Dhaka ১০:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাইক চাপা দেয়ার প্রতিবাদ করায় এনায়েতপুর ব্যবসায়ীদের উপর বিএনপির নেতার হামলা

দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিএনপি নেতার ছেলে বখাটে কর্তৃক
ব্যবসায়ীকে আহতের প্রতিবাদ করায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর হাটের
ব্যবসায়ীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই বখাটে শাহীন হোসেন (২৪) থানার
খুকনী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক যগ্ম আহবায়ক খোকশাবাড়ি গ্রামের আব্দুর
রাজ্জাকের ছেলে ও থানা যুবদলের সদস্য সচিব সাইদুল ইসলাম রাজের ভাতিজা।
হাটে হামলার ঘটনায়

৪ ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ জনকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় স্থানীয়
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলো সেলিম মন্ডল ও হাজী বাবুল হোসেন। এ ঘটনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে এনায়েতপুর হাটের কাগজ
ব্যবসায়ী হাজী বাবুল হোসেন হাটের আর এক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিনের দোকানের
সামনে রাস্তা পার হবার সময় দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে যাবার পথে
বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে বখাটে শাহিন হোসেন মোটরসাইকেল চাপা
দেয়। এতে গুরুতর আহত হলে হাড়ের ব্যবসায়ীরা মোটরসাইকেল চালক দুর্ঘটনার
জন্য দায়ী শাহীনকে ধরে প্রতিবাদ করে। এরপর সেখান থেকে শাহিন চলে গিয়ে
বাবা বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক, চাচা এনায়েতপুর থানা যুবদলের সদস্য
সচিব সাইদুল ইসলাম রাজ সহ তার স্বজন ৪০-৪৫ জন লাঠি সোটা নিয়ে এসে আহত
বাবুল হাজীকে তার দোকানে গিয়ে মারধর করে ও লুটপার চালায়। তখন ব্যবসায়ী
ও এনায়েতপুর হাট বণিক সমিতির পরিচালক সালাউদ্দিন, সাবেক পরিচালক সেলিম
মন্ডল ও আক্তার হোসেন এগিয়ে আসলে তাদেরও বেদম মারধর করে পুনরায় হামলা ও
হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। হাজী বাবুল হোসেন ও জামায়াত ইসলামী কর্মী
সেলিম মন্ডলকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় আহত বাবুল হোসেনের ছেলে শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় একটি
মামলা দায়ের করেছে। তিনি জানান, বিএনপি নেতা রাজ্জাক ওরফে গাইরাল রাজ্জাক ও তার ছোট ভাই যুবদল নেতা সন্ত্রাসী সাইদুল ইসলাম রাজ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম
করেছে। এলাকায় দখল লুটপাত চাঁদাবাজি সহ দলীয় নেতাকর্মীদের মাদরো
হয়রানীর সঙ্গে জড়িত। আমার বৃদ্ধ ব্যবসায়ী বাবাকে দফায় দফায় মারধর
করেছে তারা। ঠেকাতে গিয়ে বণিক সমিতির দুই পরিচালক সহ ৩ ব্যবসায়ী আহত
হয়েছেন। আড়াই লাখ টাকার মত লুট হয়েছে আমাদের দোকান থেকে। যারা হামলা
চালিয়েছে সবাই বিএনপি’র পদ দখল করে এলাকায় সকল অপরাধ করছে। আমরা তাদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। এজন্য যথাযথ তাদের শাস্তি দাবি করছি।

এদিকে এনায়েতপুরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা
অভিযোগ করে জানান, আব্দুর রাজ্জাক ও তার ছোট ভাই যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম
এলাকায় এমন কোন হেন কাজ নেই তারা করছে না। যমুনার বালু লুট, দোকান দখল,
বিএনপি নেতা জানে আলম ভূইয়া সহ কয়েক নেতাকর্মীকে মারধর সহ নানা বিষয়ে
তাদের বিরুদ্ধে এর আগে পদক্ষেপ চেয়ে জেলা বিএনপির কাছে অভিযোগ দেয়া
হয়েছিল। আমরা চাই তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।

বিষয়টি নিয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি আনারুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় একটি
লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু
জানান, দলীয় পদপদবী থাকতে পারে কিন্তু যে ঘটনা ঘটেছে তাতে দলের কোন
সম্পর্ক নেই। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ অন্যায় করবে সেটা কখনও আমরা মেনে
নেবনা। তারমতে এখনও কেই লিখিত অভিযোগ করেনি তাই দলীয় ভাবে কোন পদক্ষেপ
নেয়া কঠিন। তবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে নিয়ম অনুযায়ী কাউকে ছাড় দেয়া
হবে না। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বাইক চাপা দেয়ার প্রতিবাদ করায় এনায়েতপুর ব্যবসায়ীদের উপর বিএনপির নেতার হামলা

