নওগাঁর মান্দায় প্রতিবেশি ভাবির ঘরে পরকীয়া করতে গিয়ে রানা হামিদ (৩৮) নামের এক বিজিবি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। সোমবার পূর্বরাত সাড়ে ১২টার দিকে আটকের পর গণধোলাই দিয়ে জুতার মালা পরিয়ে বেঁধে রাখে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরাসহ স্থানীয়রা। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আটককৃত বিজিবি সদস্য রানা হামিদ উপজেলার কুসুম্বা ইউপির বড়পই পূর্বপাড়া গ্রামের মুক্তিযুদ্ধা আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি বিজিবির ল্যান্স কর্পোরাল পদে কর্মরত রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, শহিদুল ইসলাম কুসুম্বা ইউপির ৪ নং ওয়ার্ডের সভাপতি। গত রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুই সন্তানের জনক বিজিবি সদস্য রানা হামিদ স্বামী শহিদুল ইসলামের অগোচরে প্রতিবেশি ভাবি ও এক সন্তানের জননী রুবিনা বিবি নামে ওই নারীর ঘরে যায়। বিষয়টি ওই নারীর স্বামী জানতে পেরে ঘরের দরজা আটকিয়ে ডাক চিৎকার শুরু করে। এ সময় প্রতিবেশীরা গিয়ে তাকে হাতে-নাতে আটক করে। সে সময় ভুক্তভোগী ওই নারী সবার অগোচরে কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তারা আরও বলেন, রানা ছুটিতে আসলেই সবার অগোচরে গভীর রাতে এলাকার ওই ভাবির সাথে দেখা করতে যায়। এর আগেও ২০১৭ সালে ওই নারীর সাথে পরকীয়া করতে গিয়ে ধরা খেয়েছিল। এছাড়াও তিনি একাধিকবার এরকম ঘটনায় গণধোলাই খেয়েছেন। এবারে তাকে আটকের পর গণধোলাই দিয়ে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়।
এব্যাপারে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে শয়ন ঘরের উত্তর পার্শ্বের ঘরে অন্ধকার ঘরে রুবিনাকে দেখতে পেয়ে আমার সন্দেহ হয়। পরে ঘরের আলো জ্বালিয়ে দেখি রানা ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে। এ সময় তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে আমাকে জখম করে পালানোর চেষ্টা করে। তবে আমি আহত হলেও জাফটে ধরি। আমার চিৎসারে আমার ছেলে শাফিক ও আমার ছোট ভাই অহিদুল ইসলাম এসে তাকে আটক করে। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে পরে গ্রামবাসীরা এসে রানা হামিদকে গণধোলাই দিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান সঙ্গীয় সদস্যসহ ঘটনাস্থলে এসে জবাববন্দি শোনেন। তবে ও-ই নারী কৌশলে পালিয়ে যাওয়ায় বিধি সম্মতভাবে কোন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত বিজিবি সদস্য রানা হামিদ পরকীয়া সম্পর্কের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন এ ঘটনাটি সাজানো। তাঁর চাকুরির সমস্যা সৃষ্টির জন্যই এমন একটা বিষয় সামনে আনা হয়েছে।
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মুনসুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে রানা হামিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।