Dhaka ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংস্কার কাজের নমুনা : অন্যদিকে উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর পুকুর চুরি

কুড়িগ্রামের উলিপুরে একদিকে ২৪ এর জুলাই আন্দোলন অন্যদিকে, উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর এডিপি প্রকল্পে পুকুর চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

উলিপুরে কাজ না করেই এডিপির বিল উত্তোলনের খবর টিকায় প্রকাশ হওয়ার পর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের বড় মহিষমুড়ি দাখিল মাদ্রাসার সংস্কার কাজ উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার নিজস্ব লোক লাগিয়ে করেছেন বলে জানা গেছে। তবে  ওই মাদ্রাসায় কি কাজ? কত টাকার কাজ? কোন ঠিকদারের কাজ? এসব মাদ্রাসার কেউই জানেন না। আর সাংবাদিকদের  কোন তথ্য না দেয়ায় আসলে কি কাজ? কত টাকার কাজ? ঠিকাদার কে? তা জানানো সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, তথ্য চেয়ে আবেদন করার বরাবর এক মাস পর উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার দুই সাংবাদিকের নামে রেজিস্ট্রি ডাক যোগে চিঠি পাঠিয়েছেন।

চিঠিতে ৪৬.০২.৪৯৯৪.০০০.১৪.০৯৯.২৫-৭৫৯ নং স্মারকে বিষয় দেয়া হয়েছে ” চাহিত তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রসঙ্গে।’
চিঠিটি হুবহু তুলে দেয়া হলো : ” উপরযুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, তথ্য প্রদানের ৩ নং উপধারা অনুযায়ী বর্তমান সময়ে কাজের ব্যস্ততার কারণে তথ্য প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী জুন মাসের পরে যে কোন সময় তথ্য নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

তথ্য না দেয়া প্রসঙ্গে অফিস পাড়ার একাধিক ব্যক্তি সূত্রে জানা গেছে,তথ্য দিলেই উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়বে। সঙ্গত কারণে তিনি তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

তথ্য না দেয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে উপজেলা পরিষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি আমাদের এ প্রতিনিধিকে বলেছেন, ২৪ এর গণআন্দোলনের সময় উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী সূচতুর প্রদীপ কুমার এডিপির কাজের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই সময়ের কাগজপত্র নিয়ে অনুসন্ধান করলে, “কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে পড়বে” আর তা আচ করেই ওই প্রকৌশলী তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।
উপজেলা পরিষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি আরো জানান, উপজেলা প্রকৌশলী ওই অর্থ বছরে একটি কাজও সঠিকভাবে করেনি। আপনারা কাজের ওয়ার্ক অর্ডার চাওয়ায় ওই প্রকৌশলীর মাথায় বাজ পড়েছে।

একদিকে, জুলাই আন্দোলন অন্যদিকে, উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী পুকুর চুরির ঘটনায় অফিস পাড়ায়ও জনশ্রুতি রয়েছে।
অফিস পাড়ার সূত্রটি আরো জানায়, উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১০ লক্ষ টাকার সংস্কার কাজ, উলিপুর উপজেলা পরিষদের মাস্টার রোলে কর্মরত এক কর্মচারীকে দিয়ে করেছেন। সরেজমিনে, দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা , অধিকাংশ জানালা ও দরজা ভাঙা অবস্থায় আছে। পরিষদের মেজের ফাটা স্থানগুলো রিপিয়ার করেনি। জানালার এমন দুরবস্থা, বৃষ্টি এলেই জানালা দিয়ে পানি ঢুকে মেঝে পানিতে ভরিয়ে থাকে। রিপিয়ারের মধ্যে কয়েকটি দরজা রিপিয়ার করে চেয়ারম্যানের রুমটির মেজে টাইলস করা হয়।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা পরিষদের ওই কর্মচারী আমাদের কোন কথাই শুনেন নি। তার ইচ্ছেমতো কিছু কাজ করে, বাকি কাজগুলো করতে বললে তিনি জানান, বাজেট নেই। ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বিষ্ণু এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, উপজেলা প্রকৌশলী থেকে আমাদেরকে কোন কাগজপত্র না দেয়ায় আমরা কোন কাজ বুঝে নিতে পারিনি। উপজেলা পরিষদের ওই কর্মচারীকে কোন কিছুই বললে, সে বলে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করতে। আমরা উপজেলা প্রকৌশলীর কাছেও কোন কাগজপত্র নিতে পারিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উলিপুর  উপজেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট আরো এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সূচতুর ওই প্রকৌশলী টেন্ডারের পর জুলাই আন্দোলনের তালে তালে  ঠিকাদারের সাথে মৌখিক চুক্তি করে ওয়ার্ক অর্ডার কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাজগুলো করিয়েছেন।
১০ লক্ষ টাকার অনেক কাজ ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তিতে ঠিকাদারের দ্বারা করে নিয়ে বাকি সমুদয় টাকা ঠিকাদারসহ ফিফটি ফিফটি ভাগ করে নেন।

একটি সূত্র জানায়, ২৪ এর এডিপি থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা দিয়ে প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার রংপুরে জায়গা জমি কিনেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

