Dhaka ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনার তেরখাদার মোকামপুর খেয়াঘাটে টোল আদায় নিয়ে নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে

খুলনার তেরখাদার মধুপুর ইউনিয়নের মোকামপুর খেয়াঘাটে অনিয়ম.অব্যবস্থাপনাসহ নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে। ঘাট পরিচালনায় সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং খেয়াঘাটকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর পক্ষে মোঃ মুঞ্জুর আলী খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, তিনি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে মোকামপুর খেয়াঘাটটি মাঝি হিসেবে পরিচালনা করছিলেন। তবে গত দুই বছর ধরে গালিভার স্বামারী ও হুমায়ুন কবির মোল্যা নামের দু’জন ব্যক্তি ডাকের মাধ্যমে ঘাট পরিচালনা করছেন। বর্তমানে ঘাটটি সরকারি খাস হিসাবে ব্যবহৃত হলেও পেশিশক্তির মাধ্যমে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়.এ অবস্থার ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।স্থানীয় বাসিন্দা ওসমান গনি মুন্সি.মোঃ হানিফ ফকির ও মাহফুজ সানা অভিযোগ করেন.ঘাটে খাস কালেকশনের নামে চলছে প্রকাশ্য লুটপাট। সরকারি কোষাগারে নামমাত্র অর্থ জমা দিয়ে বাকি টাকা সিন্ডিকেট সদস্যরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা তার পছন্দের লোকজনকে ঘাটের খাস আদায়ের দায়িত্ব দিয়েছেন, যা সরাসরি সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী।
অভিযোগকারী মুঞ্জুর আলীর মতে, ঘাটে আদায়কৃত খাস রাজস্ব কোথায় যায় তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি চলছে গোপনে.ফলে সরকারের প্রকৃত রাজস্ব আদায় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়.মোকামপুর খেয়াঘাটটি গত ২০২৩ সালে ৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ২০২৪ সালে ১১ লাখ ইজারা হয়েছিল। চলতি বছরে ৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ডাক হয়, তবে ইজারা কার্যকর হয়নি। এরপরও বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা শেখ মোঃ অহিদুল ইসলাম খাস আদায়ের জন্য অফিস সহকারী নাজমুল হাসান ও স্থানীয় মাফিজুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। এ নিয়ে এলাকা জুড়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। ঘাট থেকে গত মাসে ৪০ হাজার টাকা খাস আদায় হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে.ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে ঘাট থেকে সরকারের রাজস্ব খাতের টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে, ফলে রাজস্ব খাতে বড় অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বারাসাত ইউনিয়নের ভূমি সহকারি কর্মকর্তা শেখ মোঃ অহিদুল ইসলাম বলেন, ‌‘ঘাটটি নিয়ে আমরা অনেক বিপদের মধ্যে আছি। ইজারা না হলেও আমার দায়িত্ব খাস আদায় করা। আমি সবসময় উপস্থিত থাকতে পারি না, নিয়ম মেনেই অফিস সহকারী ও একজন স্থানীয় ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আঁখি শেখ বলেন.সরকারি নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের সুযোগ নেই। অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

কুড়িগ্রামের রৌমারী দুর্ধর্ষ ডাকাতি, পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

খুলনার তেরখাদার মোকামপুর খেয়াঘাটে টোল আদায় নিয়ে নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে

Update Time : ০৯:৪০:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
খুলনার তেরখাদার মধুপুর ইউনিয়নের মোকামপুর খেয়াঘাটে অনিয়ম.অব্যবস্থাপনাসহ নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে। ঘাট পরিচালনায় সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং খেয়াঘাটকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর পক্ষে মোঃ মুঞ্জুর আলী খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, তিনি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে মোকামপুর খেয়াঘাটটি মাঝি হিসেবে পরিচালনা করছিলেন। তবে গত দুই বছর ধরে গালিভার স্বামারী ও হুমায়ুন কবির মোল্যা নামের দু’জন ব্যক্তি ডাকের মাধ্যমে ঘাট পরিচালনা করছেন। বর্তমানে ঘাটটি সরকারি খাস হিসাবে ব্যবহৃত হলেও পেশিশক্তির মাধ্যমে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়.এ অবস্থার ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।স্থানীয় বাসিন্দা ওসমান গনি মুন্সি.মোঃ হানিফ ফকির ও মাহফুজ সানা অভিযোগ করেন.ঘাটে খাস কালেকশনের নামে চলছে প্রকাশ্য লুটপাট। সরকারি কোষাগারে নামমাত্র অর্থ জমা দিয়ে বাকি টাকা সিন্ডিকেট সদস্যরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা তার পছন্দের লোকজনকে ঘাটের খাস আদায়ের দায়িত্ব দিয়েছেন, যা সরাসরি সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী।
অভিযোগকারী মুঞ্জুর আলীর মতে, ঘাটে আদায়কৃত খাস রাজস্ব কোথায় যায় তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি চলছে গোপনে.ফলে সরকারের প্রকৃত রাজস্ব আদায় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়.মোকামপুর খেয়াঘাটটি গত ২০২৩ সালে ৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ২০২৪ সালে ১১ লাখ ইজারা হয়েছিল। চলতি বছরে ৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ডাক হয়, তবে ইজারা কার্যকর হয়নি। এরপরও বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা শেখ মোঃ অহিদুল ইসলাম খাস আদায়ের জন্য অফিস সহকারী নাজমুল হাসান ও স্থানীয় মাফিজুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। এ নিয়ে এলাকা জুড়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। ঘাট থেকে গত মাসে ৪০ হাজার টাকা খাস আদায় হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে.ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে ঘাট থেকে সরকারের রাজস্ব খাতের টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে, ফলে রাজস্ব খাতে বড় অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বারাসাত ইউনিয়নের ভূমি সহকারি কর্মকর্তা শেখ মোঃ অহিদুল ইসলাম বলেন, ‌‘ঘাটটি নিয়ে আমরা অনেক বিপদের মধ্যে আছি। ইজারা না হলেও আমার দায়িত্ব খাস আদায় করা। আমি সবসময় উপস্থিত থাকতে পারি না, নিয়ম মেনেই অফিস সহকারী ও একজন স্থানীয় ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আঁখি শেখ বলেন.সরকারি নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের সুযোগ নেই। অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।