জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিএসএফ সীমান্তগুলোতে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার হরণ করে। সেই সাথে আমরা দেখি ভারতীয় মুসলিমদের অবৈধ অভিবাসী বলে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টা করা হয়। আমরা হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই – এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়, এটা গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র-জনতার বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পন্থীদের হাতেই বাংলাদেশ চলবে। সীমান্তে গণহত্যা আমরা যেকোনো মূল্যে বন্ধ করব। ঠাকুরগাঁও জেলাসহ উত্তরবঙ্গের অবহেলিত জেলাগুলো রয়েছে এখানে আঞ্চলিক বা অর্থনৈতিক বৈষম্য চলবে না।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন যে বাংলাদেশের স্বপ্ন, বৈষম্যহীন নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, কৃষক-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের বাংলাদেশ, ইনসাফ ও মর্যাদার বাংলাদেশ লড়াই করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এখনো হয়নি, আগের সিস্টেম এখনো রয়ে গেছে। সেই সিস্টেম বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমাদের এই নতুন পার্টি এবং আমাদের কর্মসূচি। সারা বাংলাদেশে আমাদের কর্মসূচি চলছে। আপনারা আমাদের হাতকে শক্তিশালী করবেন। তরুণ নতুন এবং বিকল্প নেতৃত্ব বেছে নিবেন।
নাহিদ বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার ও নতুন সংবিধানের জন্য আমরা লড়াই করছি। অবশ্যই জুলাই আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে এবং সাংবিধানিক ভিত্তি থাকবে জুলাই ঘোষণাপত্রে। যে কারণে আমাদের হাজারও মানুষ রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে। আমরা তাদের স্মরণ করতে চাই তাদের আত্মত্যাগ। তাদের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বাংলাদেশ হবে।
তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষক সমাজ অবহেলিত রয়েছে, তারা ফসলের ন্যায্য মূল্য পায়না। আমরা সেই কৃষকদের জন্য কাজ করতে চাই। কারণ কৃষকের সন্তানেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, তারাই এই গণ-অভ্যুত্থানের ভূমিকা রেখেছিল। সেই কৃষকের সন্তান হয়ে এই ঠাকুরগাঁও থেকে নতুন বাংলাদেশের কথা আমরা বলছি।
অপরদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চৌরাস্তা মোড়ে পথযাত্রা কর্মসূচি তে নাহিদ ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। তাই আমাদের এবারের স্বাধীনতা যাতে বেহাত না হয় সেজন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে। এ কারণেই জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি গঠিত হয়েছে। আমরা এখন লড়াই করছি নতুন দেশ গঠনের। নতুন বাংলাদেশের। যেখানে আর বৈষম্য থাকবে না, থাকবে না ফ্যাসিবাদ অন্যায় সন্ত্রাস চাঁদাবাজি। এজন্য যুব সমাজ কে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের স্বার্থে তরুণ সমাজ যতবার এগিয়ে এসেছে ততবার সফল হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী ৩ আগষ্ট বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য ইস্তেহার ঘোষনা করবে এনসিপি। আমরা স্বৈচারাচার ও ফ্যাসিবাদ মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়বো। যেখানে বৈষম্য থাকবে না , ফ্যাসিবাদ থাকবে না। আমরা দেশে নতুন করে আর কাউকে স্বৈরাচার হতে দেব না।
তিনি আরো বলেন, আমরা ভাতের অধিকার চাই, শিক্ষার অধিকার চাই ও সু চিকিৎসার অধিকার চাই। আমরা অন্য কোন দেশের দালালি করব না। আমরা জীবন দিয়ে ও রক্ত দিয়ে হলেও এদেশের মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য এ দেশকে নতুন করে গড়ে তুলবো।
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র সদস্য সচিব আকতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডাঃ তাসনীম যারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক কৃষিবিদ সেলিম সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে দলটির নেতাকর্মীরা দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রাওনা দেন।