Dhaka ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এনামুল ও পারভেজকে জড়িয়ে ভুয়া মামলার অভিযোগ

জমির মালিকদের ইজারার টাকা না দিয়ে জোর পূর্ব দখল করে ঘেরে মাছ চাষ করে আসছিল পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী মৃনাল বাহিনীর অন্যতম সহযোগী সত্যজিৎ সরদার। তবে গত ৫ আগষ্ট দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হওয়ার পর দরিদ্র জমির মালিকরা, তাদের জমি উদ্ধার করে সম্মিলিত ভাবে সেখানে মাছ চাষ করছেন। এতে থেমে নেই এই আওয়ামী লীগের দোসর, যিনি আওয়ামী লীগের এমপি আকতারুজ্জামান বাবু ও রাশেদুজ্জামানের অর্থ সহায়তাকারী। তিনি পুনরায় জমি দখলের জন্য নানান পন্থা অবলম্ব করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ওই জমি উদ্ধারের সহায়তায় করায় জন্য বিএনপির নেতাদের জড়িয়ে মামলা দায়ের করছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলার মাসফিয়ার রহমান সবুজ। তিনি বলেন, এই ঘেরে বছরের অর্ধেক সময় মাছ ও পরবর্তীতে ধান চাষ হয়। মাছের লভ্যাংশ ঘের মালিকের এবং পরবর্তী ধান চাষের সম্পূর্ণ ফসল জমির মালিকগণ ভোগ দখল করে থাকেন। যেটা আওয়ামী লীগের আমলে সম্ভব ছিল না। নতুন বাংলাদেশে দরিদ্র মাছ চাষীরা উপকৃত হোক এটা চাই না আওয়ামী লীগের দোসররা। তারা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য মাছের ঘেরে লুট করা বা হামলা চালানোর অভিযোগ একটি ভুয়া মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় বিএনপি নেতা এস এম এনামূল হক, আসলাম পারভেজ, মোঃ ইমরান সরদার, মোঃ ইব্রাহিম গাজী নাম উল্লেখসহ ১২ এবং অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে জড়ানো হয়েছে। একই সাথে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাসহ জমির মালিকদেরকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নানাভাবে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামের দুর্নাম ছড়াচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন গল্প সাজিয়ে মিডিয়ার সামনে কারসাজি করা তথ্য উপস্থাপন করে মিডিয়া ট্রায়ালে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পাইকগাছা উপজেলার অধিকাংশ মৎস্য ঘের নিজেদের দখলে রেখেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, কোন জমির মালিককে আওয়ামী লীগের দোসররা খাজনা পরিশোধ করতো না। জোর জুলুম করে দখল করে মাছ চাষ করতে, স্থানীয় থানা পুলিশ ও সংসদ সদস্যরা এর সাথে জড়িত থাকায় দরিদ্র জমির মালিকরা কখনো ন্যায় বিচার পাননি। গত ৫ আগষ্টের পর ছাত্র জনতার হাত ধরে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে। এখন মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাচ্ছে। পাইকগাছার জমির মালিকরা তাদের জমি আওয়ামী লীগের দোসরদের হাত থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র ইজারা দিতে পারছে। তবে এতে থেমে নেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসররা। নানা কৌশলে এখনো গরিব মানুষকে হয়রানি ও জমি দখলে রাখার পায়তারা চালাচ্ছে।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গত ২০ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করেছে পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নের দিঘলিয়া গ্রামের মৃত নিরোদ সরদারের পুত্র সত্যজিৎ সরদার। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে এবং আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জমির মালিকদের ঠকিয়ে ঘের দখলে চেষ্টা করতে সে স্থানীয় বিএনপির নামে দুর্নাম করেছে।
