Dhaka ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে ১২ কোটি টাকার ওয়াকওয়ে নদী গর্ভে

মেহেরপুর ভৈরব নদের তীরে প্রায় ১২ কোটি টাকার ওয়াকওয়ে ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ড জমি অধিগ্রহণ না করেই জোরপূর্বক দু’ফসলা জমি দখল করে  নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করেছে শখের ওয়াকওয়ে। ইতোমধ্যে সেটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, খুব দ্রুত সময় ভাঙ্গা স্থানগুলো মেরামত করা হবে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০২৩ সালে জানুয়ারী মাসে মেহেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ভৈরব নদের দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মানের সীদ্ধান্ত নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।   ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাড়ে ১৮ কি.মি. নির্মান কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়ার সৈকত এন্টারপ্রাইজ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করেন ওয়াকওয়ে। ওয়াক ওয়েতে ঠিকমতো বালি ও এক নম্বর ইট দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি।

ওয়াক ওয়ের দু’পাশে মাটি ভরাট না করায় কিছুদিন পরই হালকা বৃষ্টিতে ওয়াকওয়ে বিভিন্ন স্থান দেবে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পাইপ ও পাড়ের মাটি রক্ষায় কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় কোথাও কোথাও শখের ওয়াকওয়ে বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। ফলে একদিকে যেমন সরকারের উন্নয়নের কোটি কোটি টাকা গচ্ছা গেছে অন্যদিকে সুবিধা বঞ্চিত হয়েছেন এলাকাবাসী।

কালিগাংনীর সবজি ব্যবসায়ি মহিবুল জানান, তিনি নদীর পাড়ের ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করেন। আগে কাচা রাস্তায় যাওয়া যেতো। এখন পাকা হেরিংবন্ড করায় মনে আশা জাগলেও সেটি হচ্ছে না। রাস্তাটি নষ্ট হয়ে যাওয়া চলাচলে বেশ দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একই কথা জানালেন চাষি নজরুল ও পবন। তারা ওই ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে পারেন না।

মাহাবুবুল হক পোলেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের  একরকম জোর করেই দু’ফসলা জমি দখল করে তৈরি করেছে ওয়াকওয়ে। সরকারীভাবে কারো কাছ থেকে জমি অধিগ্রহন করেনি। স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার পেশী শক্তির বলে ওই জমি জবর দখল করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে। কিছু বলতে গেলেই নানা ধরনের হুমকী দেয়া হতো। শুধু মাহাবুবুল হক পোলেন নয়, স্থানীয়দের অনেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগ করেছেন।

মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান জানান, ভাঙ্গা স্থানগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে দ্রুত সময় মেরামত করা হবে। তবে কারো জমি দখল করা হয়নি। ২০১৩ সালের নদী সংরক্ষণ আইন মেনেই ভৈরব দুপাড়ে ওয়াকওয়ে তৈরি হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার দেওয়া চিঠি গ্রহণ করেছে দিল্লি

মেহেরপুরে ১২ কোটি টাকার ওয়াকওয়ে নদী গর্ভে

Update Time : ০২:০৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

মেহেরপুর ভৈরব নদের তীরে প্রায় ১২ কোটি টাকার ওয়াকওয়ে ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ড জমি অধিগ্রহণ না করেই জোরপূর্বক দু’ফসলা জমি দখল করে  নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করেছে শখের ওয়াকওয়ে। ইতোমধ্যে সেটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, খুব দ্রুত সময় ভাঙ্গা স্থানগুলো মেরামত করা হবে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০২৩ সালে জানুয়ারী মাসে মেহেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ভৈরব নদের দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মানের সীদ্ধান্ত নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।   ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাড়ে ১৮ কি.মি. নির্মান কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়ার সৈকত এন্টারপ্রাইজ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করেন ওয়াকওয়ে। ওয়াক ওয়েতে ঠিকমতো বালি ও এক নম্বর ইট দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি।

ওয়াক ওয়ের দু’পাশে মাটি ভরাট না করায় কিছুদিন পরই হালকা বৃষ্টিতে ওয়াকওয়ে বিভিন্ন স্থান দেবে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পাইপ ও পাড়ের মাটি রক্ষায় কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় কোথাও কোথাও শখের ওয়াকওয়ে বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। ফলে একদিকে যেমন সরকারের উন্নয়নের কোটি কোটি টাকা গচ্ছা গেছে অন্যদিকে সুবিধা বঞ্চিত হয়েছেন এলাকাবাসী।

কালিগাংনীর সবজি ব্যবসায়ি মহিবুল জানান, তিনি নদীর পাড়ের ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করেন। আগে কাচা রাস্তায় যাওয়া যেতো। এখন পাকা হেরিংবন্ড করায় মনে আশা জাগলেও সেটি হচ্ছে না। রাস্তাটি নষ্ট হয়ে যাওয়া চলাচলে বেশ দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একই কথা জানালেন চাষি নজরুল ও পবন। তারা ওই ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে পারেন না।

মাহাবুবুল হক পোলেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের  একরকম জোর করেই দু’ফসলা জমি দখল করে তৈরি করেছে ওয়াকওয়ে। সরকারীভাবে কারো কাছ থেকে জমি অধিগ্রহন করেনি। স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার পেশী শক্তির বলে ওই জমি জবর দখল করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে। কিছু বলতে গেলেই নানা ধরনের হুমকী দেয়া হতো। শুধু মাহাবুবুল হক পোলেন নয়, স্থানীয়দের অনেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগ করেছেন।

মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান জানান, ভাঙ্গা স্থানগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে দ্রুত সময় মেরামত করা হবে। তবে কারো জমি দখল করা হয়নি। ২০১৩ সালের নদী সংরক্ষণ আইন মেনেই ভৈরব দুপাড়ে ওয়াকওয়ে তৈরি হয়েছে।