তানোর প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে আরসিআইপি প্রকল্পের কর্মকর্তারা শত কোটি টাকার রাস্তা পরিদর্শনের নামে ঠিকাদার ওয়াসিমের টাকায় ভুড়ি ভোজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দপুরের দিকে উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে এভুড়ি ভোজের আয়োজন করেন ঠিকাদার। অথচ বিভিন্ন রাস্তায় ফাটল ও ভাঙ্গন দেখা দিলেও সে বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন। এখবর ছড়িয়েে পড়লে টক অব দ্যা অফিস পাড়ায় পরিনত হয়েেছে। ফলে ঠিকাদারের অনিয়ম দুুর্নীতি ঢাকতেই এমন ভুুুড়ি ভোজ বলে মনে করছেন অন্য ঠিকাদারেরা।
জানা গেছে, উপজেলার মুল সড়কগুলোর কাজ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলছে। রাস্তার কাজ একদিকে শেষ হচ্ছে তো আরেক দিকে ফাটল ধরছে। থানা মোড় থেকে ধামধুম বা শেষপ্রান্ত, উপজেলা থেকে চৌবাড়িয়া, সরনজাই, মোহর, দেবিপুর নারায়নপুর, দুবইল হয়ে প্রকাশনগর পর্যন্ত, তালন্দ হয়ে কলমা বিল্লি, আয়ড়া মোড় হয়ে বাধাইড় হয়ে বিল্লি হাট ও হাতিশাইল থেকে কামারগা বাজার হয়ে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত। এক কথায় উপজেলার মুল সড়কের কাজ করা হয়েছে।
সুত্রে জানা যায়, রাস্তার কাজগুলো শুরু হয় বিগত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের মার্চ মাসে। কিন্তু রাস্তার কার্পেটিং শেষ হলেও দুধারে ঘাসসহ সৌন্দর্য্য বর্ধন হয়নি। এছাড়াও রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ফালট ধরেছে, সেই ফাটলে যত্রতত্র ভাবে দায় সারা কাজ করা হয়েছে।
লোকাল গভর্মেন্ট ইঞ্জিনিয়ারি ডিপার্টমেন্ট এডিবি
Rural Connectivity Improvement Project (RCIP) Fenanced by: ADB and Government of Bangladesh(GOB) প্রকল্পের আওতায় কার্যাদেশ পান ডন এন্টার প্রাইজ আবুল হোসেন(জেভি), লেড পার্টনার ডন এন্টার প্রাইজ প্রো: হারুনুর রশিদ। কিন্তু আবুল হোসেন বা হারুনুর রশিদকে কাজে দেখা যায়নি, কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন শহরের ঠিকাদার ওয়াসিম নামের এক ব্যক্তি।
সোমবার দুপুরের পরে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রকল্পের গাড়ী ও ঠিকাদার ওয়াসিমের কার উপজেলা পরিষদ চত্বরে আসা মাত্র কর্মকর্তারা দ্রুত প্রকৌশলীর দপ্তরে প্রবেশ করেন। দপ্তরে কাচের গেট খোলা মাত্রই সবাই বসে মাংস বিরিয়ানি খাচ্ছেন, পূর্বদিকের ছাদে মাংস গরম ও এসওরা খাওয়া দাওয়া করছেন। সেখানে ছিলেন ঠিকাদার ওয়াসিম তার কাছে পরিদর্শন ও রাস্তার ফাটলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান এখন কোন ভাবেই কথা বলা সম্ভব না পরিচালক স্যারেরা এসেছেন তাদেরকে খাওয়াতে হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমানকে কামারগা, সরনজাই, লালপুর, দেওউলসহ বেশকিছু জায়গায় রাস্তার ফাটল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ফাটল দেখতে পায়নি, ভেকু মেশিন ও ট্র্যাক্টরে মাটি বহনের জন্য নষ্ট হয়েছে কিছু কিছু রাস্তা। দুপাশে ঘাস ও সৌন্দর্য্য করার কাজ হয়নি প্রশ্ন করা হলে তেমন সদ উত্তর না দিয়ে পরিচালক স্যারেরা এসেছে বলে তিনিও দায় সারেন। ঠিকাদারের টাকায় ভুড়িভোজের কথা অস্বীকার করেন তিনি।
ঠিকাদার ওয়াসিম ও এসওরা প্রজেক্ট ডাইরেক্টর মুনসুর রহমানের সাথে কথা বলতে দেন নি। খাওয়া দাওয়া শেষে দ্রুত চলে যান কর্মকর্তারা। স্থানীয় ঠিকাদারেরা জানান, উপজেলা গেট থেকে ধানতৈড় মোড় পর্যন্ত রাস্তা না উল্টিয়ে তার উপর কার্পেটিং করেছেন। কালো কাচ ঢাকা গাড়ীতে থাকলে ফাটল তো দেখা যাবে না। কারন ঠিকাদারের টাকায় হচ্ছে ভুড়িভোজ তাহলে বুঝতে হবে।
জেলা প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, অফিসে ঠিকাদারের টাকায় ভূড়িভোজের কোন সুযোগ নেই, খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। রাস্তার ফাটলের বিষয়ে অবহিত করা হলে হটআ্যপে ছবি পাঠানোর পরামর্শ দেন তিনি।