Dhaka ১২:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তানোরে সরকারি রাস্তা ও গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগ

????????????

রাজশাহীর তানোরে যুগযুগ ধরে সরকারি চলাচলের রাস্তার গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন প্রভাবশালী বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন ইউপির মাড়িয়া গ্রামে ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা। এঘটনায় আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি প্রভাবশালী মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী কে বিবাদী করে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসির নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে করে গ্রামবাসীর মধ্যে এক প্রকার উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে সংঘর্ষ বলেও আশংকা গ্রামবাসীর। ফলে ঘটনাটি নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে মিমাংসা না হলে অনাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাড়িয়া গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পার হয়ে মাটির রাস্তা। রাস্তা সংলগ্ন পূর্ব দিকে ছোট মাটির মসজিদ রয়েছে। মাটির রাস্তাটি বিলে নেমে গেছে। মসজিদ পার হয়ে উত্তর দিকে মাটির রাস্তা আক্রোশ মুলুক ভাবে মিজানুর খনন করেছে ও সরকারি রাস্তার ২ টি আম গাছের চারাসহ বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ কেটে ফেলে রেখেছে এবং রাস্তা গর্ত হয়ে আছে। সেখানেই ছিলেন আলিমদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তিনি জানান আমার প্রকৃত বাড়ি বাগমারায়, আমি বিগত ৪০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। সে সময় থেকে এরাস্তা দিয়ে মানুষ চলাফেরা করে আসছে এবং বিলের জমি থেকে ফসল গাড়িতে করে তুলে নিয়ে আসে বাড়ির আঙ্গিনায়। কিন্তু হঠাৎ করেই মিজান বলছে এসব আমার জায়গা, কিন্তু কোন কাগজ দেখাতে পারে না।

রিয়াজ উদ্দিন নামের ৮২ বছরের বয়োজ্যেষ্ঠ জানান, আমার জন্মের আগ থেকে এটি রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পুর্ব দিকের বিলে যাওয়ার রাস্তা  আতাউরের ব্যক্তিগত। তারপরও সে কখনো বাধা দেয় না। মিজানের বাড়ির পশ্চিম দিকে মাটির মসজিদ রয়েছে। মসজিদে যাতে আমরা নামাজ না পড়তে পারি এজন্য বাথরুমের হাউজ খুলে রেখেছে। এটা কোন মানুষের কাজ হতে পারে না।

জিল্লুর, জিয়াউর রহমানসহ অনেকে জানান, এখন বিল থেকে পুরোদমে কাটা ধান তুলছে। এসময় রাস্তা খনন করেছে মিজান। খনন করার কারনে ধান বোঝায় গাড়ি উলটে গিয়ে এক শ্রমিকের পা ভেঙে গেছে। সে আর কাজ করতে পারছেনা। মিজান তার স্ত্রী ও তার ভাই জিয়ার ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনা। তাদের ভয়ে পাড়ার লোকজন মসজিদে নামাজ পড়তে যায় না। গত শনিবার কয়েক গ্রামের মতবর ও উভয় পক্ষের দুজন জায়গা মাপজোক করা আমিন এসেছিল। দীর্ঘ সময় সালিশ বিচার হওয়ার পর মাপজোক করে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি মারা হয়। লোকজন চলে যাবার পর খুঁটি তুলে ফেলে। তারা কোনকিছুই মানতে চায় না। অথচ আতাউরের ব্যক্তিগত জায়গা দিয়ে চলাচল করা হয়। সে যদি এসব করত তাহলে মানা যায়। কিন্তু আতাউরের কোন সমস্যা না হলেও মিজানরা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ, বিবাদী মিজানের বাড়ির পার্শ্বে বাদি আসাদুজ্জামানের বাড়ি।গত ২০/০৪/২৫ ইং তারিখে সকাল ৮ টার দিকে বিবাদী মিজান সরকারি রাস্তার মাটি কেটে তার জায়গায় ফেলছিল। গত ২৭/০৪/২৫ ইং তারিখে সকাল ৭ টার দিকে বাদীর বাড়ির পূর্ব উত্তর পাশে থাকা দুটি আম গাছের চারা ও বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ কেটে এবং উপড়ে ফেলে। বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি সহ অকাথ্য ভাষায় গালমন্দ করে।

এদিকে গত ২৭ এপ্রিল আতাউর রহমান বাদি হয়ে মিজান ও তার ভাই জিয়াকে বিবাদী করে নির্বাহীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে আতাউর উল্লেখ করেন, মাড়িয়া মৌজার অন্তর্গত আরএস ১২৭,১২৮ নম্বর খতিয়ানে ১২২,১২১ দাগে বিবাদমান জায়গা নিয়ে উভয় পক্ষের আমিন দ্বারা মাপজোক করা হয়। কিন্তু সব মেনে নেয়ার পর বিবাদী মাতব্বর গণকে অপমান করে, সবকিছু অমান্য করে।

অভিযোগ কারী আতাউর ও আসাদুজ্জামান জানান, মিজান জিয়া তারা কোন কিছুই মানতে চায় না। আবার জায়গার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনা। সব কিছুই গায়ের জোরে করে। তাদের ভয়ে আমরা এক প্রকার আতংক নিয়ে বসবাস করছি। নিরুপায় হয়ে নির্বাহী ও ওসির নিকট অভিযোগ দিয়েছি। আমরা চায় প্রশাসনের মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান ন্যায় বিচার।

তবে মিজানের ভাই জিয়াউর রহমানের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে রিং হলেও রিসিভ করেননি। পরে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, অভিযোগ হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্বাহী অফিসার লিয়াকত সালমান জানান, রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

