Dhaka ০৯:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুরে দুই সন্তানের জনকের মরদেহ উদ্ধার, হত্যা না আত্মহত্যা

সৈয়দপুরে দুই সন্তানের জনকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৭ এপ্রি) সকাল সারে ১০টায় শহরের সাহেবপাড়া আমিন মোড় লিচু বাগান এলাকা থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও পারিবারিক কলহের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী মন্তব্য করেন।  ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার বলে জানান অনেকেই।
নিহত মাহমুদ (৪৫) সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল্লাহর ছেলে। পেশায় একজন ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। সাহেবপাড়ায় তিনি শ্বশুড়বাড়ি সংলগ্ন রেলওয়ে এল-২৫ নং বাংলোর ভিতরে টিনসেট বাড়িতে বসবাস করতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহত মাহমুদের ঘনিষ্টজনরা জানান, বিয়ের পর থেকে মাহমুদ তার স্ত্রী ও শ্যালকদের দ্বারা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এনিয়ে একাধিকবার শালিশের দুপক্ষের সমাধান করে এলাকা বাসি। কিন্তু স্ত্রী ইয়াসমিন তবুও তাকে সবসময়ই চাপের মধ্যে রাখতো। স্বামী হিসেবে তাকে কোন সম্মান করতো না। কিন্তু সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মাহমুদ তা সহ্য করেই সংসার করে যাচ্ছিল।
ঘটনার আগের রাতেও মাহমুদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে তার স্ত্রী ও শ্যালক সাদ্দাম । গত বৃহস্পতিবার তার অনুমতি ছাড়াই স্ত্রী ইয়াসমিন তার ভাই সাদ্দামের সাথে এক আত্মীয়ের বিয়েতে যায়। গভীর রাতে ইয়াসমিন নিজ ঘরে ফিরলে মাহমুদ তাকে ঘরে উঠতে না দিলে স্ত্রী ও শ্যালকরা তাৎক্ষনিক দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে মাহমুদকে বেধড়ক মারপিট করে ঘরের বাঁশে ঝুলিয়ে রাখে।
এব্যাপারে মাহমুদের বড় শ্যালক সাদ্দাম বলেন, মাহমুদ ও তার স্ত্রী ইয়াসমিনের মধ্যে মনোমালিন্য ছিলো। কারণ মাহমুদ নেশা করতো। তাছাড়া ইতোপূর্বে সে পরকীয়ায় জড়িয়েছিল। অনেক চেষ্টা করে তা থেকে সরিয়ে তাদের সংসার টিকিয়ে রাখা হয়েছে। অহেতুক মিথ্যে অভিযোগে আমাদের হয়রানী করা হচ্ছে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে নিহতের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে সুরতহাল রিপোর্ট করার পর লাশ থানায় আনা হয়েছে। প্রকৃত কারণ জানার জন্য ময়না তদন্ত করতে নীলফামারী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুই পরিবারের কেউই অভিযোগ করেনি। তবে অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

খুলনার আড়ংঘাটায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এক জন আহত হয়েছেন

সৈয়দপুরে দুই সন্তানের জনকের মরদেহ উদ্ধার, হত্যা না আত্মহত্যা

Update Time : ০৭:৩২:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
সৈয়দপুরে দুই সন্তানের জনকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৭ এপ্রি) সকাল সারে ১০টায় শহরের সাহেবপাড়া আমিন মোড় লিচু বাগান এলাকা থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও পারিবারিক কলহের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী মন্তব্য করেন।  ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার বলে জানান অনেকেই।
নিহত মাহমুদ (৪৫) সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল্লাহর ছেলে। পেশায় একজন ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। সাহেবপাড়ায় তিনি শ্বশুড়বাড়ি সংলগ্ন রেলওয়ে এল-২৫ নং বাংলোর ভিতরে টিনসেট বাড়িতে বসবাস করতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহত মাহমুদের ঘনিষ্টজনরা জানান, বিয়ের পর থেকে মাহমুদ তার স্ত্রী ও শ্যালকদের দ্বারা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এনিয়ে একাধিকবার শালিশের দুপক্ষের সমাধান করে এলাকা বাসি। কিন্তু স্ত্রী ইয়াসমিন তবুও তাকে সবসময়ই চাপের মধ্যে রাখতো। স্বামী হিসেবে তাকে কোন সম্মান করতো না। কিন্তু সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মাহমুদ তা সহ্য করেই সংসার করে যাচ্ছিল।
ঘটনার আগের রাতেও মাহমুদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে তার স্ত্রী ও শ্যালক সাদ্দাম । গত বৃহস্পতিবার তার অনুমতি ছাড়াই স্ত্রী ইয়াসমিন তার ভাই সাদ্দামের সাথে এক আত্মীয়ের বিয়েতে যায়। গভীর রাতে ইয়াসমিন নিজ ঘরে ফিরলে মাহমুদ তাকে ঘরে উঠতে না দিলে স্ত্রী ও শ্যালকরা তাৎক্ষনিক দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে মাহমুদকে বেধড়ক মারপিট করে ঘরের বাঁশে ঝুলিয়ে রাখে।
এব্যাপারে মাহমুদের বড় শ্যালক সাদ্দাম বলেন, মাহমুদ ও তার স্ত্রী ইয়াসমিনের মধ্যে মনোমালিন্য ছিলো। কারণ মাহমুদ নেশা করতো। তাছাড়া ইতোপূর্বে সে পরকীয়ায় জড়িয়েছিল। অনেক চেষ্টা করে তা থেকে সরিয়ে তাদের সংসার টিকিয়ে রাখা হয়েছে। অহেতুক মিথ্যে অভিযোগে আমাদের হয়রানী করা হচ্ছে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে নিহতের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে সুরতহাল রিপোর্ট করার পর লাশ থানায় আনা হয়েছে। প্রকৃত কারণ জানার জন্য ময়না তদন্ত করতে নীলফামারী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুই পরিবারের কেউই অভিযোগ করেনি। তবে অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।