Dhaka ০৯:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবৈধ হাট-বাজার উচ্ছেদে চোর-পুলিশ খেলা,ভোগান্তির আশঙ্কা

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর চলছে অবৈধ হাট-বাজার ব্যবসা। উচ্ছেদ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আবার অবৈধ হাটবাজার বসাচ্ছেন সিন্ডিকেট চক্র। উচ্ছেদে এমন চোর-পুলিশ খেলায় আসন্ন ঈদে মহাসড়কে যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন পরিবহন শ্রমিক, যাত্রী ও স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী, পরিবহন শ্রমিক-যাত্রী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোর মধ্যে একটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। এখান দিয়ে উত্তরবঙ্গের ১৭টি জেলার যানবাহন চলাচল করে।

অথচ কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক, সফিপুর, পল্লীবিদ্যুৎ, চন্দ্রা ত্রিমোড়, বোর্ডঘরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ওভারপাসের নিচে ও ফুটপাতসহ এ মহাসড়কের ওপর ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট অবৈধ হাট-বাজার বসিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ অবস্থা পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় মহাসড়কের ওপর হাট-বাজার। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফ্যাসিবাদী সরকার আমলে আওয়ামীলীগ ও বর্তমান সময়ে বিএনপি ও অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ রমরমা ব্যবসা পরিচালিত করে। এসব হাট-বাজারের শত শত দোকান থেকে প্রতিদিন দোকান প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, হাইওয়ে পুলিশসহ সড়ক সংশ্লিষ্ট কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করেই সিন্ডিকেট চক্র এ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।

আর সেজন্য মহাসড়ক ঘিরে প্রকাশ্যে এভাবে অন্যায় অপরাধ সংঘটিত হলেও সংশ্লিষ্টরা যেন নীরব দর্শক। এবার ঈদযাত্রা স্বস্তিকর করতে বিভিন্ন সময় প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে এসব অবৈধ হাটবাজার উচ্ছেদ অভিযান চালায় হাইওয়ে পুলিশ। কিন্তু অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করার কিছুক্ষণ পরই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আবার অবৈধ হাটবাজার বসাচ্ছেন সিন্ডিকেট চক্র। তবে উচ্ছেদে এমন চোর-পুলিশ খেলায় আসন্ন ঈদে মহাসড়কে যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন পরিবহন শ্রমিক, যাত্রী ও স্থানীয়রা।

যদিও উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এখন এ মহাসড়কে চলাচল অনেকটাই স্বস্তিকর। কিন্তু বছরে দুটি ঈদ, দুর্গাপূজাসহ বড় ছুটির সময়ে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়ে এখনও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। শিল্প-কারখানাগুলো একসঙ্গে ছুটি হলে এ মহাসড়কে চাপ বৃদ্ধি পেয়ে যানজট আরও তীব্র হয়ে উঠে। এসব হাটবাজার উচ্ছেদ করা না হলে আসন্ন ঈদযাত্রা স্বস্তিকর করতে প্রশাসনের নেয়া সব প্রস্তুতি নিষ্ফল হওয়ার আশঙ্কা করছেন সড়ক সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা, সিএনজি ও মাহিন্দ্রসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন। মহাসড়কের ওপর যততত্র রয়েছে এসব যানবাহনের অবৈধ স্টেশন।

ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও। এছাড়াও অবৈধ যানবাহনের স্টেশন, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, যাত্রী উঠানামা করানো যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ। ঈদযাত্রা শুরুর আগ মুহূর্তেও এসব অনিয়ম চলমান থাকায় এবার ঈদযাত্রায় যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এব্যাপারে নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন জানান, বিভিন্ন সময় মহাসড়কের ওপর থাকা অবৈধ হাটবাজার উচ্ছেদ করা হচ্ছে। শুনেছি, আবারও হাটবাজার বসেছে, সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

খুলনায় জলবায়ু ঝুঁকিকে মাথায় রেখে নগর ব্যবস্থাপনা সাজানো হবে:পরিকল্পনায় বুয়েট

