Dhaka ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী রোববার থেকে পুনরায় উৎপাদনে যাচ্ছে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র

কয়লার অভাবে উৎপাদন বন্ধ হয়ে হওয়া যাওয়া মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংকট অবশেষে কাটতে শুরু করেছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৭০ হাজার টন কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়েছে। এরপর কয়লার খালাস কার্যক্রম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানান, বিকেলের দিকে জাহাজ থেকে কয়লা খালাস শুরু হয়েছে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা এটিই প্রথম কয়লার চালান। কয়লার জোগান আসায় আগামী রোববার থেকে ১২০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে যাবে বলে জানান তিনি।

এর আগে কয়লা সংকটের কারণে গত ৩১ অক্টোবর ১২০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিচালন) মনোয়ার হোসেন মজুমদার জানিয়েছিলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট কমিশনিংয়ের জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা আনার চুক্তি হয়। জাপানি এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে গত আগস্টে চুক্তি শেষ হয়েছে। প্রসঙ্গত, ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২০০ মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাইয়ে উৎপাদনে আসে। বাকি ৬০০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি গত ডিসেম্বরে চালু হয়। কেন্দ্রগুলো কমিশনিং করার জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল।প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সুমিতমোর সরবরাহ করা কয়লা শেষ হওয়ার আগেই নিয়ম অনুযায়ী কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির দরপত্র আহ্বানের কথা থাকলেও শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে কয়লা ক্রয় আটকে যায়।

কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, তিন বছরের কয়লা সরবরাহের জন্য কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মেঘনা গ্রুপের ইউনিক সিমেন্ট কনসোর্টিয়ামকে সুবিধা দিতে ১০ মাস দেরি করেন। শেষ পর্যন্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে কনসোর্টিয়াম অব বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন গত জুলাইয়ে। ফলে কয়লা আমদানিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

সব প্রক্রিয়া শেষ করে কয়লা আমদানিতে এ মাস পর্যন্ত সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কেন্দ্রের কর্মকর্তারা আশা করছেন, তিন-চারদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শরু করে তা জাতীয় গ্রিডে যোগ করা সম্ভব হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে পরিত্যক্ত লোহা বিক্রি

আগামী রোববার থেকে পুনরায় উৎপাদনে যাচ্ছে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র

Update Time : ১২:৫৬:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

কয়লার অভাবে উৎপাদন বন্ধ হয়ে হওয়া যাওয়া মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংকট অবশেষে কাটতে শুরু করেছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৭০ হাজার টন কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়েছে। এরপর কয়লার খালাস কার্যক্রম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানান, বিকেলের দিকে জাহাজ থেকে কয়লা খালাস শুরু হয়েছে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা এটিই প্রথম কয়লার চালান। কয়লার জোগান আসায় আগামী রোববার থেকে ১২০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে যাবে বলে জানান তিনি।

এর আগে কয়লা সংকটের কারণে গত ৩১ অক্টোবর ১২০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিচালন) মনোয়ার হোসেন মজুমদার জানিয়েছিলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট কমিশনিংয়ের জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা আনার চুক্তি হয়। জাপানি এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে গত আগস্টে চুক্তি শেষ হয়েছে। প্রসঙ্গত, ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২০০ মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাইয়ে উৎপাদনে আসে। বাকি ৬০০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি গত ডিসেম্বরে চালু হয়। কেন্দ্রগুলো কমিশনিং করার জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল।প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সুমিতমোর সরবরাহ করা কয়লা শেষ হওয়ার আগেই নিয়ম অনুযায়ী কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির দরপত্র আহ্বানের কথা থাকলেও শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে কয়লা ক্রয় আটকে যায়।

কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, তিন বছরের কয়লা সরবরাহের জন্য কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মেঘনা গ্রুপের ইউনিক সিমেন্ট কনসোর্টিয়ামকে সুবিধা দিতে ১০ মাস দেরি করেন। শেষ পর্যন্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে কনসোর্টিয়াম অব বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন গত জুলাইয়ে। ফলে কয়লা আমদানিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

সব প্রক্রিয়া শেষ করে কয়লা আমদানিতে এ মাস পর্যন্ত সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কেন্দ্রের কর্মকর্তারা আশা করছেন, তিন-চারদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শরু করে তা জাতীয় গ্রিডে যোগ করা সম্ভব হবে।