Dhaka ০৩:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে আমতলী পৌরসভার ময়লার বাগাড়

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে আমতলীর উতশিতলা নামক এলাকায় খোলা স্থানে পৌরসভার ময়লা ফেলা হচ্ছে। পঁচা দুর্গন্ধে এলাকা পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। সড়কের চলাচলকারী মানুষ নাক চেপে যেতে হচ্ছে। দ্রুত এ ময়লার বাগাড় সরিয়ে নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে ২৩ আগষ্ট আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৭ বছরে আমতলী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং ষ্টেশন নির্মাণ করতে পারেনি। ওই সময় থেকে পৌরসভা কর্র্তৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন স্থান ও নদীতে ময়লা ফেলে আসছে। এতে শহরের পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হয়। গত তিন মাস ধরে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলীর উতশিতলা নামক স্থানে ময়লা ফেলা শুরু করে। এতে ওই ময়লা ফেলার স্থানটি বাগাড়ে পরিনত হয়েছে। খোলা স্থানে ময়লা ফেলায় এলাকার পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। বাতাসের সঙ্গে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরেছে। মানুষ নাক চেয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ মহাসড়কে প্রতিদিন অন্তত কয়েক হাজার যানবাহনে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এছাড়া ওই বাগাড়ের চারিদিকে গ্রামাঞ্চল রয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা ও যানবাহনের চলাচলকারী মানুষ দুষিত পরিবেশে জীবন যাপন করছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন মহাসড়কের পাশে খোলা স্থানে ময়লা ফেলায় বসবাস করা খুবই কষ্টকর। এতে পরিবেশ দুষিত হয়ে নানাবিধ রোগ ছড়িয়ে পরছে। দ্রুত এ ময়লার বাগাড় সরিয়ে নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।

বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, সড়কের পাশে ময়লায় একাকার হয়ে আছে। মানুষ নাক চেপে চলাচল করছে। দুর্গন্ধে পরিবহন গাড়ীর জানালা ও দরজা বন্ধ রাখা হচ্ছে। গাড়ীর যাত্রীরা নাক চেপে চলাচল করছে। এছাড়াও পৌর শহরের ওয়াবদা এলাকা ও টিএনটি রোড়ে ময়লা ফেলা রাখা হয়েছে।

স্থানীয় লিটন গাজী ও রাসেল মৃধা বলেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মহাসড়কের পাশে ময়লার বাগাড় স্থাপন করায় আমরা খুবই কষ্টে আছি। ময়লার দুর্গন্ধে বাড়ীতে বসবাস করা খুবই কঠিন। দ্রুত এ ময়লার বাগাড় সরিয়ে নেয়ার দাবী জানান তারা।বাসযাত্রী জিয়া উদ্দিন জুয়েল বলেন, প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হয়েও আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনা নেই। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে এলাকার পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত সড়কের পাশ থেকে ময়লার বাগাড় সরিয়ে নেয়া প্রয়োজন।

আমতলী পৌরসভার বর্জ ব্যবস্থাপনা পরিদর্শক মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাকির মৃধা বলেন, ময়লার আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং ষ্টেশন না থাকায় ময়লা মহাসড়কের পাশে রাখা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন দুর্গন্ধ রোধে ওই ময়লায় ব্লিসিং পাউডার দেয়া হয়।

আমতলী পৌর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, ময়লা ফেললে দুর্গন্ধতো ছড়াবেই। ময়লা আগে নদীতে ময়লা ফেলা হতো। এখন মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ময়লার ফেলার ডাম্পিং ষ্টেশন নির্মাণ করতে হলে অন্তত ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার প্রয়োজন। ওই পরিমান টাকা পৌরসভায় বরাদ্দ নেই। ফলে ডাম্পিং ষ্টেশন করতে পারছি না। অর্থ সংঙ্কুলান হলে আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং ষ্টেশন করা হবে।

পরিবেশ কর্মী মোঃ হাইরাজ মাঝি বলেন, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে ময়লার বাগাড় এটা অত্যান্ত খারাপ। ওই সড়কে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহনে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। সকল মানুষকেই পঁচা দুর্গন্ধ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ওই বাগাড়ের পঁচা দুর্গন্ধ বাতাসের সঙ্গে মিশে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে মানুষের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দ্রুত ময়লার বাগাড় অপসারণের দাবী তার।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে বায়ু বাহিত রোগ জীবানু ছড়াতে পারে। তিনি আরো বলেন, ওই স্থানে মাছি বংশ বিস্তার করে । ফলে মানুষের শরীরের সংক্রামণ রোগ হতে পারে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, আগামীকাল পৌরসভায় সভার আয়োজন করা হয়েছে। ওই সভার আলোচনায় ময়লার বাগাড় নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

কোস্টগার্ড অস্ত্র ও গোলাবারুদ ও সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর এক সহযোগীকে আটক

