Dhaka ০১:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধুপুরে অশালীন আচরণের অভিযোগে লাঞ্ছিত প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগে একদল বহিরাগত নারী ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে জুতা পেটা করেছে। বুধবার(৩০ এপ্রিল) দুপুরে মধুপুরের ওই বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আব্দুল জব্বার গত বছরের এপ্রিল মাসে যোগদান করেন। বুধবার দুপুরে হঠাৎ করে একদল নারী অফিস কক্ষে গিয়ে তার উপর আক্রমণ করে। এসময় সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগমসহ কয়েকজন শিক্ষক তাদের হাত থেকে প্রধান শিক্ষককে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। এ সময় তাদের উপরও ক্ষিপ্ত হন হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।

এ সময় হামলায় অংশ নেওয়া জাহিন ওরফে জাহি ও ঝুমা বেগম জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার পড়ানোর সময় তাদের মেয়েদের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেছেন। সুমি বেগমও একই ধরনের অভিযোগ করেন।

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরে স্যারকে জানিয়েছিলাম। স্যার তখন অফিস কক্ষেই ছিলেন। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা অফিস কক্ষে প্রবেশ করে হামলা করেন। একপর্যায়ে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকেন। আমরা অনেক কষ্টে তাকে হামলাকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করি।

খবর পেয়ে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের শান্ত করে বলেন, এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রমাণ সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার জানান, তার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্যক্ত করতো। তাকে বিভিন্ন সময়ে বুঝানো হয়েছে। কথা না শুনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে সন্তানের মতো দেখি। সেভাবেই আদর-শাসন করেন। তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বের করার জন্য ঊর্ধ্বতনদের আহ্বান জানান তিনি।

মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জেনে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

খুলনা নগরীর রুপসা নদীতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ

মধুপুরে অশালীন আচরণের অভিযোগে লাঞ্ছিত প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

Update Time : ০৭:০৮:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগে একদল বহিরাগত নারী ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে জুতা পেটা করেছে। বুধবার(৩০ এপ্রিল) দুপুরে মধুপুরের ওই বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আব্দুল জব্বার গত বছরের এপ্রিল মাসে যোগদান করেন। বুধবার দুপুরে হঠাৎ করে একদল নারী অফিস কক্ষে গিয়ে তার উপর আক্রমণ করে। এসময় সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগমসহ কয়েকজন শিক্ষক তাদের হাত থেকে প্রধান শিক্ষককে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। এ সময় তাদের উপরও ক্ষিপ্ত হন হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।

এ সময় হামলায় অংশ নেওয়া জাহিন ওরফে জাহি ও ঝুমা বেগম জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার পড়ানোর সময় তাদের মেয়েদের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেছেন। সুমি বেগমও একই ধরনের অভিযোগ করেন।

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরে স্যারকে জানিয়েছিলাম। স্যার তখন অফিস কক্ষেই ছিলেন। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা অফিস কক্ষে প্রবেশ করে হামলা করেন। একপর্যায়ে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকেন। আমরা অনেক কষ্টে তাকে হামলাকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করি।

খবর পেয়ে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের শান্ত করে বলেন, এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রমাণ সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার জানান, তার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্যক্ত করতো। তাকে বিভিন্ন সময়ে বুঝানো হয়েছে। কথা না শুনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে সন্তানের মতো দেখি। সেভাবেই আদর-শাসন করেন। তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বের করার জন্য ঊর্ধ্বতনদের আহ্বান জানান তিনি।

মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জেনে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।