ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করা এবং কমিটিতে অর্থের বিনিময়ে ফ্যাসিষ্ট ও আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির লোকজনকে অন্তর্ভূক্ত করার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষনা দেন বিএনপি’র নব গঠিত আহবায়ক কমিটির ৪ নেতা।
শুক্রবার (১৬ মে) উলিপুর হাজ্বী সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় তাদের একটি অস্থায়ী
কর্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান পদত্যাগী ও নব গঠিত উপজেলা
কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আমিনুল ইসলাম ফুলু। এ সময় সাথে ছিলেন, পৌর কমিটির
যুগ্ম আহবায়ক মোতলেবুর রহমান মন্ধসঢ়;জু, সদস্য আমিনুল ইসলাম। এ ছাড়াও পদ বঞ্চিত আবু জাফর সোহেল রানা ও ফিরোজ কবির কাজল উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগে বলা হয়, উপজেলা বিএনপি’র কমিটিতে তারিক আবু আলা চৌধুরীকে
আহবায়ক করা হয়েছে। তিনি বিগত দিনে রাজনৈতিক কোনো কর্মকান্ডে সক্রিয়
ছিলেন না। বিগত দিনে তারিক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পৌরসভার মেয়র
নির্বাচিত হলেও গাঁ-বাচার স্বার্থে আওয়ামী লীগের লোককে প্যানেল চেয়ারম্যান
নির্বাচিত করে তার উপর সমস্ত দায়িত্ব দিয়ে আ’লীগ নেতাদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
এছাড়া বর্তমান আহবায়ক মেয়র থাকাকালীন জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে ভোট প্রদানসহ তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছেন বলে লিখিত বক্তব্যে জানা যায়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান উপজেলা বিএনপির ১৮ নং সদস্য সহিদুল ইসলাম জাতীয়
পার্টির ও ফ্যাসিষ্ট মামলার আসামী। এছাড়া ১৬ নং সদস্য সাইফুল ইসলাম বাদল আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন সময় ভোট প্রার্থনা করেছেন। পৌর বিএনপির ১৭ নং সদস্য রফিকুল ইসলাম বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা
মার্কার প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেছিলেন। এভাবে অর্থের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদী ও আওয়ামীলীগ সমর্থিত এবং জাপার কর্মীদের পদ পদবী বন্টন করা হয়েছে বলে দাবি করেন নেতারা। অনতিবিলম্বে সদ্য ঘোষিত উপজেলা ও পৌর কমিটি বাতিল করে
পুর্ণরায় ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে কমিটি প্রদানের জন্য বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ মহাসচিবের দৃষ্টি কামনা করেন তারা।
এ বিষয়ে সদ্য ঘোষিত উপজেলা বিএনপির আহবায়ক তারিক আবু আলা চৌধুরী বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। বিগত দিনে আমি পৌর বিএনপির
সভাপতি, পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পদে ছিলাম। উলিপুরের মানুষ জানে, দীর্ঘদিন ধরে কারা বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। জেলা কমিটি ত্যাগীদের মূল্যায়ন করেছেন বলেও জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ জানান,
বিগত দিনে বিএনপি’র পদে থেকে অত্যাচারিত হয়ে আন্দোলন সংগ্রামে যারা
নেতৃত্বে দিয়েছেন বর্তমান কমিটিতে তাদেরকেই মূল্যায়ন করা হয়েছে। যারা
নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারেনি তারাই বির্তক সৃষ্টি করছে। কুড়িগ্রাম জেলা
বিএনপি’র আহবায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, এখনো পদত্যাগের কোন পত্র হাতে পাইনি। যারা যোগ্য তাদেরকেই নেতৃত্বে আনা হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে
কমিটি দেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা বলেছে তাদেরকেই বিষয়টি
প্রমাণ করতে হবে। তিনি বলেন, উলিপুরে বিবদমান দুইটি গ্রুপ রয়েছে। মান অভিমান থাকবেই। ৪ জনের পদত্যাগ পত্র দেয়া হলেও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না যুগ্ম
আহবায়ক নুরেচ্ছাবা স্টার।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৪ মে) উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার প্রায় ৩
মাস পর উলিপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে কুড়িগ্রাম
জেলা বিএনপি’র কমিটি। উপজেলা কমিটিতে মোঃ তারিক আবু আলা চৌধুরীকে
আহবায়ক ও মোঃ হায়দার আলী মিয়াকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট এবং উলিপুর পৌর কমিটিতে নুর মোহাম্মদকে আহবায়ক ও সহঃ অধ্যাপক সোলায়মান আলী সরকারকে সদস্য সচিব করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট পৌর আংশিক কমিটি ঘোষণা করে জেলা কমিটি।