রাজশাহীর তানোরে সমতল ভুমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উপকারভোগীদের মাঝে রুগ্ন গরু বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।সরকার নির্ধারিত টেন্ডারের সিডিউল অনুযায়ী গরু না দিয়ে গরিবের হক মেরে বাণিজ্য করা হয়েছে।কেউ কেউ বলছে,এটা আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া লুটপাট প্রকল্প। আর এই প্রকল্প স্বৈরাচার সরকারের সময় থেকে চলমান রয়েছে। রুগ্ন গরু বিতরণ করে লুটপাট করা হচ্ছে নির্বিঘ্নে। সাবেক তথ্য উপদেষ্টা, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহবায়ক নাহিদ হোসেন বারবার বলছেন, শুধু শাসক পরিবর্তন হয়েছে, ব্যবস্থা আগের মতই রয়ে গেছে। যার জলন্ত প্রমাণ প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের এই লুটপাটের প্রকল্প।
স্থানীয়রা এবিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
জানা গেছে,সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার তানোর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতাল প্রাঙ্গনে প্রাণিসম্পদ দপ্তর সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৮০ জন উপকারভোগীর মাঝে জিনটেক এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহকৃত নিম্নমানের ও বেশকিছু রোগাক্রান্তসহ ৮০টি বকনা (বাছুর) গরু, ১০০ কেজি খাবার ও একটি করে ফ্লোর ম্যাট বিতরণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর মানুষ। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিনটেক এন্টারপ্রাইজ নামে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী দাস বাবুর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ সময় গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তার পাঠানো লোকজন দ্রুত কৌশলে সটকে পড়েন।
উপকারভোগীরা জানান, টেন্ডারের সিডিউল অনুযায়ী গরুর বয়স দেড় বছর এবং ওজন ১০০ কেজি থাকতে হবে।কিন্তু সরবরাহকৃত অধিকাংশ গরুর বয়স এক বছরেরও কম লামিস্কীন রোগাকান্ত এবং ওজন মাত্র ৫০ থেকে ৬০ কেজি।তবে গরু রুগ্ন ও নিন্মমানের হওয়ার বিষয়টির শিকার করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ওয়াজেদ আলী। উপকারভোগীরা জানান, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার নেপথ্যে মদদে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে রুগ্ন ও নিম্নমানের এসব গরু তড়িঘড়ি
বিতরণ করে গরিবের হক মেরে বানিজ্য করা হয়েছে। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে,
সরেজমিন তদন্ত করা হলে সত্যতা মিলবে। প্রকল্প টি স্বৈরাচার সরকারের সময় থেকে এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরে বহাল তবিয়তে দোসররা। যার কারনে এমন লুটপাটের প্রকল্প চলমান রাখা হয়েছে বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।
অবৈধ বাণিজ্য নির্বিঘ্ন করতে গণমাধ্যম কর্মীদেরও অবগত করেনি সংশ্লিষ্টরা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সচেতন মহলের।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা,ওয়াজেদ আলী বলেন,অভিযোগ পুরোটা সত্যি নয়।তিনি বলেন,তিনি যেসব গরু ওজন করে দিয়েছেন সেগুলোর ওজন ঠিক আছে,কিছু গরুর ওজন কম ও স্বাস্থ্য খারাপ ছিল এবং একটি গরুর সামান্য লামিস্কীন(বসন্ত) রোগ ছিল।তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান,বরাদ্দের পরিমান ইত্যাদি বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য জানাননি তিনি। একটি গরুর বিপরীতে কি পরিমান বরাদ্দ প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি জানান প্রধান কার্যালয় থেকে এসব জানতে হবে, আমি কিছুই জানিনা বলেও দাম্ভিকতা দেখান তিনি।
এই কর্মকর্তা বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় থেকে এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে রয়েছেন। যার কারনে তার কথা বার্তায় স্বৈরাচারী ভাব। এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিনটেক এন্টারপ্রাইজের দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।এদিকে গরু সরবরাহ কারী শাহিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, জিনটেক এর মালিক দাস বাবু তিনি ওমর ফারুক নামের এক ব্যক্তির কাছে থেকে গরু কিনেন এবং তারা সংশ্লিষ্ট অফিসে সরবরাহ করেন।