Dhaka ১১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তানোরে প্রেমের খপ্পরে সাতদিন ধরে নিখোঁজ প্রেমিক দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন পিতা

রাজশাহীর তানোরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিএসসি অনার্স পাশ করা প্রেমিক চিত্তরঞ্জন পাল প্রেমের খপ্পরে পড়ে সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ হয়ে আছেন বলে নিশ্চিত করেন তার পিতা। গত মাসের ২৭ এপ্রিল রবিবার নিজ বাড়ি থেকে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন প্রেমিক চিত্তরঞ্জন। পর দিন সোমবার কলেজ পড়ুয়া প্রেমিকা অসুস্থতার কথা বলে শহরে পাড়ি দেন ভাইকে নিয়ে। এঘটনায় ২৭ এপ্রিল ছেলের খোঁজ চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন পিতা মনোরঞ্জন পাল। যার জিডি নম্বর ১৩৫৩ তারিখ ২৭/০৪/২০২৫ ইং। তানোর পৌর এলাকার কালীগঞ্জ পূর্ব রায়তান বড়শো (হাবিবনগর পালপাড়া) গ্রামে ঘটে রয়েছে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। তবে থানা পুলিশ প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রেমিকার সন্ধান পেলেও প্রেমিকের কোন সন্ধান পাননি। এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চিত্তরঞ্জনের পিতা মনোরঞ্জন পাল জানান, গত ২৬ এপ্রিল শনিবার এক সাথে খাওয়া দাওয়া শেষে ছেলে ছাদে ঘুমাতে যায়। সেখান থেকেই পরদিন রবিবার ভোরে ছেলে অজানার উদ্দেশ্যে চলে যায়। সে রাজশাহী সিটি কলেজ থেকে বিএসসি অনার্স পাশ করেছে। যেদিন চলে যায় সেদিন থেকে আত্মীয় স্বজন তার বন্ধুদের মাধ্যমে খোঁজ করে কোন কিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। তার ব্যবহিত মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। ছেলে ওই এলাকার জৈনক ব্যক্তির কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক করে। এসম্পর্ক জানতে পেরে মেয়ের ভাই ছেলে কে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিত। আমার ছেলে ২৭ এপ্রিল চলে যাওয়ার পরদিন ২৮ এপ্রিল সোমবার মেয়ে চিকিৎসার নাম করে ভাইকে নিয়ে শহরে যাওয়ার কথা বলে। আমি থানায় গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে থানা পুলিশ জানায় মেয়ে ঢাকার বাড্ডা এলাকায় আছে। কিন্তু ছেলের কোন সন্ধান মিলছে না। আমার ছেলে বেঁচে আছে না মরে গেছে সেটাও বলতে পারছিনা, নাকি মেরে গুম করে ফেলা হয়েছে সেটাও কিনারা করতে পারছিনা। আমার একটাই ছেলে। এসব নিয়ে চরম দু:শ্চিন্তায় আছি। আমি ও ছেলের মা খাওয়া দাওয়া, নিন ঘুম সব হারাম হয়ে গেছে।

চিত্তরঞ্জন কে লিখা বেশকিছু প্রেমপত্র দেখান পিতা মনোরঞ্জন পাল। প্রেমপত্রে দেখা যায়, তুমি পুজো তে নতুন জামা পরবে, পুরাতন জামা পরবে না। ছোট ঘটনায় তুমি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছ, এমনটা করবা না। আমার বিয়ের কথা চলছে, তুমি কিছু একটা কর। তবে দাদা যেন কোনভাবেই বুঝতে না পারে। আমি তোমাকে যে রুমাল দিয়েছি সেটা কাউকে দেখাবা না। যদি আমার দাদা বুঝতে পারে তোমার সমস্যা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তাদের প্রেমের পথের কাটা মেয়ের ভাই ছিল বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানান,  চিত্তরঞ্জনের সাথে ওই মেয়ের দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল । ছেলে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেটা নিয়ে মেয়ের ভাই ছেলেকে একাধারে হুমকি ধামকি দিত। নিখোঁজ হওয়ার জন্য মেয়ের ভাই সবকিছুই বলতে পারবে। তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে পড়বে। কিন্তু মেয়ে ও তার ভাই একসাথে আছে বলেও স্থানীয়রা নিশ্চিত করেন।

মেয়ের পিতা জানিয়েছিলেন, আমার মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি। কোন হাসপাতালে ভর্তি জানতে চাইলে, সেটা জানাতে পারেনি।

জিডিতে চিত্তরঞ্জন পালের শারিরীক বর্ননা, চোখ কালোমনি, দাড়ি ছোট, চামড়ার রং শ্যামলা, মাপ ৫ ফিট ৪ ইঞ্চি, নাক লম্বা, কপাল চউড়া,গোঁপ ছোট, ঘাড় সরু,চুল ছোট/ খাটো, মুখের আকৃতি লম্বটে, কান গোলাকার, ওজন ৫৮ কেজি, রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ।

থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আফজাল হোসেন জানান, বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে মেয়ে রাজধানী ঢাকার বাড্ডা এলাকায় আছে। এটা জানতে পেরেছি। তবে ছেলে চিত্তরঞ্জন পালের কোন খোঁজ মিলছেনা। বিভিন্ন ভাবে ও প্রযুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে এঘটনার মুল রহস্য বের হয়ে আসবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

