘটনায় জড়িত থাকা এবং আবার অনেকে পুরোনো অনেক ঘটনায় করা নতুন মামলায় আসামি হয়েছেন। আবার অনেক উঠতি সন্ত্রাসী সম্প্রতি নানা অঘটন ঘটিয়ে চলেছে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘এটি কোনো দলীয় অভিযান নয়। নিয়মিত মাদক ও অস্ত্রবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবেই পুলিশের এ তৎপরতা।’

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অনেকে বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় দলের ঝটিকা মিছিলের প্রেক্ষাপটে এ অভিযান চালানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

আত্রাইয়ে ইউপি মেম্বারসহ ৬ জন গ্রেপ্তার

যশোরে শাহীন চাকলাদার, পিকুল, জুয়েলসহ আওয়ামী ঘরানার নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

Update Time : ০৮:৫৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা ও তাদের পরিবারের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে সাতটি গাড়িতে করে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য শহরের বিভিন্ন স্থানে এই অভিযান পরিচালনা করেও কাউকে আটক করা হয়নি বা কোনো অবৈধ কিছু উদ্ধারও করা যায়নি।

এদিকে পুলিশের দাবি, তারা কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে অভিযান চালায়নি। অস্ত্র, মাদক ও মামলার পলাতক আসামিদের ধরতেই এ তৎপরতা চালানো হয়েছে।

পুলিশ প্রথমে শহরের কাঁঠালতলায় অবস্থিত শাহীন চাকলাদারের পোড়া বাড়িতে অভিযান চালায়। এ বাড়িটি সম্প্রতি ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের সময় আগুনে পুড়ে যায়। বর্তমানে সেখানে তিনি বা তার পরিবার বসবাস করেন না। সংস্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়।

পরে পুলিশ সদস্যরা পর্যায়ক্রমে যান পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলনের বাড়িতে, এরপর কদমতলার যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের বাড়ি এবং কাজীপাড়ায় জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়।

যুবলীগ নেতা জুয়েলের ভাবি জ্যোৎস্না বেগম বলেন, ‘পুলিশ আমাদের বাসায় এসে জুয়েলের খোঁজ নেয়। আমরা জানাই, তিনি অনেক আগেই বাড়ি ছেড়েছেন। এরপর পুলিশ ফিরে যায়, কাউকে কিছু বলেনি।’

অভিযানে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নেতাদের বাড়িতে মামলার আসামিরা থাকতে পারে এমন তথ্যের ভিত্তিতেই তারা সেখানে গিয়েছেন। কাউকে না পেলেও এমন অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।

যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি সূত্র জানিয়েছে, তাদের কয়েকটি টিম ও কোতোয়ালি থানা পুলিশের কয়েকটি টিমসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ অভিযান চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে মাদক সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়েছে ডিবি থেকে। সূত্রের দাবি অভিযানে আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ঘরানার অনেক নেতা কর্মীর বাড়িতে অভিযান চলেছে। এই অভিযানে বেশ কয়েকজন আটক হয়েছেন বলেও তথ্য মিলেছে।

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রয়োজনীয় অভিযান কমে যাওয়ায় পলাতক আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের লোকজন সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। তারা কোনো অঘটন ঘটাতে পারে এমন শঙ্কা উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। আবার নানা ঘটনায় জড়িত থাকা এবং আবার অনেকে পুরোনো অনেক ঘটনায় করা নতুন মামলায় আসামি হয়েছেন। আবার অনেক উঠতি সন্ত্রাসী সম্প্রতি নানা অঘটন ঘটিয়ে চলেছে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘এটি কোনো দলীয় অভিযান নয়। নিয়মিত মাদক ও অস্ত্রবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবেই পুলিশের এ তৎপরতা।’

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অনেকে বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় দলের ঝটিকা মিছিলের প্রেক্ষাপটে এ অভিযান চালানো হয়েছে।