ইসলাম ধর্মাবলম্বী নারীদের পর্দা করা নিয়ে বিরুপ মন্তব্যের পর আলেম সমাজ ও মুসল্লিদের বিক্ষোভের মুখে বৈঠক ডেকে ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন কুড়িগ্রামের কচাকাটা কলেজের সেই প্রভাষক লাকী খাতুন।
কচাকাটা কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম জুয়েল এবং সালিশে উপস্থিত মাওলানা মো. আখতারুজ্জামান জামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এ ঘটনার পর থেকেই শিক্ষিকার মোবাইল নম্বর বন্ধ রেখে আত্মগোপনে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে গত শুক্রবার লাকী খাতুন তার ফেসবুক পেইজে নারীদের পর্দা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে একটি পোস্ট দিলে ধর্মপ্রাণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি নিজের ভুল শিকার করে ক্ষমা চেয়ে আবার একটি পোস্ট দেন। শনিবার লাকী খাতুনের নাগেশ্বরীর সাপ খাওয়া বাড়ি ঘেরাও করে তৌহিদি জনতা।
পরে বিক্ষোভকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে স্বারকলিপি ও থানায় অবহিত করলে আত্মগোপন করেন শিক্ষিকা লাকী খাতুন। এ বিষয়ে আজকের কাগজ বিডিতে ভিডিও চিত্র সহ খবর প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে প্রসাশন। পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষিকার পরিবার স্থানীয় আলেম সমাজকে বাড়িতে সালিশ বসিয়ে বিষয়টি সমাধানের আহ্বান জানায়। রবিবার (৪ মে) রাতে ওই শিক্ষিকার বাড়িতে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে শিক্ষিকার পরিবারের সদস্যরাসহ বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক পরিচালনা করেন, হেফাজতে ইসলামের কুড়িগ্রাম জেলার আহ্বায়ক মুফতি শামসুদ্দিন কাশেমি।
সালিশে উপস্থিত মাওলানা মো. আখতারুজ্জামান জামাল জানান, ওই শিক্ষিকা পর্দা প্রথা নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট দেওয়ায় আলেম সমাজ ও মুসল্লিরা বিক্ষোভ করে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। পরে শিক্ষিকার পরিবার থেকে দুঃখপ্রকাশ করে সালিশ ডেকে সমাধানের আহ্বান জানানো হয়।
মাওলানা জামাল আরও বলেন, ‘রবিবার এশার নামাজের পর সালিশ বৈঠক বসে। এতে ওই শিক্ষিকা পর্দা নিয়ে তার পোস্টের জন্য ভুল স্বীকার করে মুসলিম সমাজের কাছে ক্ষমা চান। পরে সম্মিলিতভাবে তওবা পাঠ করেছি আমরা সবাই।
কচাকাটা কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম জুয়েল জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সালিশ আহ্বান করে মীমাংসা করা হয়েছে বলে জেনেছি। শিক্ষিকা তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। প্রভাষক হয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা বলেন, প্রতিবাদের মুখে শিক্ষিকা পোস্ট সরিয়ে বাড়িতে বৈঠক ডেকে ক্ষমা চেয়েছেন।