স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই বিদ্যুৎ, পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে জেনারেটর ও আইপিএস ব্যবস্থা। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারনে হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডের রোগীরা। রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে এসব চিত্র।
শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যার পর উপজেলা স্বাস্খ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চালু নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর। চার্জ না থাকায় আইপিএস বন্ধ রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে লোডশেডিং এর তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। দিনে লোডশেডিং হলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের কিছুটা কষ্ট হলেও রাতে তা বেড়ে যায় কয়েকগুণে। এমনকি রাতে লোডশেডিং হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সৃষ্টি হয় ভুতুরে পরিবেশের। বিদ্যুৎ চলে গেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে লাইট জ্বালানোর কোনো ব্যবস্থা নেই।
ফলে রোগীর স্বজনদের মোবাইল ফোনের আলোতে চলাফেরা করতে হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। বর্তমানে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগে আক্রাান্ত সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। প্রচন্ড গরমে আরও বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন তারা। এছাড়া রয়েছে মশার উপদ্রব। ঘণ্টাখানেক থেকে বিদ্যুৎ নেই।
পুরো হাসপাতাল অন্ধকারাচ্ছন্ন। একরকম শুনশান পরিবেশ। স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে ওয়ার্ডগুলোতে ও জরুরি বিভাগে আইপিএস অকেজো থাকায় সেখানেও আলো জ্বলছে না। জরুরি বিভাগের সামনে থেকে কয়েক হাত দূরে অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। রোগীর স্বজনরা মোবাইলের লাইট ধরে চলাফেরা করছেন। জরুরী বিভাগ থেকে সামনে এগিয়ে দ্বিতীয় তলায় শিশু, নারী ও পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অন্ধকারে রোগী ও স্বজনরা। রোগীর সাথে আসা স্বজনদের কেউ মোবাইলের আলো অথবা চার্জার লাইট জালিয়ে রেখেছেন। ফ্যান না চলায় তীব্র গরমে রোগীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন।
রোগীর স্বজনরা আবার হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন। পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন এক ভুতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জেনারেটর থাকলেও তা নষ্ট দেখানো হয়। দায়িত্বরতরা বলছেন জেনারেটর চালানোর জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ না থাকায় প্রায় দুই বছর থেকে বন্ধ রয়েছে জেনারেটর।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নিতে আসা আশরাফুল ইসলাম নামের একজন বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে হাসপাতাল অন্ধকার হয়ে যায়। মোবাইলের লাইট জালিয়ে রাখতে হয়। ফ্যান চলে না, হাতপাখা দিয়ে বাতাস নিতে হয়। হাসপাতালের এমন খারাপ অবস্থা মানা যায় না।
রোগীর সাথে থাকা স্বজন মোছা. হামিদা বেওয়া বলেন, হাসপাতালে কারেন নাই, সোলার নাই, অন্ধকারে রোগীকে ঔষুধ খাওয়াতে পারি না। তাছাড়া অন্ধকারে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে। আইপিএস এর চার্জ নেই। তাছাড়া জেনারেটর অনেকদিন থেকে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এজন্য অন্ধকার হয়েছে। দ্রুত এগুলি সমস্যা সমাধান করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল কুমার হালদার জানান, বিদ্যুৎ না থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থা চালু রাখা জরুরী। রোগীরা কষ্ট পাবে এটা কাম্য নয়। আমি এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।