খুলনা নগরীর রুপসা নদীতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ

তানোরে সরকারি রাস্তা ও গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগ

Update Time : ০৬:২৯:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে যুগযুগ ধরে সরকারি চলাচলের রাস্তার গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন প্রভাবশালী বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন ইউপির মাড়িয়া গ্রামে ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা। এঘটনায় আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি প্রভাবশালী মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী কে বিবাদী করে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসির নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে করে গ্রামবাসীর মধ্যে এক প্রকার উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে সংঘর্ষ বলেও আশংকা গ্রামবাসীর। ফলে ঘটনাটি নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে মিমাংসা না হলে অনাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাড়িয়া গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পার হয়ে মাটির রাস্তা। রাস্তা সংলগ্ন পূর্ব দিকে ছোট মাটির মসজিদ রয়েছে। মাটির রাস্তাটি বিলে নেমে গেছে। মসজিদ পার হয়ে উত্তর দিকে মাটির রাস্তা আক্রোশ মুলুক ভাবে মিজানুর খনন করেছে ও সরকারি রাস্তার ২ টি আম গাছের চারাসহ বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ কেটে ফেলে রেখেছে এবং রাস্তা গর্ত হয়ে আছে। সেখানেই ছিলেন আলিমদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তিনি জানান আমার প্রকৃত বাড়ি বাগমারায়, আমি বিগত ৪০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। সে সময় থেকে এরাস্তা দিয়ে মানুষ চলাফেরা করে আসছে এবং বিলের জমি থেকে ফসল গাড়িতে করে তুলে নিয়ে আসে বাড়ির আঙ্গিনায়। কিন্তু হঠাৎ করেই মিজান বলছে এসব আমার জায়গা, কিন্তু কোন কাগজ দেখাতে পারে না।

রিয়াজ উদ্দিন নামের ৮২ বছরের বয়োজ্যেষ্ঠ জানান, আমার জন্মের আগ থেকে এটি রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পুর্ব দিকের বিলে যাওয়ার রাস্তা  আতাউরের ব্যক্তিগত। তারপরও সে কখনো বাধা দেয় না। মিজানের বাড়ির পশ্চিম দিকে মাটির মসজিদ রয়েছে। মসজিদে যাতে আমরা নামাজ না পড়তে পারি এজন্য বাথরুমের হাউজ খুলে রেখেছে। এটা কোন মানুষের কাজ হতে পারে না।

জিল্লুর, জিয়াউর রহমানসহ অনেকে জানান, এখন বিল থেকে পুরোদমে কাটা ধান তুলছে। এসময় রাস্তা খনন করেছে মিজান। খনন করার কারনে ধান বোঝায় গাড়ি উলটে গিয়ে এক শ্রমিকের পা ভেঙে গেছে। সে আর কাজ করতে পারছেনা। মিজান তার স্ত্রী ও তার ভাই জিয়ার ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনা। তাদের ভয়ে পাড়ার লোকজন মসজিদে নামাজ পড়তে যায় না। গত শনিবার কয়েক গ্রামের মতবর ও উভয় পক্ষের দুজন জায়গা মাপজোক করা আমিন এসেছিল। দীর্ঘ সময় সালিশ বিচার হওয়ার পর মাপজোক করে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি মারা হয়। লোকজন চলে যাবার পর খুঁটি তুলে ফেলে। তারা কোনকিছুই মানতে চায় না। অথচ আতাউরের ব্যক্তিগত জায়গা দিয়ে চলাচল করা হয়। সে যদি এসব করত তাহলে মানা যায়। কিন্তু আতাউরের কোন সমস্যা না হলেও মিজানরা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ, বিবাদী মিজানের বাড়ির পার্শ্বে বাদি আসাদুজ্জামানের বাড়ি।গত ২০/০৪/২৫ ইং তারিখে সকাল ৮ টার দিকে বিবাদী মিজান সরকারি রাস্তার মাটি কেটে তার জায়গায় ফেলছিল। গত ২৭/০৪/২৫ ইং তারিখে সকাল ৭ টার দিকে বাদীর বাড়ির পূর্ব উত্তর পাশে থাকা দুটি আম গাছের চারা ও বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ কেটে এবং উপড়ে ফেলে। বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি সহ অকাথ্য ভাষায় গালমন্দ করে।

এদিকে গত ২৭ এপ্রিল আতাউর রহমান বাদি হয়ে মিজান ও তার ভাই জিয়াকে বিবাদী করে নির্বাহীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে আতাউর উল্লেখ করেন, মাড়িয়া মৌজার অন্তর্গত আরএস ১২৭,১২৮ নম্বর খতিয়ানে ১২২,১২১ দাগে বিবাদমান জায়গা নিয়ে উভয় পক্ষের আমিন দ্বারা মাপজোক করা হয়। কিন্তু সব মেনে নেয়ার পর বিবাদী মাতব্বর গণকে অপমান করে, সবকিছু অমান্য করে।

অভিযোগ কারী আতাউর ও আসাদুজ্জামান জানান, মিজান জিয়া তারা কোন কিছুই মানতে চায় না। আবার জায়গার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনা। সব কিছুই গায়ের জোরে করে। তাদের ভয়ে আমরা এক প্রকার আতংক নিয়ে বসবাস করছি। নিরুপায় হয়ে নির্বাহী ও ওসির নিকট অভিযোগ দিয়েছি। আমরা চায় প্রশাসনের মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান ন্যায় বিচার।

তবে মিজানের ভাই জিয়াউর রহমানের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে রিং হলেও রিসিভ করেননি। পরে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, অভিযোগ হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্বাহী অফিসার লিয়াকত সালমান জানান, রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।