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে আমতলী পৌরসভার ময়লার বাগাড়

Update Time : ০৫:৩৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে আমতলীর উতশিতলা নামক এলাকায় খোলা স্থানে পৌরসভার ময়লা ফেলা হচ্ছে। পঁচা দুর্গন্ধে এলাকা পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। সড়কের চলাচলকারী মানুষ নাক চেপে যেতে হচ্ছে। দ্রুত এ ময়লার বাগাড় সরিয়ে নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে ২৩ আগষ্ট আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৭ বছরে আমতলী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং ষ্টেশন নির্মাণ করতে পারেনি। ওই সময় থেকে পৌরসভা কর্র্তৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন স্থান ও নদীতে ময়লা ফেলে আসছে। এতে শহরের পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হয়। গত তিন মাস ধরে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলীর উতশিতলা নামক স্থানে ময়লা ফেলা শুরু করে। এতে ওই ময়লা ফেলার স্থানটি বাগাড়ে পরিনত হয়েছে। খোলা স্থানে ময়লা ফেলায় এলাকার পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। বাতাসের সঙ্গে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরেছে। মানুষ নাক চেয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ মহাসড়কে প্রতিদিন অন্তত কয়েক হাজার যানবাহনে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এছাড়া ওই বাগাড়ের চারিদিকে গ্রামাঞ্চল রয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা ও যানবাহনের চলাচলকারী মানুষ দুষিত পরিবেশে জীবন যাপন করছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন মহাসড়কের পাশে খোলা স্থানে ময়লা ফেলায় বসবাস করা খুবই কষ্টকর। এতে পরিবেশ দুষিত হয়ে নানাবিধ রোগ ছড়িয়ে পরছে। দ্রুত এ ময়লার বাগাড় সরিয়ে নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।

বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, সড়কের পাশে ময়লায় একাকার হয়ে আছে। মানুষ নাক চেপে চলাচল করছে। দুর্গন্ধে পরিবহন গাড়ীর জানালা ও দরজা বন্ধ রাখা হচ্ছে। গাড়ীর যাত্রীরা নাক চেপে চলাচল করছে। এছাড়াও পৌর শহরের ওয়াবদা এলাকা ও টিএনটি রোড়ে ময়লা ফেলা রাখা হয়েছে।

স্থানীয় লিটন গাজী ও রাসেল মৃধা বলেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মহাসড়কের পাশে ময়লার বাগাড় স্থাপন করায় আমরা খুবই কষ্টে আছি। ময়লার দুর্গন্ধে বাড়ীতে বসবাস করা খুবই কঠিন। দ্রুত এ ময়লার বাগাড় সরিয়ে নেয়ার দাবী জানান তারা।বাসযাত্রী জিয়া উদ্দিন জুয়েল বলেন, প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হয়েও আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনা নেই। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে এলাকার পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত সড়কের পাশ থেকে ময়লার বাগাড় সরিয়ে নেয়া প্রয়োজন।

আমতলী পৌরসভার বর্জ ব্যবস্থাপনা পরিদর্শক মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাকির মৃধা বলেন, ময়লার আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং ষ্টেশন না থাকায় ময়লা মহাসড়কের পাশে রাখা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন দুর্গন্ধ রোধে ওই ময়লায় ব্লিসিং পাউডার দেয়া হয়।

আমতলী পৌর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, ময়লা ফেললে দুর্গন্ধতো ছড়াবেই। ময়লা আগে নদীতে ময়লা ফেলা হতো। এখন মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ময়লার ফেলার ডাম্পিং ষ্টেশন নির্মাণ করতে হলে অন্তত ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার প্রয়োজন। ওই পরিমান টাকা পৌরসভায় বরাদ্দ নেই। ফলে ডাম্পিং ষ্টেশন করতে পারছি না। অর্থ সংঙ্কুলান হলে আধুনিক বর্জ ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং ষ্টেশন করা হবে।

পরিবেশ কর্মী মোঃ হাইরাজ মাঝি বলেন, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে ময়লার বাগাড় এটা অত্যান্ত খারাপ। ওই সড়কে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহনে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। সকল মানুষকেই পঁচা দুর্গন্ধ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ওই বাগাড়ের পঁচা দুর্গন্ধ বাতাসের সঙ্গে মিশে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে মানুষের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দ্রুত ময়লার বাগাড় অপসারণের দাবী তার।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে বায়ু বাহিত রোগ জীবানু ছড়াতে পারে। তিনি আরো বলেন, ওই স্থানে মাছি বংশ বিস্তার করে । ফলে মানুষের শরীরের সংক্রামণ রোগ হতে পারে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, আগামীকাল পৌরসভায় সভার আয়োজন করা হয়েছে। ওই সভার আলোচনায় ময়লার বাগাড় নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।