Update Time : ০৫:১৩:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫

দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিএনপি নেতার ছেলে বখাটে কর্তৃক
ব্যবসায়ীকে আহতের প্রতিবাদ করায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর হাটের
ব্যবসায়ীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই বখাটে শাহীন হোসেন (২৪) থানার
খুকনী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক যগ্ম আহবায়ক খোকশাবাড়ি গ্রামের আব্দুর
রাজ্জাকের ছেলে ও থানা যুবদলের সদস্য সচিব সাইদুল ইসলাম রাজের ভাতিজা।
হাটে হামলার ঘটনায়

৪ ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ জনকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় স্থানীয়
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলো সেলিম মন্ডল ও হাজী বাবুল হোসেন। এ ঘটনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে এনায়েতপুর হাটের কাগজ
ব্যবসায়ী হাজী বাবুল হোসেন হাটের আর এক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিনের দোকানের
সামনে রাস্তা পার হবার সময় দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে যাবার পথে
বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে বখাটে শাহিন হোসেন মোটরসাইকেল চাপা
দেয়। এতে গুরুতর আহত হলে হাড়ের ব্যবসায়ীরা মোটরসাইকেল চালক দুর্ঘটনার
জন্য দায়ী শাহীনকে ধরে প্রতিবাদ করে। এরপর সেখান থেকে শাহিন চলে গিয়ে
বাবা বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক, চাচা এনায়েতপুর থানা যুবদলের সদস্য
সচিব সাইদুল ইসলাম রাজ সহ তার স্বজন ৪০-৪৫ জন লাঠি সোটা নিয়ে এসে আহত
বাবুল হাজীকে তার দোকানে গিয়ে মারধর করে ও লুটপার চালায়। তখন ব্যবসায়ী
ও এনায়েতপুর হাট বণিক সমিতির পরিচালক সালাউদ্দিন, সাবেক পরিচালক সেলিম
মন্ডল ও আক্তার হোসেন এগিয়ে আসলে তাদেরও বেদম মারধর করে পুনরায় হামলা ও
হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। হাজী বাবুল হোসেন ও জামায়াত ইসলামী কর্মী
সেলিম মন্ডলকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় আহত বাবুল হোসেনের ছেলে শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় একটি
মামলা দায়ের করেছে। তিনি জানান, বিএনপি নেতা রাজ্জাক ওরফে গাইরাল রাজ্জাক ও তার ছোট ভাই যুবদল নেতা সন্ত্রাসী সাইদুল ইসলাম রাজ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম
করেছে। এলাকায় দখল লুটপাত চাঁদাবাজি সহ দলীয় নেতাকর্মীদের মাদরো
হয়রানীর সঙ্গে জড়িত। আমার বৃদ্ধ ব্যবসায়ী বাবাকে দফায় দফায় মারধর
করেছে তারা। ঠেকাতে গিয়ে বণিক সমিতির দুই পরিচালক সহ ৩ ব্যবসায়ী আহত
হয়েছেন। আড়াই লাখ টাকার মত লুট হয়েছে আমাদের দোকান থেকে। যারা হামলা
চালিয়েছে সবাই বিএনপি’র পদ দখল করে এলাকায় সকল অপরাধ করছে। আমরা তাদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। এজন্য যথাযথ তাদের শাস্তি দাবি করছি।

এদিকে এনায়েতপুরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা
অভিযোগ করে জানান, আব্দুর রাজ্জাক ও তার ছোট ভাই যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম
এলাকায় এমন কোন হেন কাজ নেই তারা করছে না। যমুনার বালু লুট, দোকান দখল,
বিএনপি নেতা জানে আলম ভূইয়া সহ কয়েক নেতাকর্মীকে মারধর সহ নানা বিষয়ে
তাদের বিরুদ্ধে এর আগে পদক্ষেপ চেয়ে জেলা বিএনপির কাছে অভিযোগ দেয়া
হয়েছিল। আমরা চাই তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।

বিষয়টি নিয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি আনারুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় একটি
লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু
জানান, দলীয় পদপদবী থাকতে পারে কিন্তু যে ঘটনা ঘটেছে তাতে দলের কোন
সম্পর্ক নেই। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ অন্যায় করবে সেটা কখনও আমরা মেনে
নেবনা। তারমতে এখনও কেই লিখিত অভিযোগ করেনি তাই দলীয় ভাবে কোন পদক্ষেপ
নেয়া কঠিন। তবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে নিয়ম অনুযায়ী কাউকে ছাড় দেয়া
হবে না। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।