গত জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাগর হত্যার ঘটনয় ঢাকার সূত্রাপুর থানায় দায়ের করা মামালায় কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কাশিপুর হাসেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকসহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে সারাদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক সাধারণ জনগণ থানা ও সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর গেটের বাইরে অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় ক্যাপ্টেন শরিফুল ইসলাম ফুয়াদের নেতৃত্বে হোমনা উপজেলার ঘারমোড়া ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে কাশিপুর হাসেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আকবর হোসেনসহ চারজনকে গ্রেফতার করে হোমনা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় হোমনা থানা পুলিশ গ্রেফতার চারজনকে সূত্রাপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। গ্রেফতাররা হলেন- কাশিপুর হাসেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আকবর হোসেন, মো. জিয়া, মো. বাবুল ও মো. স্বপন। এরা প্রত্যেকে একই গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এদের মধ্যে মো. স্বপন পেশায় কাঠমিস্ত্রী, মো. জিয়া রাজমিস্ত্রী ও বাবুল মিয়া কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই নিহত সাগর হত্যার ঘটনায় মো. বাছিরুল ইসলাম খান বাদী হয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার সূত্রাপুর থানায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ১২৫ জন নামীয় এবং অজ্ঞাত আরও ৮০০-৯০০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং -৪, সেই মামলায় গ্রেফতারদের ২০, ২১, ২২ ও ২৩ নম্বর ক্রমিক আসামী করা হয়।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আকবর হোসেন স্যার একজন জনপ্রিয় শিক্ষক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে থেকে ছাত্রদের উৎসাহ দিয়েছিলেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক ছিলেন না।
উপস্থিত ছাত্র-শিক্ষক ও স্থানীয় অনেকেই ধারণা পোষণ করে বলেন, ‘স্থানীয় এক ছাত্রদল নেতার সঙ্গে পারিবারিক বিরোধের জেরেই স্যারসহ অন্যদের হয়রানি করার হীন উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে। আমরা স্যারসহ অন্যদেরও মুক্তি দাবী করছি।’ পাশাপাশি সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনারও দাবী জানিয়েছেন।
ক্যাপ্টেন শরিফুল ইসলাম ফুয়াদ জানান, গ্রেফতারকৃতরা ঢাকার সূত্রাপুর থানায় সাগর হত্যা মামলার আসামী। তাদেরকে সূত্রাপুর থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাবেদ উল ইসলাম বলেন, শিক্ষক আকবর হোসেনসহ অন্যদের সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলায় সেনাবাহিনী গ্রেফতার করে হোমনা থানায় হস্তান্তর করেছেন। পরবর্তীতে সসন্ধ্যায় আমরা ঢাকার সূত্রাপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।