খুলনায় বৃষ্টিপাত ও জলবায়ু ঝুঁকিকে মাথায় রেখে নগর ব্যবস্থাপনা সাজানো হবে। এই পরিকল্পনায় বুয়েট, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও নগর বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, দখলমুক্তি অভিযান হতে হবে ধারাবাহিক ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। ইতোমধ্যে দখলকৃত খাল ও পুকুরগুলোর তালিকা তৈরি আছে। প্রয়োজন কেবল সেই তালিকা বাস্তবে কার্যকর করা এবং শহরবাসীকে সম্পৃক্ত করা।তৃতীয়ত. কেসিসিকে জনগণের কাছে আরও জবাবদিহি করতে হবে। ওয়ার্ডভিত্তিক নাগরিক পরিবেশ কমিটি গঠন করে জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নাগরিক মতামত নেওয়া দরকার।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য-ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের ভূমিকা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়. তারা নাগরিক সনদপত্রে স্বাক্ষর দেওয়াকেই দায়িত্ব পালন বলে মনে করেন। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। প্রতিটি কাউন্সিলরের উচিত নিয়মিত নিজের ওয়ার্ড পরিদর্শন করা, কোথায় ড্রেন বন্ধ হয়ে আছে, কোন রাস্তা ভেঙে গেছে. কোথায় পানি জমে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে-তা নিজে পর্যবেক্ষণ করে তাৎক্ষণিকভাবে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। তাদের মনে রাখতে হবে, একটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা ও সুষ্ঠু নাগরিক পরিবেশ অনেকাংশে নির্ভর করে সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দক্ষতা, দায়বদ্ধতা এবং সমস্যার প্রতি সংবেদনশীলতার উপর।চতুর্থত, প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান-যেমন GIS ম্যাপিং, রেইন সেন্সর এবং IoT-নিয়ন্ত্রিত ড্রেন মনিটরিং চালু করতে হবে। এতে দ্রুত সংকট চিহ্নিত ও প্রতিক্রিয়া দেওয়া সম্ভব।
খুলনার জলাবদ্ধতা এখন আর শুধুই একটি অব্যবস্থাপনার ফল নয়, এটি একটি নগরের অস্তিত্ব সংকটের ইঙ্গিত। যদি আমরা এখনই জেগে না উঠি, পরিকল্পনা না করি এবং কঠোর বাস্তবায়নে না যাই-তাহলে অদূর ভবিষ্যতে খুলনা বসবাসের অযোগ্য শহরে পরিণত হবে।
সিটি কর্পোরেশনকে বলতেই হয়-আপনাদের আর সময় নেই। সমস্যা চিহ্নিত, সমাধানও জানা। এখন দরকার রাজনৈতিক ইচ্ছা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং নাগরিক অংশগ্রহণ। শহর বাঁচাতে হলে, জলাবদ্ধতা রোধ করতে হবে-এবার উদ্যোগ নিতে হবে সত্যিই।