Dhaka ১১:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ নির্দেশনা

সম্প্রতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে গেছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ কয়েকটি দেশে। চিহ্নিত হয়েছে করোনা ভাইরাসের কয়েকটি নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট। এমন পরিস্থিতিতে দেশেও এটি ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আজ বুধবার (১১ জুন) দুপুরে বর্তমানে দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর ১১ দফা নির্দেশনা পড়ে শোনান।

লিখিতে বক্তব্যে তিনি বলেন, ভাইরাসজনিত সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা ভাইরাসের কয়েকটি নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধে দেশের সকল স্থল/নৌ/বিমান বন্দরের আইএইচআর ডেস্কসমূহে নজরদারি এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়গুলো জোরদার করার বিষয়ে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নিম্নলিখিত নির্দেশনা ও করনীয়সমূহ গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো-

সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসাধারণের করনীয়-

১. জনসমাগম যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন এবং উপস্থিত হতেই হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।

২. শ্বাসতন্ত্রের রোগ সমূহ হতে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।

৩. হাঁচি/কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন।

৪. ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনা যুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন।

৫. ঘনঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)।

৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না।

৭. আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন;

সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করনীয়-

১. জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন।

২. রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।

৩. রোগীর সেবাদানকারীগনও সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করুন।

৪. প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে অথবা আইইডিসিআর (০১৪০১-১৯৬২৯৩) অথবা স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩) এর নাম্বারে যোগাযোগ করুন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রস্তুতি

সংবাদ সম্মেলনে করোনা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রস্তুতির বিষয়েও বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, করোনা শনাক্তে আবারও আরটি-পিসিআর ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি করোনার টিকা, প্রয়োজনীয় ওষুধ, অক্সিজেন, হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, ভেন্টিলেটর, আইসিইউ ও এইচডিইউ সুবিধাসহ কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও সেবা প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম যেমন—কেএন-৯৫ মাস্ক, পিপিই ও ফেস শিল্ড নিশ্চিত করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে এসব প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশের বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও নৌবন্দরে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালার (আইএইচআর) আওতায় পরিচালিত ডেস্কগুলোকে আরও সক্রিয় করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

তানোরে উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প পরিচিতি সভা

করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ নির্দেশনা

Update Time : ০৫:২৮:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

সম্প্রতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে গেছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ কয়েকটি দেশে। চিহ্নিত হয়েছে করোনা ভাইরাসের কয়েকটি নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট। এমন পরিস্থিতিতে দেশেও এটি ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আজ বুধবার (১১ জুন) দুপুরে বর্তমানে দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর ১১ দফা নির্দেশনা পড়ে শোনান।

লিখিতে বক্তব্যে তিনি বলেন, ভাইরাসজনিত সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা ভাইরাসের কয়েকটি নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধে দেশের সকল স্থল/নৌ/বিমান বন্দরের আইএইচআর ডেস্কসমূহে নজরদারি এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়গুলো জোরদার করার বিষয়ে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নিম্নলিখিত নির্দেশনা ও করনীয়সমূহ গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো-

সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসাধারণের করনীয়-

১. জনসমাগম যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন এবং উপস্থিত হতেই হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।

২. শ্বাসতন্ত্রের রোগ সমূহ হতে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।

৩. হাঁচি/কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন।

৪. ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনা যুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন।

৫. ঘনঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)।

৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না।

৭. আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন;

সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করনীয়-

১. জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন।

২. রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।

৩. রোগীর সেবাদানকারীগনও সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করুন।

৪. প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে অথবা আইইডিসিআর (০১৪০১-১৯৬২৯৩) অথবা স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩) এর নাম্বারে যোগাযোগ করুন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রস্তুতি

সংবাদ সম্মেলনে করোনা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রস্তুতির বিষয়েও বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, করোনা শনাক্তে আবারও আরটি-পিসিআর ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি করোনার টিকা, প্রয়োজনীয় ওষুধ, অক্সিজেন, হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, ভেন্টিলেটর, আইসিইউ ও এইচডিইউ সুবিধাসহ কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও সেবা প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম যেমন—কেএন-৯৫ মাস্ক, পিপিই ও ফেস শিল্ড নিশ্চিত করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে এসব প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশের বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও নৌবন্দরে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালার (আইএইচআর) আওতায় পরিচালিত ডেস্কগুলোকে আরও সক্রিয় করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।