Dhaka ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুন্দরগঞ্জে ইটের বদলে প্লাস্টিকের বোতল বাড়ি নির্মাণ করে আলোচিত অটো চালক আব্দুল হাকিম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে প্লাস্টিকের রঙ-বেরঙের পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে তিন কক্ষবিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন অটো চালক আব্দুল হাকিম।

জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি খানপাড়া প্রত্যন্ত  গ্রামে নির্মাণকাজ চলছে বাড়িটির। ছাদ ঢালাই সহ বাড়ির কাজ কিছুটা বাকি থাকলেও এরই মধ্যে এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বাড়িটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, পরিত্যক্ত বিভিন্ন প্লাস্টিকের বোতলে বালু ভরে এরপর তা ব্যবহার করা হচ্ছে বাড়ির দেয়াল তৈরিতে। ইটের বদলে সারি সারি প্লাস্টিকের বোতলে সিমেন্টের গাঁথুনি দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এসব দেয়াল। শখ করে এলাকাবাসী বাড়িটির নাম দিয়েছে বোতল বাড়ি।

শুরুর দিকে বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণের এমন পদ্ধতি দেখে হাসি-তামাসা করলেও এখন বাড়িটি নিয়ে গর্ব করে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে আব্দুল হাকিম পরিত্যক্ত বোতল সংগ্ৰহ করে বস্তায় ভরে অটোতে করে এনে মজুত করেন হাকিম। জানতে চাইলে বলেন, বাড়ি বানাব। প্রথমে এসব নিয়ে অনেক হাসি-তামাসা হলেও এখন সত্যিই বাড়ি বানানো হয়েছে। এমন বাড়ি জেলায় মাত্র একটি। বাড়িটি দেখতে অনেকে আসে। হাকিমের এমন কাজ এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

বাড়ি নির্মাণে পরিত্যক্ত বোতল ব্যবহারের বিরোধিতা করেছিলেন অনেকে। তবে তার পাশে উৎসাহ জুগিয়েছে তার সহধর্মিণী আনচুমারা বেগম। এখন নির্মিত বাড়ি দেখে সবাই খুব খুশি।

আব্দুল হাকিম বলেন- আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ব্যতিক্রম কিছু করার। আমি ইউটিউবে দেখেছি বোতলের বাড়ি। তাই আমি বিভিন্ন ভাংরির দোকান থেকে পরিত্যক্ত বিভিন্ন বোতল সংগ্রহ করি। এরপর সিমেন্ট বালু ম্যানেজ করে কাজ শুরু করি। প্রথমে অনেকে আমাকে পাগল বলতো কিন্তু যখন বাড়ি নির্মাণ শুরু করলাম তখন সবাই বেশ খুশি এবং প্রতিনিয়ত বাড়িটি দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে অনেক লোক আসে। এজন্য আমারও ভালো লাগে। আশা করছি বাড়িটি পূর্ণ নির্মাণ হলে দেখতে সুন্দর লাগবে টেকসই ও মজবুত হবে। ইটের চাইতে এই বাড়ি নির্মাণে ব্যয় কিছুটা কম হবে।

এদিকে অভিনব পদ্ধতিতে বাড়ি নির্মাণের কাজ করতে পেরে খুশি রাজমিস্ত্রী ও শ্রমিকরা।

রাজমিস্ত্রী বাদশা মিয়া বলেন- আমি প্রথমে ইউটিউব দেখে আমার নিজের বাড়ি লালমনিরহাটে বোতলের বাড়ি করি। পরে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জে আমাকে বোতলের বাড়ি করার জন্য ডাকে। এখানে এসে বাড়ি করছি। আশা করছি ইটের চাইতে বোতলের বাড়ি মজবুত ও টেকসই হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন , শুনেছি আমাদের উপজেলায় পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে বাড়ি তৈরি হচ্ছে। আমি এখনও  পরিদর্শন করিনি। পরিদর্শন করে বলতে পারবো সেটা কতটা টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

