Dhaka ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমতলীর বাজারে গরু বেশী, ক্রেতা কম। বড় গরুর ক্রেতা নেই

পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র তিন দিন বাকী। আমতলীর ৮ টি বাজারে গরু বেশী কিন্তু ক্রেতা কম। ছোট ও মাঝাই সাইজের গরুর কিছু ক্রেতা থাকলেও বড় গরুর ক্রেতা নেই। দাম তুলনামুলকভাবে অনেক কম। দুচিন্তায় খামারীরা।

আমতলী গরুর বাজার পরিচালক নিয়াজ মোর্শ্বেদ ইমন বলেন, যারা গরু ক্রয় করবে তারাতো এলাকায় নেই। তারা সকলেই এলাকা ছাড়া। ফলে বাজারে ক্রেতা অনেক কম।

আমতলী প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় কোরবানীর জন্য ৮ হাজার ৮’শ ১৩ টি গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে এ উপজেলার ৯ হাজার ৭০ টি পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৯’শ ১২ টি গরু, ৫৯৫ টি মহিষ,২ হাজার ৫ টি ৬৩ টি ছাগল । চাহিদার তুলনায় ২’শ৫৭ টি পশু বেশী রয়েছে। শেষ সময়ে আমতলীর বাজার গুলো গরুতে সয়লাব  কিন্তু ক্রেতা নেই। ছোট ও মাঝারী গরুর কিছু ক্রেতা থাকলেও বড় গরুর ক্রেতা নেই। এ গরুর স্থানীয় তেমন ক্রেতা নেই। বাজারে যা বিক্রয় হচ্ছে তা উত্তরাঞ্চলের পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করছে। এতে দুচিন্তায় পরেছে খামারীরা।

বুধবার আমতলীর গরুর হাট ঘুরে দেখাগেছে, কিছু ছোট ও মাঝারী গরু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। বড় গরুর ক্রেতা নেই। এবাজারে ৩’শ গরু বিক্রয় হয়েছে তার মধ্যে ২০ টি গরু নেই কোরবানীর বলে জানান বাজার পরিচালক মোঃ নিয়াজ মোর্শ্বেদ ইমন। ছোট ও মাঝারী গরু লালন পালনের জন্য উত্তরাঞ্চলের পাইবারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করেছেন।

গরুর খামার মালিক সাইদুল ইসলাম বলেন, খামারের পায়রা বাহাদুর নামের একটি গরু বাজারে নিয়ে এসেছি, ক্রেতারা দাম বলে না। সাড়ে তিন লাখ টাকা দাম হাকালেও ক্রেতারা দাম বলেন, দুই লাখ সত্তর হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, বড় গরুর ক্রেতা অনেক কম। কিন্তু ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা কিছু বেশী।

দক্ষিণ রাওগা গ্রামের বাবুল মীর বলেন, তিনটি গরু গত ১৫ দিন আগে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। এখন ওই গরু বিক্রি করতে পারছি না। একটি গরু অনেক কষ্টে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। অপর দুটি তেমন দাম বলেন না। তিনি আরো বলেন, বাজারে অনেক গরু এসেছে।  তিনটি গরু বর্তমান বাজার মুল্যে বিক্রি করতে পারলে ব্যবসাতো হবেই না উল্টো ২৫ হাজার টাকা লোকসান হবে।

পৌরসভার খোন্তাকাটা এলাকার ক্রেতা আল হাসিব সজিব বলেন, কোরবানী উপলক্ষে একটি ছোট গরু ক্রয় করতে এসেছি। বাজারে গরু অনেক দামও অনেক কম। যাছাই বাছাই করে স্থানীয় গরু ক্রয় করবো।

কাঠালিয়া গ্রামের লিটন প্যাদা বলেন, বড় গরুর চাহিদা কম। গত বছরের চেয়ে গরু প্রতি ৩০-৩৫ হাজার টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। একটি গরু এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা দাম হাকিয়েছি কিন্তু ক্রেতা এক লাখ টাকা দাম বলেন। তাও দাম বলে চলে যায়।

পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে যে পরিমান গরু এসেছে। তার চার ভাগের এক ভাগও ক্রেতা নেই। তিনি আরো বলেন, গত সপ্তাহে আমতলীর বাজার থেকে ২১ টি গরু ১১ লাখ টাকা ক্রয় করে কুষ্টিয়া নিয়ে বিক্রি করেছি। তাতে কোন লাভ হয়নি।
গলাচিপা উপজেলার আমখোলা গ্রামের ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন পাঁচটি গরু গত এক মাস আগে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। এখন ওই পাঁচটি গরু বর্তমান বাজারে বিক্রি করলে মূলধনের টাকাও আসবে না। লাভতো দুরে থাক। তারপর গত একমাস ধরে খাবার খাইয়েছি তারও দামতো ধরেনি। তিনি আরো বলেন, বাজারে ক্রেতা কম আসায় একটি গরুও বিক্রি করতে পারিনি।

আমতলী গরু হাটের ইজারাদার আলাউদ্দিন মৃধা বলেন, বাজারে অনেক গরু আসছে। কিন্তু ক্রেতা কম। এখন পর্যন্ত  ৩’শ গরু বিক্রি হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

মেট্রোপলিটন শ্যূটিং ক্লাব,খুলনার বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