তিনি বলেন, পাইকগাছার এলাধীন মৌজা ১৬৮ নং লতাপুতলাখালীতে মাছের ঘের আছে। আবার বাবা মরহুম ফসিয়ার রহমান ৫টি দলিলমূলে ৩০ বছর ঘের করেন। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পর তারই সন্তান আমি ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারী হতে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদী ইজারা নিই। ২০২৩ রেজি: অফিসের মাধ্যমে শিবপদ সরদারকে পার্টনারশীপ দলিল দেন, যার অংশ থাকে ৫০ শতাংশ। কিন্তু ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতা প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য মোঃ আখতারুজ্জামান বাবু ও মোঃ রশিদুজ্জামানের ভয় দেখিয়ে বাকী অর্ধেকের ৪৯অংশ জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। ৫ই আগস্ট ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতনের পর আমি ১২ নভেম্বর নোটারী দলিলের বিরুদ্ধে (সত্যজিৎ) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছিলাম।
এছাড়া প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে আদালতে মামলা করা সত্ত্বেও নিজের পক্ষে রায় আনতে ব্যর্থ হয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বক্তব্য দিয়েছে। পাশাপাশি পাইকগাছার সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এবং বিজ্ঞ জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলার বিষয়টি সম্পূর্ন গোপন রেখে বিএনপি নেতা ও আমার চাচা এস এম এনামুল হক ও আসলাম পারভেজকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, সত্যজিৎ-এর দাবিকৃত ঘেরে ডিড ২০২৪ সালের ৩০শে ডিসেম্বর শেষ হয়েছে, পরবর্তীতে জমির মালিকগণ পূর্বের ন্যায় আমাকে ডিড করে দেন।
তিনি আরও বলেন, আশ্চর্যের বিষয় আওয়ামী লীগ নেতা সন্ত্রাসী সত্যজিৎ সরদার দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী মৃণালের অন্যতম সহযোগী সত্যজিৎ সরদার নিজেই বাদী হয়ে পৃথক দুইটি আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মিথ্যা ঘটনা উপস্থাপন করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য নানা কাল্পনিক কাহিনী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রায় ৩০ জন জমির মালিক উপস্থিত ছিলেন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

গোপালগঞ্জে কারফিউ চলবে

খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এনামুল ও পারভেজকে জড়িয়ে ভুয়া মামলার অভিযোগ

জন দেখেছেন : ০১:০৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
জমির মালিকদের ইজারার টাকা না দিয়ে জোর পূর্ব দখল করে ঘেরে মাছ চাষ করে আসছিল পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী মৃনাল বাহিনীর অন্যতম সহযোগী সত্যজিৎ সরদার। তবে গত ৫ আগষ্ট দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হওয়ার পর দরিদ্র জমির মালিকরা, তাদের জমি উদ্ধার করে সম্মিলিত ভাবে সেখানে মাছ চাষ করছেন। এতে থেমে নেই এই আওয়ামী লীগের দোসর, যিনি আওয়ামী লীগের এমপি আকতারুজ্জামান বাবু ও রাশেদুজ্জামানের অর্থ সহায়তাকারী। তিনি পুনরায় জমি দখলের জন্য নানান পন্থা অবলম্ব করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ওই জমি উদ্ধারের সহায়তায় করায় জন্য বিএনপির নেতাদের জড়িয়ে মামলা দায়ের করছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলার মাসফিয়ার রহমান সবুজ। তিনি বলেন, এই ঘেরে বছরের অর্ধেক সময় মাছ ও পরবর্তীতে ধান চাষ হয়। মাছের লভ্যাংশ ঘের মালিকের এবং পরবর্তী ধান চাষের সম্পূর্ণ ফসল জমির মালিকগণ ভোগ দখল করে থাকেন। যেটা আওয়ামী লীগের আমলে সম্ভব ছিল না। নতুন বাংলাদেশে দরিদ্র মাছ চাষীরা উপকৃত হোক এটা চাই না আওয়ামী লীগের দোসররা। তারা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য মাছের ঘেরে লুট করা বা হামলা চালানোর অভিযোগ একটি ভুয়া মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় বিএনপি নেতা এস এম এনামূল হক, আসলাম পারভেজ, মোঃ ইমরান সরদার, মোঃ ইব্রাহিম গাজী নাম উল্লেখসহ ১২ এবং অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে জড়ানো হয়েছে। একই সাথে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাসহ জমির মালিকদেরকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নানাভাবে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামের