Dhaka ০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কসোভোর রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশে নিযুক্ত কসোভো প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন । মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এটি ছিল রাষ্ট্রদূত প্লানার প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ। এসময় প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তার নিয়োগের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। বাংলাদেশের ‘জুলাই বিদ্রোহ’-এর চেতনার কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা কসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের অবিচল প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।

কসোভোকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত প্লানা। তিনি ১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে কসোভো অঞ্চলের সশস্ত্র সংঘাতের পর কসোভোর জনগণের জীবনে পুনর্গঠনে গ্রামীণ কসোভোর অবদানের কথা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন,আমরা বাংলাদেশকে মূল্যবান অংশীদার হিসেবে দেখি। আমি আপনার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান জানাতে চাই। আপনার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ট্রাস্ট আমাদের জাতির জন্য এক বিশাল সহায়তা ছিল। স্বাধীনতা ও উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশি সদস্যদের অবদান এবং সহায়তার জন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।’

দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে বৈঠকে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা রফতানিমুখী পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো সম্ভাবনাময় খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি কসোভোকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত প্লানা দুদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে উভয় দেশের বাণিজ্য ও শিল্প চেম্বারগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

মানবিক সংযোগ জোরদারের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা কসোভোর বিভিন্ন খাতে আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য সহায়তার আহ্বান জানান। তিনি আরও প্রস্তাব দেন, কসোভোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং সে লক্ষ্যে বৃত্তি, ফেলোশিপ ও একাডেমিক অনুদান প্রদান করা যেতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

গোপালগঞ্জে কারফিউ চলবে

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কসোভোর রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

জন দেখেছেন : ০৯:০২:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

বাংলাদেশে নিযুক্ত কসোভো প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন । মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এটি ছিল রাষ্ট্রদূত প্লানার প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ। এসময় প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তার নিয়োগের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। বাংলাদেশের ‘জুলাই বিদ্রোহ’-এর চেতনার কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা কসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের অবিচল প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।

কসোভোকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত প্লানা। তিনি ১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে কসোভো অঞ্চলের সশস্ত্র সংঘাতের পর কসোভোর জনগণের জীবনে পুনর্গঠনে গ্রামীণ কসোভোর অবদানের কথা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন,আমরা বাংলাদেশকে মূল্যবান অংশীদার হিসেবে দেখি। আমি আপনার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান জানাতে চাই। আপনার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ট্রাস্ট আমাদের জাতির জন্য এক বিশাল সহায়তা ছিল। স্বাধীনতা ও উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশি সদস্যদের অবদান এবং সহায়তার জন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।’

দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে বৈঠকে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা রফতানিমুখী পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো সম্ভাবনাময় খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি কসোভোকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত প্লানা দুদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে উভয় দেশের বাণিজ্য ও শিল্প চেম্বারগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

মানবিক সংযোগ জোরদারের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা কসোভোর বিভিন্ন খাতে আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য সহায়তার আহ্বান জানান। তিনি আরও প্রস্তাব দেন, কসোভোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং সে লক্ষ্যে বৃত্তি, ফেলোশিপ ও একাডেমিক অনুদান প্রদান করা যেতে পারে।