সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপকে পরিবেশ বান্ধব পর্যটন শিল্পে উন্নয়ন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধ জীবন যাপন করতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোট এর পক্ষে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা বরাবর ২১ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয় ও সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপ কেন্দ্রিক ১১টি সংগঠনের সম্মিলিত সংগঠন ”সেন্টমার্টিন’র দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোট” এক মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোট এর পক্ষ থেকে ২১ দফা প্রস্তাবনা-
১. সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন খাতকে উন্নয়ন করে, দ্বীপে পর্যটক সীমিতকরণ এবং রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ না করে কিভাবে দ্বীপটিকে পরিবেশ বান্ধব রাখা যায় এবং জনগণকে পরিবেশ বিষয়ে সচেতন করা যায় সে বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করণ ।
২. দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, মিয়ানমারসহ কোন পরাশক্তির স্বার্থে ব্যবহৃত হবে না। গণশুনানির মাধ্যমে জনগণকে এই বিষয়ে নিশ্চিত করা। ৩. টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের উপযুক্ত পথ দেখিয়ে লাখো মানুষের জীবিকা বাঁচিয়ে রাখা।
৪. দ্বীপে প্লাষ্টিক রিসাইকিলের ব্যবস্থা গ্রহণ। যথাসম্ভব প্লাষ্টিক সামগ্রীর ব্যবহার কমিয়ে আনা হোক। চিপস, আচার, চকোলেটের পণ্য দ্বীপে নিষিদ্ধ করা হোক । যেমন চিপসের পরিবের্তে কাঁচের বৈয়ামে বাসিন্দাদের তৈরী শুকনো ডিমের পিঠা / ঐতিহ্যবাহী চাঁচের পিঠা রাখা যেতে পারে। চকোলেটের পরিবের্তে বাতাসা নাডুসহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন দ্রব্য রাখা যেতে পারে।
৫. বাইরের থেকে আসা বোতলজাত পানি, কোমল পানীয় নিষিদ্ধ করতে হবে। এর পরবির্তে ওয়াসাকে সেখানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে। যা সরকারী খরচে নির্মিত হবে। এর মাধ্যমে স্থানীয়দের মধ্যে কর্মসংস্থানও তৈরী হবে ।
৬. সরকারী ট্রেনিং সেন্টার খুলে বিনা মূল্যে রিসোর্ট ও রেস্তোরার মালিক, ওয়োটার, ট্যুরিষ্ট পুলিশ, পর্যটনে কাজ করতে ইচ্ছুক জনগণকে ট্যুরিজমের ট্রেনিং দিতে হবে।
৭. পরিবেশ ঠিক রেখে স্থানীয়দের রুটি-রুজি কিভাবে বাড়ানো যায়, কিভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যায় – সেসব বিবেচনায় নিয়ে কর্মপরিকল্পনা সবার সামনে তুলে ধরা।
৮. সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত সময়ে দ্বীপের জন্য উন্নয়নমূলক কি কি পরিকল্পনা নিয়েছে তা স্পষ্ট করা। সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের রোডম্যাপও স্পষ্ট করা। পহেলা অক্টোবর হতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জাহাজ চলাচলের অনুমতি প্রদান ।
১০. সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিষয়ে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বীপবাসীর সাথে আলোচনা করা ।
১১. সেন্টমার্টিনে পরিবেশ বান্ধব পানির বোতল তৈরীর কারখানা স্থাপন অথবা পরিবেশ বান্ধব পানির বোতল ও পানির পাত্র সংশ্লিষ্ট পরিবেশ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে সরকরাহের ব্যবস্থা করা।
১২. সেন্টমার্টিনে বর্জ্য রিসাইক্লিন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা।
১৩. পর্যাপ্ত পরিমানের ডাস্টবিন এবং ময়লা ডাম্পিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারন করা।
১৪. সেন্টমার্টিনে ১০০% কুকুরমুক্ত করা। কারন কুকুর কচ্ছপ এবং কচ্ছ্বপের ডিম খেয়ে ফেলে ।
১৫. সেন্টমার্টিনে রিসোর্টগুলো সন্ধ্যা ৭ টা থেকে আলো সীমিত করতে হবে।
১৬. সমুদ্রপারে কোন প্রকার উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্স বাজানো যাবে না ।
১৭. সেন্টমার্টিনে নতুন করে ২ টি জেটিঘাট তৈরী করতে হবে।
১৮. সেন্টমার্টিন দ্বীপে জেনারেটর সম্পূন্ন নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৯. সরকারীভাবে সোলার প্যানেল স্থাপন করতে হবে।
২০. সরকারীভাবে সকল রাস্তা প্রসস্থ ও পাকা ড্রেন নির্মাণ করতে হবে ।
২১. সেন্টমার্টিন দ্বীপকে আগামী ৫ বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশ বান্ধব পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
জোটের অন্তর্ভূক্ত এসোসিয়েশনসমূহ: ১. ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব ), ২. ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার ( টোয়াক ), ৩. সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমবায় সমিতি, ৪. সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতি, ৫. বোট মালিক সমবায় সমিতি
৬. মৎস্যজীবী মালিক সমবায় সমিতি, ৭. বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিক সমিতি, ৮. সেন্টমার্টিন স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রী বৃন্দ, ৯. ঢাকাস্থ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সেন্টমার্টিনের শিক্ষার্থীবৃন্দ, ১০. সেন্টমার্টিন রিসোর্ট মালিক সমিতি, ১১. সী ক্রুজ অপারেটর্স ওনার্স এসোসিয়েশন।