গোপালগঞ্জে কারফিউ চলবে

সুন্দরগঞ্জে ইটের বদলে প্লাস্টিকের বোতল বাড়ি নির্মাণ করে আলোচিত অটো চালক আব্দুল হাকিম

জন দেখেছেন : ০৮:৪৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে প্লাস্টিকের রঙ-বেরঙের পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে তিন কক্ষবিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন অটো চালক আব্দুল হাকিম।

জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি খানপাড়া প্রত্যন্ত  গ্রামে নির্মাণকাজ চলছে বাড়িটির। ছাদ ঢালাই সহ বাড়ির কাজ কিছুটা বাকি থাকলেও এরই মধ্যে এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বাড়িটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, পরিত্যক্ত বিভিন্ন প্লাস্টিকের বোতলে বালু ভরে এরপর তা ব্যবহার করা হচ্ছে বাড়ির দেয়াল তৈরিতে। ইটের বদলে সারি সারি প্লাস্টিকের বোতলে সিমেন্টের গাঁথুনি দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এসব দেয়াল। শখ করে এলাকাবাসী বাড়িটির নাম দিয়েছে বোতল বাড়ি।

শুরুর দিকে বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণের এমন পদ্ধতি দেখে হাসি-তামাসা করলেও এখন বাড়িটি নিয়ে গর্ব করে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে আব্দুল হাকিম পরিত্যক্ত বোতল সংগ্ৰহ করে বস্তায় ভরে অটোতে করে এনে মজুত করেন হাকিম। জানতে চাইলে বলেন, বাড়ি বানাব। প্রথমে এসব নিয়ে অনেক হাসি-তামাসা হলেও এখন সত্যিই বাড়ি বানানো হয়েছে। এমন বাড়ি জেলায় মাত্র একটি। বাড়িটি দেখতে অনেকে আসে। হাকিমের এমন কাজ এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

বাড়ি নির্মাণে পরিত্যক্ত বোতল ব্যবহারের বিরোধিতা করেছিলেন অনেকে। তবে তার পাশে উৎসাহ জুগিয়েছে তার সহধর্মিণী আনচুমারা বেগম। এখন নির্মিত বাড়ি দেখে সবাই খুব খুশি।

আব্দুল হাকিম বলেন- আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ব্যতিক্রম কিছু করার। আমি ইউটিউবে দেখেছি বোতলের বাড়ি। তাই আমি বিভিন্ন ভাংরির দোকান থেকে পরিত্যক্ত বিভিন্ন বোতল সংগ্রহ করি। এরপর সিমেন্ট বালু ম্যানেজ করে কাজ শুরু করি। প্রথমে অনেকে আমাকে পাগল বলতো কিন্তু যখন বাড়ি নির্মাণ শুরু করলাম তখন সবাই বেশ খুশি এবং প্রতিনিয়ত বাড়িটি দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে অনেক লোক আসে। এজন্য আমারও ভালো লাগে। আশা করছি বাড়িটি পূর্ণ নির্মাণ হলে দেখতে সুন্দর লাগবে টেকসই ও মজবুত হবে। ইটের চাইতে এই বাড়ি নির্মাণে ব্যয় কিছুটা কম হবে।

এদিকে অভিনব পদ্ধতিতে বাড়ি নির্মাণের কাজ করতে পেরে খুশি রাজমিস্ত্রী ও শ্রমিকরা।

রাজমিস্ত্রী বাদশা মিয়া বলেন- আমি প্রথমে ইউটিউব দেখে আমার নিজের বাড়ি লালমনিরহাটে বোতলের বাড়ি করি। পরে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জে আমাকে বোতলের বাড়ি করার জন্য ডাকে। এখানে এসে বাড়ি করছি। আশা করছি ইটের চাইতে বোতলের বাড়ি মজবুত ও টেকসই হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন , শুনেছি আমাদের উপজেলায় পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে বাড়ি তৈরি হচ্ছে। আমি এখনও  পরিদর্শন করিনি। পরিদর্শন করে বলতে পারবো সেটা কতটা টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব হবে।