আমতলীর বাজারে গরু বেশী, ক্রেতা কম। বড় গরুর ক্রেতা নেই

Update Time : ০৭:০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫

পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র তিন দিন বাকী। আমতলীর ৮ টি বাজারে গরু বেশী কিন্তু ক্রেতা কম। ছোট ও মাঝাই সাইজের গরুর কিছু ক্রেতা থাকলেও বড় গরুর ক্রেতা নেই। দাম তুলনামুলকভাবে অনেক কম। দুচিন্তায় খামারীরা।

আমতলী গরুর বাজার পরিচালক নিয়াজ মোর্শ্বেদ ইমন বলেন, যারা গরু ক্রয় করবে তারাতো এলাকায় নেই। তারা সকলেই এলাকা ছাড়া। ফলে বাজারে ক্রেতা অনেক কম।

আমতলী প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় কোরবানীর জন্য ৮ হাজার ৮’শ ১৩ টি গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে এ উপজেলার ৯ হাজার ৭০ টি পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৯’শ ১২ টি গরু, ৫৯৫ টি মহিষ,২ হাজার ৫ টি ৬৩ টি ছাগল । চাহিদার তুলনায় ২’শ৫৭ টি পশু বেশী রয়েছে। শেষ সময়ে আমতলীর বাজার গুলো গরুতে সয়লাব  কিন্তু ক্রেতা নেই। ছোট ও মাঝারী গরুর কিছু ক্রেতা থাকলেও বড় গরুর ক্রেতা নেই। এ গরুর স্থানীয় তেমন ক্রেতা নেই। বাজারে যা বিক্রয় হচ্ছে তা উত্তরাঞ্চলের পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করছে। এতে দুচিন্তায় পরেছে খামারীরা।

বুধবার আমতলীর গরুর হাট ঘুরে দেখাগেছে, কিছু ছোট ও মাঝারী গরু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। বড় গরুর ক্রেতা নেই। এবাজারে ৩’শ গরু বিক্রয় হয়েছে তার মধ্যে ২০ টি গরু নেই কোরবানীর বলে জানান বাজার পরিচালক মোঃ নিয়াজ মোর্শ্বেদ ইমন। ছোট ও মাঝারী গরু লালন পালনের জন্য উত্তরাঞ্চলের পাইবারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করেছেন।

গরুর খামার মালিক সাইদুল ইসলাম বলেন, খামারের পায়রা বাহাদুর নামের একটি গরু বাজারে নিয়ে এসেছি, ক্রেতারা দাম বলে না। সাড়ে তিন লাখ টাকা দাম হাকালেও ক্রেতারা দাম বলেন, দুই লাখ সত্তর হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, বড় গরুর ক্রেতা অনেক কম। কিন্তু ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা কিছু বেশী।

দক্ষিণ রাওগা গ্রামের বাবুল মীর বলেন, তিনটি গরু গত ১৫ দিন আগে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। এখন ওই গরু বিক্রি করতে পারছি না। একটি গরু অনেক কষ্টে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। অপর দুটি তেমন দাম বলেন না। তিনি আরো বলেন, বাজারে অনেক গরু এসেছে।  তিনটি গরু বর্তমান বাজার মুল্যে বিক্রি করতে পারলে ব্যবসাতো হবেই না উল্টো ২৫ হাজার টাকা লোকসান হবে।

পৌরসভার খোন্তাকাটা এলাকার ক্রেতা আল হাসিব সজিব বলেন, কোরবানী উপলক্ষে একটি ছোট গরু ক্রয় করতে এসেছি। বাজারে গরু অনেক দামও অনেক কম। যাছাই বাছাই করে স্থানীয় গরু ক্রয় করবো।

কাঠালিয়া গ্রামের লিটন প্যাদা বলেন, বড় গরুর চাহিদা কম। গত বছরের চেয়ে গরু প্রতি ৩০-৩৫ হাজার টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। একটি গরু এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা দাম হাকিয়েছি কিন্তু ক্রেতা এক লাখ টাকা দাম বলেন। তাও দাম বলে চলে যায়।

পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে যে পরিমান গরু এসেছে। তার চার ভাগের এক ভাগও ক্রেতা নেই। তিনি আরো বলেন, গত সপ্তাহে আমতলীর বাজার থেকে ২১ টি গরু ১১ লাখ টাকা ক্রয় করে কুষ্টিয়া নিয়ে বিক্রি করেছি। তাতে কোন লাভ হয়নি।
গলাচিপা উপজেলার আমখোলা গ্রামের ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন পাঁচটি গরু গত এক মাস আগে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। এখন ওই পাঁচটি গরু বর্তমান বাজারে বিক্রি করলে মূলধনের টাকাও আসবে না। লাভতো দুরে থাক। তারপর গত একমাস ধরে খাবার খাইয়েছি তারও দামতো ধরেনি। তিনি আরো বলেন, বাজারে ক্রেতা কম আসায় একটি গরুও বিক্রি করতে পারিনি।

আমতলী গরু হাটের ইজারাদার আলাউদ্দিন মৃধা বলেন, বাজারে অনেক গরু আসছে। কিন্তু ক্রেতা কম। এখন পর্যন্ত  ৩’শ গরু বিক্রি হয়েছে।