Dhaka ১১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনার যুব মহিলা লীগের নেত্রী নাসরিন ইসলাম তন্দ্রা কে আদালত কারাগারে প্রেরণ করেছেন

খুলনার যুব মহিলা লীগের নেত্রী নাসরিন ইসলাম তন্দ্রা ওরফে নাসরিন পারভেজ তন্দ্রাকে খুলনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ২৭ মে দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গতকাল সোমবার কেএমপি গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করে ঢাকা বিমানবন্দর থানা পুলিশ। পরে তাঁকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তন্দ্রা সবশেষ খুলনা মহানগর যুব মহিলা লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক এর দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে তিনি একই সংগঠনের সোনাডাঙ্গা থানা শাখার প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে পুলিশ আজ আদালতে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তাতে তন্দ্রাকে সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদিকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
খুলনা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা সূত্রে জানা গেছে, সোমবার তন্দ্রা মালয়েশিয়া থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ২৮ মে চট্টগ্রাম থেকে তন্দ্রার ইতালির ভিসা সংগ্রহ করার কথা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেএমপির গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি ঢাকার বিমানবন্দর থানাকে অবহিত করলে পুলিশ তাঁকে আটক করে।
কেএমপির গোয়েন্দা শাখার অফিসাস ইনচার্জ তৈয়মুর ইসলাম বলেন, তন্দ্রা খুলনা থানার একটি চাঁদাবাজি, বোমা ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি মামলার আসামি। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে ঢাকা থেকে খুলনার অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম এম আনিসুজ্জামানের আদালতে হাজির করে জেল হাজতে পাঠানোর আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, গত বছর ১৬ জানুয়ারি বিকালে আসামিরা নগরীর রয়েল মোড়স্থ ‘ফ্যাশন জোন বাই লিন্ডা’ প্রতিষ্ঠানে ৫ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে। এসময়ে ওই প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও সামনে ককটেল ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়। এঘটনায় চলতি বছরের ১৮ মার্চ ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, তন্দ্রার রূপ লাবণ্যের কাছে খুলনার শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতারা ধরাশয় ছিলেন। যে কারণে তন্দ্রা অল্পদিনেই খুলনার যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী হওয়ার চেষ্টা চালায়। যদিও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। তন্দ্রার এই রঙিন জীবন-কাহিনী অনেকের জানা থাকলেও সে সময় ভয়ে মুখ খুলেনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ।
সূত্র জানিয়েছেন, এক সময়ের এনজিও কর্মী ছিলেন তন্দ্রা। পতিত সরকারের আমলে নানা কৌশলে কোটি কোটি টাকা মালিক হয়েছেন। নাসরিন পারভেজ তার নতুন পাপিয়া হিসেবে পরিচিত ছিল খুলনায়। খুলনা, গোপালগঞ্জ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে অনেকে কিনেছেন জমি। নগরীর বয়রাতে নির্মাণ করেছেন চোখ ধাঁধানো আলিশান বাড়ি। ডুপ্লেক্স বাড়ির আন্তঃসজ্জাই মনে করিয়ে দিবে তার অর্থের উৎস! এছাড়া রায়ের মহলে কোটি টাকা মূল্যের বেশ কয়েকটি প্লট রয়েছে। রয়েছে তিনটি দামী ব্রান্ডের গাড়ি। তবে, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে একটি গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। একজন এনজিও কর্মী থেকে কীভাবে কোটি টাকার মালিক বনেছেন তা নিয়ে জন্ম দিচ্ছে নানা প্রশ্ন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

তানোরে উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প পরিচিতি সভা

খুলনার যুব মহিলা লীগের নেত্রী নাসরিন ইসলাম তন্দ্রা কে আদালত কারাগারে প্রেরণ করেছেন

Update Time : ০৬:৫৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
খুলনার যুব মহিলা লীগের নেত্রী নাসরিন ইসলাম তন্দ্রা ওরফে নাসরিন পারভেজ তন্দ্রাকে খুলনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ২৭ মে দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গতকাল সোমবার কেএমপি গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করে ঢাকা বিমানবন্দর থানা পুলিশ। পরে তাঁকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তন্দ্রা সবশেষ খুলনা মহানগর যুব মহিলা লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক এর দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে তিনি একই সংগঠনের সোনাডাঙ্গা থানা শাখার প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে পুলিশ আজ আদালতে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তাতে তন্দ্রাকে সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদিকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
খুলনা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা সূত্রে জানা গেছে, সোমবার তন্দ্রা মালয়েশিয়া থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ২৮ মে চট্টগ্রাম থেকে তন্দ্রার ইতালির ভিসা সংগ্রহ করার কথা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেএমপির গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি ঢাকার বিমানবন্দর থানাকে অবহিত করলে পুলিশ তাঁকে আটক করে।
কেএমপির গোয়েন্দা শাখার অফিসাস ইনচার্জ তৈয়মুর ইসলাম বলেন, তন্দ্রা খুলনা থানার একটি চাঁদাবাজি, বোমা ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি মামলার আসামি। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে ঢাকা থেকে খুলনার অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম এম আনিসুজ্জামানের আদালতে হাজির করে জেল হাজতে পাঠানোর আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, গত বছর ১৬ জানুয়ারি বিকালে আসামিরা নগরীর রয়েল মোড়স্থ ‘ফ্যাশন জোন বাই লিন্ডা’ প্রতিষ্ঠানে ৫ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে। এসময়ে ওই প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও সামনে ককটেল ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়। এঘটনায় চলতি বছরের ১৮ মার্চ ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, তন্দ্রার রূপ লাবণ্যের কাছে খুলনার শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতারা ধরাশয় ছিলেন। যে কারণে তন্দ্রা অল্পদিনেই খুলনার যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী হওয়ার চেষ্টা চালায়। যদিও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। তন্দ্রার এই রঙিন জীবন-কাহিনী অনেকের জানা থাকলেও সে সময় ভয়ে মুখ খুলেনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ।
সূত্র জানিয়েছেন, এক সময়ের এনজিও কর্মী ছিলেন তন্দ্রা। পতিত সরকারের আমলে নানা কৌশলে কোটি কোটি টাকা মালিক হয়েছেন। নাসরিন পারভেজ তার নতুন পাপিয়া হিসেবে পরিচিত ছিল খুলনায়। খুলনা, গোপালগঞ্জ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে অনেকে কিনেছেন জমি। নগরীর বয়রাতে নির্মাণ করেছেন চোখ ধাঁধানো আলিশান বাড়ি। ডুপ্লেক্স বাড়ির আন্তঃসজ্জাই মনে করিয়ে দিবে তার অর্থের উৎস! এছাড়া রায়ের মহলে কোটি টাকা মূল্যের বেশ কয়েকটি প্লট রয়েছে। রয়েছে তিনটি দামী ব্রান্ডের গাড়ি। তবে, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে একটি গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। একজন এনজিও কর্মী থেকে কীভাবে কোটি টাকার মালিক বনেছেন তা নিয়ে জন্ম দিচ্ছে নানা প্রশ্ন।