শ্যামনগর উপজেলার হাজিপুর গ্রামে পিতার কাছ থেকে মোবাইল কেনার টাকা এনে দিতে না পারায় স্বামীর মারপিটে প্রাণ গেল আয়েশা খাতুন (২০) নামের গৃহবধূর। এ ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাত ২ টার দিকে উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের আড়ংগাছা গ্রামে।
নিহত গৃহবধূ শ্যামনগর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের আক্তার মল্লিকের মেয়ে ও কালিগঞ্জ উপজেলারর আড়ংগাছা গ্রামের হাফিজুর রহমানের স্ত্রী।এ ঘটনায় পুলিশ ঘাতক স্বামী হাফিজুর রহমান (২৫) ও তার সহোদর হাবিবুর রহমানকে (৩২) আটক করেছে।
নিহতের মা আমেনা খাতুন (৩৯) জানান, প্রায় ৩ বছর পূর্বে আড়ংগাছা গ্রামের মহব্বত আলীর ছেলে হাফিজুর রহমানের সাথে তার মেয়ে আয়েশা খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে আজমির হোসেন নামে ১৪ মাস বয়সের একটি ছেলে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার মেয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় জামাই মোবাইল কেনার জন্য আমাদের নিকট থেকে ৪ হাজার টাকা এনে দিতে বলে। তাৎক্ষণিক আমার মেয়ে আমার নিকট মোবাইল ফোনে টাকার কথা বললে আমি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করি। টাকা না দেয়ায় জামাই হাফিজুর রহমান আমার মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও খুন জখমের হুমকি প্রদান করতে থাকে। একপর্যায়ে রাত সোয়া ২টার দিকে জামাই মোবাইল মারফতে আমাকে জানায় আমার মেয়ে আয়েশা খাতুন শয়নকক্ষের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টা জানার পর ভোর ৫টার দিকে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যেয়ে শয়নকক্ষে খাটের উপর মৃত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পাই। মেয়ের শরীরের বিভিন্নস্থানে রক্তাক্ত ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়।
স্থানীয়দের মাধ্যমে থানায় খবর দিলে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে উপ-পরিদর্শক রাজিব সরদারের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামাই হাফিজুর রহমান ও ভাই হাবিবুর রহমানকে আটক করে থানায় নিয় যান।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী হাফিজুর রহমানের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩ থেকে ৪ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন বলে জানান আমেনা খাতুন।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূর স্বামী ও ভাসুরকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।