Dhaka ০২:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে রাজি ইসরায়েল: ট্রাম্প

ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করার জন্য ‘প্রয়োজনীয় শর্তাবলি’ মেনে নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।শর্তের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্পের গতকালের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে নিয়েছে কি না, সেটাও প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

সামাজিক যোগাযোমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘প্রস্তাবিত চুক্তি কার্যকর থাকার সময় যুদ্ধ বন্ধে (স্থায়ীভাবে) আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করব।’

তিনি আরও লেখেন,শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তায় কাতার ও মিসরবাসী কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তারাই চূড়ান্ত চুক্তির প্রস্তাব দেবেন। আশা করি, হামাস চুক্তিটি গ্রহণ করবে। কারণ, এটি আর ভালো হবে না; বরং এটি শুধু আরও খারাপ হতে পারে।’

ট্রাম্প এই ঘোষণা এমন এক সময়ে দিলেন যখন আগামী সপ্তাহে তার সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ওই বৈঠকে তিনি ‘খুবই কঠোর’ অবস্থান নেবেন।

ট্রাম্প বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন নেতানিয়াহু গাজায় সংঘাতের অবসান চান। তিনি বলেন,আমি আপনাদের বলতে পারি, তিনি চান। আমি মনে করি, আগামী সপ্তাহে আমরা একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব।

এদিকে জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, ইসরায়েল ‘নিশ্চিতভাবেই’ যুদ্ধবিরতি চায়, তবে হামাস ‘কঠিন অবস্থান’ নিচ্ছে।

তিনি বলেন,আমরা হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করছি। যদি তারা আলোচনার টেবিলে না আসে, তাহলে জিম্মিদের ফেরাতে আমাদের একমাত্র বিকল্প হবে আরও সামরিক চাপ প্রয়োগ করা। যুদ্ধ শেষ হবে তখনই, যখন জিম্মিরা ঘরে ফিরবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালান ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। ইসরায়েলের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ কারণে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ইসরায়েল থেকে দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নেওয়া হয়।

হামলার জবাবে ওইদিনই অবরুদ্ধ গাজায় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এখন অবধি চলমান থাকা নির্বিচার ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাটিতে ৫৬ হাজার ৬৪৭ জনে মানুষ নিহত হয়েছেন।গাজায় এখনো প্রায় ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় চুক্তির ব্যাপারে মধ্যস্থতাকারীরা প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা এখনো অচলাবস্থায় রয়েছে।

এদিকে ইসরায়েল বলেছে, হামাস পুরোপুরি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত এই সংঘাতের অবসান সম্ভব নয়। অন্যদিকে হামাস দীর্ঘদিন ধরেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার দাবি করে আসছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

কে সিসির উদ্যোগে মৃত মুসলিম মানুষের গোসলের জন্য স্থয়ীভাবে আধুনিক স্থান নির্ধারণ

গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে রাজি ইসরায়েল: ট্রাম্প

Update Time : ১২:০৩:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করার জন্য ‘প্রয়োজনীয় শর্তাবলি’ মেনে নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।শর্তের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্পের গতকালের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে নিয়েছে কি না, সেটাও প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

সামাজিক যোগাযোমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘প্রস্তাবিত চুক্তি কার্যকর থাকার সময় যুদ্ধ বন্ধে (স্থায়ীভাবে) আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করব।’

তিনি আরও লেখেন,শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তায় কাতার ও মিসরবাসী কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তারাই চূড়ান্ত চুক্তির প্রস্তাব দেবেন। আশা করি, হামাস চুক্তিটি গ্রহণ করবে। কারণ, এটি আর ভালো হবে না; বরং এটি শুধু আরও খারাপ হতে পারে।’

ট্রাম্প এই ঘোষণা এমন এক সময়ে দিলেন যখন আগামী সপ্তাহে তার সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ওই বৈঠকে তিনি ‘খুবই কঠোর’ অবস্থান নেবেন।

ট্রাম্প বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন নেতানিয়াহু গাজায় সংঘাতের অবসান চান। তিনি বলেন,আমি আপনাদের বলতে পারি, তিনি চান। আমি মনে করি, আগামী সপ্তাহে আমরা একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব।

এদিকে জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, ইসরায়েল ‘নিশ্চিতভাবেই’ যুদ্ধবিরতি চায়, তবে হামাস ‘কঠিন অবস্থান’ নিচ্ছে।

তিনি বলেন,আমরা হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করছি। যদি তারা আলোচনার টেবিলে না আসে, তাহলে জিম্মিদের ফেরাতে আমাদের একমাত্র বিকল্প হবে আরও সামরিক চাপ প্রয়োগ করা। যুদ্ধ শেষ হবে তখনই, যখন জিম্মিরা ঘরে ফিরবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালান ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। ইসরায়েলের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ কারণে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ইসরায়েল থেকে দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নেওয়া হয়।

হামলার জবাবে ওইদিনই অবরুদ্ধ গাজায় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এখন অবধি চলমান থাকা নির্বিচার ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাটিতে ৫৬ হাজার ৬৪৭ জনে মানুষ নিহত হয়েছেন।গাজায় এখনো প্রায় ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় চুক্তির ব্যাপারে মধ্যস্থতাকারীরা প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা এখনো অচলাবস্থায় রয়েছে।

এদিকে ইসরায়েল বলেছে, হামাস পুরোপুরি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত এই সংঘাতের অবসান সম্ভব নয়। অন্যদিকে হামাস দীর্ঘদিন ধরেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার দাবি করে আসছে।