তানোরে প্রেমের খপ্পরে সাতদিন ধরে নিখোঁজ প্রেমিক দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন পিতা

Update Time : ১০:১৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিএসসি অনার্স পাশ করা প্রেমিক চিত্তরঞ্জন পাল প্রেমের খপ্পরে পড়ে সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ হয়ে আছেন বলে নিশ্চিত করেন তার পিতা। গত মাসের ২৭ এপ্রিল রবিবার নিজ বাড়ি থেকে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন প্রেমিক চিত্তরঞ্জন। পর দিন সোমবার কলেজ পড়ুয়া প্রেমিকা অসুস্থতার কথা বলে শহরে পাড়ি দেন ভাইকে নিয়ে। এঘটনায় ২৭ এপ্রিল ছেলের খোঁজ চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন পিতা মনোরঞ্জন পাল। যার জিডি নম্বর ১৩৫৩ তারিখ ২৭/০৪/২০২৫ ইং। তানোর পৌর এলাকার কালীগঞ্জ পূর্ব রায়তান বড়শো (হাবিবনগর পালপাড়া) গ্রামে ঘটে রয়েছে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। তবে থানা পুলিশ প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রেমিকার সন্ধান পেলেও প্রেমিকের কোন সন্ধান পাননি। এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চিত্তরঞ্জনের পিতা মনোরঞ্জন পাল জানান, গত ২৬ এপ্রিল শনিবার এক সাথে খাওয়া দাওয়া শেষে ছেলে ছাদে ঘুমাতে যায়। সেখান থেকেই পরদিন রবিবার ভোরে ছেলে অজানার উদ্দেশ্যে চলে যায়। সে রাজশাহী সিটি কলেজ থেকে বিএসসি অনার্স পাশ করেছে। যেদিন চলে যায় সেদিন থেকে আত্মীয় স্বজন তার বন্ধুদের মাধ্যমে খোঁজ করে কোন কিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। তার ব্যবহিত মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। ছেলে ওই এলাকার জৈনক ব্যক্তির কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক করে। এসম্পর্ক জানতে পেরে মেয়ের ভাই ছেলে কে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিত। আমার ছেলে ২৭ এপ্রিল চলে যাওয়ার পরদিন ২৮ এপ্রিল সোমবার মেয়ে চিকিৎসার নাম করে ভাইকে নিয়ে শহরে যাওয়ার কথা বলে। আমি থানায় গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে থানা পুলিশ জানায় মেয়ে ঢাকার বাড্ডা এলাকায় আছে। কিন্তু ছেলের কোন সন্ধান মিলছে না। আমার ছেলে বেঁচে আছে না মরে গেছে সেটাও বলতে পারছিনা, নাকি মেরে গুম করে ফেলা হয়েছে সেটাও কিনারা করতে পারছিনা। আমার একটাই ছেলে। এসব নিয়ে চরম দু:শ্চিন্তায় আছি। আমি ও ছেলের মা খাওয়া দাওয়া, নিন ঘুম সব হারাম হয়ে গেছে।

চিত্তরঞ্জন কে লিখা বেশকিছু প্রেমপত্র দেখান পিতা মনোরঞ্জন পাল। প্রেমপত্রে দেখা যায়, তুমি পুজো তে নতুন জামা পরবে, পুরাতন জামা পরবে না। ছোট ঘটনায় তুমি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছ, এমনটা করবা না। আমার বিয়ের কথা চলছে, তুমি কিছু একটা কর। তবে দাদা যেন কোনভাবেই বুঝতে না পারে। আমি তোমাকে যে রুমাল দিয়েছি সেটা কাউকে দেখাবা না। যদি আমার দাদা বুঝতে পারে তোমার সমস্যা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তাদের প্রেমের পথের কাটা মেয়ের ভাই ছিল বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানান,  চিত্তরঞ্জনের সাথে ওই মেয়ের দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল । ছেলে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেটা নিয়ে মেয়ের ভাই ছেলেকে একাধারে হুমকি ধামকি দিত। নিখোঁজ হওয়ার জন্য মেয়ের ভাই সবকিছুই বলতে পারবে। তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে পড়বে। কিন্তু মেয়ে ও তার ভাই একসাথে আছে বলেও স্থানীয়রা নিশ্চিত করেন।

মেয়ের পিতা জানিয়েছিলেন, আমার মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি। কোন হাসপাতালে ভর্তি জানতে চাইলে, সেটা জানাতে পারেনি।

জিডিতে চিত্তরঞ্জন পালের শারিরীক বর্ননা, চোখ কালোমনি, দাড়ি ছোট, চামড়ার রং শ্যামলা, মাপ ৫ ফিট ৪ ইঞ্চি, নাক লম্বা, কপাল চউড়া,গোঁপ ছোট, ঘাড় সরু,চুল ছোট/ খাটো, মুখের আকৃতি লম্বটে, কান গোলাকার, ওজন ৫৮ কেজি, রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ।

থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আফজাল হোসেন জানান, বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে মেয়ে রাজধানী ঢাকার বাড্ডা এলাকায় আছে। এটা জানতে পেরেছি। তবে ছেলে চিত্তরঞ্জন পালের কোন খোঁজ মিলছেনা। বিভিন্ন ভাবে ও প্রযুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে এঘটনার মুল রহস্য বের হয়ে আসবে।