গোপালগঞ্জে কারফিউ চলবে

উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংস্কার কাজের নমুনা : অন্যদিকে উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর পুকুর চুরি

জন দেখেছেন : ০৮:৫৯:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

কুড়িগ্রামের উলিপুরে একদিকে ২৪ এর জুলাই আন্দোলন অন্যদিকে, উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর এডিপি প্রকল্পে পুকুর চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

উলিপুরে কাজ না করেই এডিপির বিল উত্তোলনের খবর টিকায় প্রকাশ হওয়ার পর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের বড় মহিষমুড়ি দাখিল মাদ্রাসার সংস্কার কাজ উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার নিজস্ব লোক লাগিয়ে করেছেন বলে জানা গেছে। তবে  ওই মাদ্রাসায় কি কাজ? কত টাকার কাজ? কোন ঠিকদারের কাজ? এসব মাদ্রাসার কেউই জানেন না। আর সাংবাদিকদের  কোন তথ্য না দেয়ায় আসলে কি কাজ? কত টাকার কাজ? ঠিকাদার কে? তা জানানো সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, তথ্য চেয়ে আবেদন করার বরাবর এক মাস পর উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার দুই সাংবাদিকের নামে রেজিস্ট্রি ডাক যোগে চিঠি পাঠিয়েছেন।

চিঠিতে ৪৬.০২.৪৯৯৪.০০০.১৪.০৯৯.২৫-৭৫৯ নং স্মারকে বিষয় দেয়া হয়েছে ” চাহিত তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রসঙ্গে।’
চিঠিটি হুবহু তুলে দেয়া হলো : ” উপরযুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, তথ্য প্রদানের ৩ নং উপধারা অনুযায়ী বর্তমান সময়ে কাজের ব্যস্ততার কারণে তথ্য প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী জুন মাসের পরে যে কোন সময় তথ্য নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

তথ্য না দেয়া প্রসঙ্গে অফিস পাড়ার একাধিক ব্যক্তি সূত্রে জানা গেছে,তথ্য দিলেই উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়বে। সঙ্গত কারণে তিনি তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

তথ্য না দেয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে উপজেলা পরিষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি আমাদের এ প্রতিনিধিকে বলেছেন, ২৪ এর গণআন্দোলনের সময় উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী সূচতুর প্রদীপ কুমার এডিপির কাজের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই সময়ের কাগজপত্র নিয়ে অনুসন্ধান করলে, “কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে পড়বে” আর তা আচ করেই ওই প্রকৌশলী তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।
উপজেলা পরিষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি আরো জানান, উপজেলা প্রকৌশলী ওই অর্থ বছরে একটি কাজও সঠিকভাবে করেনি। আপনারা কাজের ওয়ার্ক অর্ডার চাওয়ায় ওই প্রকৌশলীর মাথায় বাজ পড়েছে।

একদিকে, জুলাই আন্দোলন অন্যদিকে, উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী পুকুর চুরির ঘটনায় অফিস পাড়ায়ও জনশ্রুতি রয়েছে।
অফিস পাড়ার সূত্রটি আরো জানায়, উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১০ লক্ষ টাকার সংস্কার কাজ, উলিপুর উপজেলা পরিষদের মাস্টার রোলে কর্মরত এক কর্মচারীকে দিয়ে করেছেন। সরেজমিনে, দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা , অধিকাংশ জানালা ও দরজা ভাঙা অবস্থায় আছে। পরিষদের মেজের ফাটা স্থানগুলো রিপিয়ার করেনি। জানালার এমন দুরবস্থা, বৃষ্টি এলেই জানালা দিয়ে পানি ঢুকে মেঝে পানিতে ভরিয়ে থাকে। রিপিয়ারের মধ্যে কয়েকটি দরজা রিপিয়ার করে চেয়ারম্যানের রুমটির মেজে টাইলস করা হয়।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা পরিষদের ওই কর্মচারী আমাদের কোন কথাই শুনেন নি। তার ইচ্ছেমতো কিছু কাজ করে, বাকি কাজগুলো করতে বললে তিনি জানান, বাজেট নেই। ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বিষ্ণু এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, উপজেলা প্রকৌশলী থেকে আমাদেরকে কোন কাগজপত্র না দেয়ায় আমরা কোন কাজ বুঝে নিতে পারিনি। উপজেলা পরিষদের ওই কর্মচারীকে কোন কিছুই বললে, সে বলে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করতে। আমরা উপজেলা প্রকৌশলীর কাছেও কোন কাগজপত্র নিতে পারিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উলিপুর  উপজেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট আরো এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সূচতুর ওই প্রকৌশলী টেন্ডারের পর জুলাই আন্দোলনের তালে তালে  ঠিকাদারের সাথে মৌখিক চুক্তি করে ওয়ার্ক অর্ডার কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাজগুলো করিয়েছেন।
১০ লক্ষ টাকার অনেক কাজ ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তিতে ঠিকাদারের দ্বারা করে নিয়ে বাকি সমুদয় টাকা ঠিকাদারসহ ফিফটি ফিফটি ভাগ করে নেন।

একটি সূত্র জানায়, ২৪ এর এডিপি থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা দিয়ে প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার রংপুরে জায়গা জমি কিনেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।