গাজীপুরের কালিয়াকৈরে স্বামীর বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার পর তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগে নিহতের স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় বুধবার সকালে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নিহত হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া দক্ষিণপাড়া সলুরপাড়া এলাকার শরীফ আহম্মেদের স্ত্রী সুনিয়া আক্তার (২০)।
এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের জেরে কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত আব্দুস সামাদ মিয়ার ছেলে শরীফের সঙ্গে ভোলার সদর উপজেলার রামদাসপুর কান্দি এলাকার মোশারফ মৃধার মেয়ে সুনিয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে সিয়াম হোসেন নামে তিন বছরের এক সন্তান রয়েছে।
কিন্তু বিভিন্ন সময় নেশাগ্রস্থ হয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন তার স্বামী শরীফ। এমন কি প্রায়ই তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্বহত্যার প্ররোচনা দিতেন তার স্বামী। এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় ভাবে শালিস দরবার হয়েছিল। গত সোমবার সকালে সুনিয়াকে মারধর করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্বহত্যার প্ররোচনা দেন তার স্বামী শরীফ। পরের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সুনিয়া খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করে উঠে তাদের সন্তান সিয়াম। পরে আশপাশের লোকজন গিয়ে ঘরের সাথির সঙ্গে ওড়না পেছানো অবস্থা থেকে তার লাশ নিচে নামান।
এ ঘটনার পর স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার পর তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগে তার স্বামীকে আটক করে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আটক করে পুলিশ। নিহতের স্বজনদের দাবী, শরীফ তার স্ত্রীকে হত্যার পর তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তার স্বামী শরীফ। এ ঘটনায় সুনিয়ার বাবা মোশারফ মৃধা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এব্যাপারে কালিয়াকৈর থানাধীন ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর বলা যাবে এটা আত্মহত্যা নাকি হত্যা?