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবৈধ হাট-বাজার উচ্ছেদে চোর-পুলিশ খেলা,ভোগান্তির আশঙ্কা

Update Time : ০৫:২০:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর চলছে অবৈধ হাট-বাজার ব্যবসা। উচ্ছেদ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আবার অবৈধ হাটবাজার বসাচ্ছেন সিন্ডিকেট চক্র। উচ্ছেদে এমন চোর-পুলিশ খেলায় আসন্ন ঈদে মহাসড়কে যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন পরিবহন শ্রমিক, যাত্রী ও স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী, পরিবহন শ্রমিক-যাত্রী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোর মধ্যে একটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। এখান দিয়ে উত্তরবঙ্গের ১৭টি জেলার যানবাহন চলাচল করে।

অথচ কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক, সফিপুর, পল্লীবিদ্যুৎ, চন্দ্রা ত্রিমোড়, বোর্ডঘরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ওভারপাসের নিচে ও ফুটপাতসহ এ মহাসড়কের ওপর ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট অবৈধ হাট-বাজার বসিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ অবস্থা পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় মহাসড়কের ওপর হাট-বাজার। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফ্যাসিবাদী সরকার আমলে আওয়ামীলীগ ও বর্তমান সময়ে বিএনপি ও অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ রমরমা ব্যবসা পরিচালিত করে। এসব হাট-বাজারের শত শত দোকান থেকে প্রতিদিন দোকান প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, হাইওয়ে পুলিশসহ সড়ক সংশ্লিষ্ট কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করেই সিন্ডিকেট চক্র এ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।

আর সেজন্য মহাসড়ক ঘিরে প্রকাশ্যে এভাবে অন্যায় অপরাধ সংঘটিত হলেও সংশ্লিষ্টরা যেন নীরব দর্শক। এবার ঈদযাত্রা স্বস্তিকর করতে বিভিন্ন সময় প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে এসব অবৈধ হাটবাজার উচ্ছেদ অভিযান চালায় হাইওয়ে পুলিশ। কিন্তু অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করার কিছুক্ষণ পরই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আবার অবৈধ হাটবাজার বসাচ্ছেন সিন্ডিকেট চক্র। তবে উচ্ছেদে এমন চোর-পুলিশ খেলায় আসন্ন ঈদে মহাসড়কে যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন পরিবহন শ্রমিক, যাত্রী ও স্থানীয়রা।

যদিও উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এখন এ মহাসড়কে চলাচল অনেকটাই স্বস্তিকর। কিন্তু বছরে দুটি ঈদ, দুর্গাপূজাসহ বড় ছুটির সময়ে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়ে এখনও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। শিল্প-কারখানাগুলো একসঙ্গে ছুটি হলে এ মহাসড়কে চাপ বৃদ্ধি পেয়ে যানজট আরও তীব্র হয়ে উঠে। এসব হাটবাজার উচ্ছেদ করা না হলে আসন্ন ঈদযাত্রা স্বস্তিকর করতে প্রশাসনের নেয়া সব প্রস্তুতি নিষ্ফল হওয়ার আশঙ্কা করছেন সড়ক সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা, সিএনজি ও মাহিন্দ্রসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন। মহাসড়কের ওপর যততত্র রয়েছে এসব যানবাহনের অবৈধ স্টেশন।

ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও। এছাড়াও অবৈধ যানবাহনের স্টেশন, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, যাত্রী উঠানামা করানো যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ। ঈদযাত্রা শুরুর আগ মুহূর্তেও এসব অনিয়ম চলমান থাকায় এবার ঈদযাত্রায় যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এব্যাপারে নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন জানান, বিভিন্ন সময় মহাসড়কের ওপর থাকা অবৈধ হাটবাজার উচ্ছেদ করা হচ্ছে। শুনেছি, আবারও হাটবাজার বসেছে, সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।