দুর্নাম ছড়াচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন গল্প সাজিয়ে মিডিয়ার সামনে কারসাজি করা তথ্য উপস্থাপন করে মিডিয়া ট্রায়ালে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পাইকগাছা উপজেলার অধিকাংশ মৎস্য ঘের নিজেদের দখলে রেখেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, কোন জমির মালিককে আওয়ামী লীগের দোসররা খাজনা পরিশোধ করতো না। জোর জুলুম করে দখল করে মাছ চাষ করতে, স্থানীয় থানা পুলিশ ও সংসদ সদস্যরা এর সাথে জড়িত থাকায় দরিদ্র জমির মালিকরা কখনো ন্যায় বিচার পাননি। গত ৫ আগষ্টের পর ছাত্র জনতার হাত ধরে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে। এখন মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাচ্ছে। পাইকগাছার জমির মালিকরা তাদের জমি আওয়ামী লীগের দোসরদের হাত থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র ইজারা দিতে পারছে। তবে এতে থেমে নেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসররা। নানা কৌশলে এখনো গরিব মানুষকে হয়রানি ও জমি দখলে রাখার পায়তারা চালাচ্ছে।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গত ২০ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করেছে পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নের দিঘলিয়া গ্রামের মৃত নিরোদ সরদারের পুত্র সত্যজিৎ সরদার। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে এবং আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জমির মালিকদের ঠকিয়ে ঘের দখলে চেষ্টা করতে সে স্থানীয় বিএনপির নামে দুর্নাম করেছে।
তিনি বলেন, পাইকগাছার এলাধীন মৌজা ১৬৮ নং লতাপুতলাখালীতে মাছের ঘের আছে। আবার বাবা মরহুম ফসিয়ার রহমান ৫টি দলিলমূলে ৩০ বছর ঘের করেন। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পর তারই সন্তান আমি ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারী হতে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদী ইজারা নিই। ২০২৩ রেজি: অফিসের মাধ্যমে শিবপদ সরদারকে পার্টনারশীপ দলিল দেন, যার অংশ থাকে ৫০ শতাংশ। কিন্তু ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতা প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য মোঃ আখতারুজ্জামান বাবু ও মোঃ রশিদুজ্জামানের ভয় দেখিয়ে বাকী অর্ধেকের ৪৯অংশ জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। ৫ই আগস্ট ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতনের পর আমি ১২ নভেম্বর নোটারী দলিলের বিরুদ্ধে (সত্যজিৎ) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছিলাম।
এছাড়া প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে আদালতে মামলা করা সত্ত্বেও নিজের পক্ষে রায় আনতে ব্যর্থ হয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বক্তব্য দিয়েছে। পাশাপাশি পাইকগাছার সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এবং বিজ্ঞ জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলার বিষয়টি সম্পূর্ন গোপন রেখে বিএনপি নেতা ও আমার চাচা এস এম এনামুল হক ও আসলাম পারভেজকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, সত্যজিৎ-এর দাবিকৃত ঘেরে ডিড ২০২৪ সালের ৩০শে ডিসেম্বর শেষ হয়েছে, পরবর্তীতে জমির মালিকগণ পূর্বের ন্যায় আমাকে ডিড করে দেন।
তিনি আরও বলেন, আশ্চর্যের বিষয় আওয়ামী লীগ নেতা সন্ত্রাসী সত্যজিৎ সরদার দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী মৃণালের অন্যতম সহযোগী সত্যজিৎ সরদার নিজেই বাদী হয়ে পৃথক দুইটি আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মিথ্যা ঘটনা উপস্থাপন করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য নানা কাল্পনিক কাহিনী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রায় ৩০ জন জমির মালিক উপস্থিত ছিলেন।